Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জাপানকে আন্দামানে ডাকছে ভারত, মালাক্কা প্রণালীতে চাপে চিন

আন্দামানের আশেপাশে মাঝেমধ্যেই হানা দিচ্ছে চিনের যুদ্ধজাহাজ। সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে চরবৃত্তি করতে আসছে চিনা সাবমেরিন। চিনের উদ্দেশ্য আঁচ করেই আন্দামানে সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতি দ্রুত বাড়াতে শুরু করেছে ভারত।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৬ ১৭:১৬
Share: Save:

আন্দামানের আশেপাশে মাঝেমধ্যেই হানা দিচ্ছে চিনের যুদ্ধজাহাজ। সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে চরবৃত্তি করতে আসছে চিনা সাবমেরিন। চিনের উদ্দেশ্য আঁচ করেই আন্দামানে সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতি দ্রুত বাড়াতে শুরু করেছে ভারত। বেজিংকে আরও চাপে ফেলতে আন্দামান সাগরে নয়াদিল্লি এ বার ডেকে আনছে টোকিওকেও। ভারত-জাপান যৌথ উদ্যোগে শুরু হচ্ছে আন্দামানে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ।

দক্ষিণ আন্দামানে একটি ১৫ মেগাওয়াট ডিজেল-বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাপানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গড়ে তুলবে ভারত। তেমনই প্রস্তাব জমা পড়েছে। ডিজেল-বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য কি জাপানকে সঙ্গী করার প্রয়োজন হয় ভারতের? মোটেই না। তা সত্ত্বেও জাপানকে সঙ্গে নিয়ে আন্দামানে এই ধরনের প্রকল্পে হাত দেওয়া কেন? প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, আন্দামান সাগরে জাপানি নৌসেনার উপস্থিতির সুযোগ করে দিতে চাইছে ভারত।

ছোট-বড় ৫৭২টি দ্বীপ রয়েছে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। ৩৪টি দ্বীপ বাদে বাকি সবক’টিতেই বসতি রয়েছে। এই দ্বীপগুলিতে নাগরিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন, রাস্তাঘাট তৈরি, ব্রিজ তৈরি-সহ নানা প্রকল্পে জাপানকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে ভারত। এর আগেও অনেক দেশ আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বিনিয়োগ করতে চেয়েছে। ভারত কাউকে সেখানে ঢুকতে দেয়নি। তা হলে হঠাৎ জাপানকে নিয়ে যৌথ প্রকল্প কেন? এর জবাব রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে। জাপানের নৌসেনার সঙ্গে ভারতীয় নৌসেনার বোঝাপড়া দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যেই এই দুই নৌসেনা এক সঙ্গে মহড়া দেয়। দক্ষিণ চিন সাগরে যে ভারত প্রভাব বাড়াতে শুরু করেছে, তার অন্যতম কারণ জাপানের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া। চিনের দাপটকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেশের স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি চিন-জাপান দ্বন্দ্বে জাপানের পাশে দাঁড়ানো ভারতের অন্যতম লক্ষ্য। জাপানও একই ভাবে ভারতের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত। তাই আন্দামানে জাপানকে প্রবেশাধিকার দিল ভারত। মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা। তাঁদের মতে, জাপান-ভারত যৌথ উদ্যোগে আন্দামানে পরিকাঠামো উন্নয়ন শুরু হলে, আন্দামানে জাপানি রণতরীর যাতায়াত নিয়ে অন্য কোনও দেশ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

আরও পড়ুন:

সুখোই-৩০ হাতে থাকায় ভারত কেন এগিয়ে

আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান কৌশলগত ভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। মালাক্কা প্রণালীর ঠিক উত্তর-পশ্চিম কোণে আন্দামান রয়েছে। মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মাঝখানে সরু রেখার মতো অবস্থিত এই মালাক্কা প্রণালী দিয়েই চিন ভারত মহাসাগরে ঢোকে। চিনা জাহাজের জন্য ওই পথ খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্দামানে জাপানকে ডেকে আনার অর্থ হল, ভারত মহাসাগরে চিনের প্রবেশ পথের উপর ভারত-জাপান যৌথ নজরদারির ব্যবস্থা করা। মালাক্কা প্রণালীর মুখে ভারতীয় ও জাপানি নৌসেনার যৌথ অবস্থান চিনের উপর চাপ অবশ্যই বাড়াবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE