হাতে পুঁজি বিশেষ ছিল না চলচ্চিত্র নির্দেশক হৃষিকেশ মুখার্জীর। সুরকার সলিল চৌধুরী তাকে আশ্বস্ত করলেন। কতকগুলো বেলুন ধরিয়ে দেওয়া হল গল্পের নায়ক রাজেশ খন্নার হাতে। হাওয়ায় ভেসে যাওয়া বেলুেনর পিছনে কাকার ছুটে যাওয়া ও নির্মল হাসির সঙ্গে ‘জিন্দেগি ক্যায়সি হ্যায় পহেলি...’— জুহু বিচও অমর হয়ে রইল আনন্দ ছবির দৃশ্যে।
মাঝে ছবিতে বিদেশ দেখানো অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এখন মুম্বই শহরের অনেক অংশই সিনেমায় ব্যবহার হচ্ছে। দেরিতে হলেও পরিচালকরা মুম্বই-এর সৌন্দর্যকে বুঝতে পেরেছেন। আনন্দ ছবির আরও অনেক দৃশ্যের শুটিং জুহু বিচে হয়েছে। সিআইডি, সীতা অউর গীতা, রাজা জানি, আমির গরিব, পর্দা জুড়ে রয়েছে এই জুহু বিচ। এই রকমই মুম্বইয়ের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা অনেক জায়গায় গেলেই কোনও না কোনও ছবির কথা মনে এসে যায়।
ধরা যাক তিরিশের দশকের প্রথম টকি আলম আরা। ছবিটি পারসি নাটক থেকে অনুপ্রাণিত। শুটিং হয় ফ্রেঞ্চ ব্রিজের কাছে জ্যোতি স্টুডিওয়। কাছাকাছি গ্রান্ট রোড স্টেশন। স্টুডিওটি ছিল একেবারে রেল লাইনের ধারে। ট্রেনের আওয়াজকে এড়িয়ে শুটিং করা সম্ভব ছিল না। তাই বেশির ভাগ সময় শুটিং হত দরজা বন্ধ করে ভেতরে অথবা রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে। শিবাজী পার্কের মহাত্মা গান্ধী সুইমিং পুলে গুরু দত্ত ক্যামেরায় চোখ রেখে শুটিংয়ের সঠিক এলাকাটির খোঁজ করছিলেন। কিন্তু অনেকক্ষণ খোঁজ করেও মনের মত স্পট খুঁজে পেলেন না। পরে যখন মিস্টার অ্যান্ড মিসেস ৫৫-র শুটিং শুরু হয় তখন মধুবালাকে নিয়ে শিবাজী পার্কের মহাত্মা গান্ধী সুইমিং পুলে ‘ঠান্ডি হাওয়া কালি ঘাটা’-র শুটিং করেন।
যদিও ছবি শ্রী ৪২০-এর শুটিং ইনডোরে হয়েছিল, তবুও কতগুলো দৃশ্য দেখলে মুম্বইয়ের এলাকাগুলো চেনা যায়। শ্রী ৪২০-এ প্রথম দিকে রাজ কপূর জামাকাপড় ইস্ত্রির কাজ করত। ‘প্যার হুয়া ইকরার হুয়া’ গানের ঠিক আগে রাজ একটা পার্কের সামনে নার্গিসকে চা-ওলার কাছ থেকে চা খাওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু নায়কের পকেট গড়ের মাঠ। নার্গিস পয়সা বার করে দেয়। ইতিমধ্যে বৃষ্টি এসে যায়। শুটিঙের স্পটটা সাত রাস্তার জেকব সার্কেলের পার্কের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এখন যার নাম হয়েছে সন্ত গাডগে মহারাজ পার্ক। তার পর গানের শেষে কাজে ফিরে গিয়ে ইস্ত্রি করতে দেওয়া কাপড়ের জ্বলন্ত অংশ দেখে রাজ কপূরের মাথায় হাত। মনে করিয়ে দেয় সাত রাস্তার অনতিদূরে মহালক্ষ্মীর ধোবি ঘাটের কথা। ধোবি ঘাটের ব্যাপক ব্যবহার সাম্প্রতিক কালে কিরণ রাও-এর ছবি ‘ধোবি ঘাট’-এ দেখা যায়। যেখানে প্রতীক বব্বর কাপড় কাচার কাজ করেন। মুন্নাভাই ছবিতেও ধোবি ঘাট ব্যবহার করা হয়। মনখারাপ অবস্থায় মুন্না ও সার্কিটকে ধোবি ঘাটে বসে পান করতে দেখা যায়। পৃথিবীর সব থেকে বড় খোলা কাপড় কাচার ঘাট হল এই ধোবি ঘাট।
বলিউড সিনেমার একটা প্রিয় শুটিং স্পট মায়ানগরীর মেরিন ড্রাইভ। প্রায় তিন কিলোমিটার বিস্তৃত এই মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় অমিতাভ বচ্চনের মোটর বাইকের উপর বসে ‘রোতে হুয়ে আতে হ্যায় সব’ গানের দৃশ্যের কথা কেউ ভুলতে পারবে না। মেরিন ড্রাইভে শুটিং করা ‘এ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল হ্যায় জিনা ইঁহা’ গানটার। এই গানটাই মুম্বইয়ের মন্ত্র সঙ্গীত হয়ে গেছে। মুন্নাভাই সিরিজের দুটো ছবিতেই মেরিন ড্রাইভের বিশেষ ব্যবহার দেখা যায়। পুরনো ছবি ‘মঞ্জিল’-এ মৌসুমি ও অমিতাভ বচ্চনকে মেরিন ড্রাইভে ‘রিম ঝিম গিরে সাওন’ গানের দৃশ্যে দেখা যায়। মোবাইল হাতে মেরিন ড্রাইভের শেষ মাথায় নরিম্যান পয়েন্টে মুন্নাভাইয়ের কথা বলার দৃশ্য একাধিক বার দেখা গেছে। এক বার সার্কিটকে মোবাইলে ফোন করে তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার দৃশ্যটা বোধহয় সবথেকে স্মরণীয়। তবে নরিম্যান পয়েন্টের সব থেকে সুন্দর ব্যবহার মনিরত্নম তার ‘গুরু’ ছবিতে করেছিলেন। যেখানে মাধবন হুইলে বসে থাকা বিদ্যা বালানকে নিয়ে এসেছিলেন। মেরিন ড্রাইভের শেষ মাথায় নরিম্যান পয়েন্টের সৌন্দর্যটা অনেক বেশি। দু’দিকে জল আর মাঝখানে জমিটা সরু হতে হতে শেষ হয়ে গেছে। আবার থ্রিলারেও সেই মেরিন ড্রাইভেই শুটিং। ধুম ছবিতে মোটর বাইকগুলো চুরি করে পুলিশের চোখ এড়িয়ে ট্রাকের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ায় দৃশ্য এই মেরিন ড্রাইভেই তোলা হয়। এই দৃশ্যে অনেকক্ষণ ধরে জন আব্রাহামকে বাইক চালাতে দেখা যায় এই মেরিন ড্রাইভের রাস্তায়।
মেরিন ড্রাইভে আজকাল শুটিং হলেও জুহু বিচে শুটিং প্রায় উঠেই গেছে। জুহু বিচে সব সময় অতিরিক্ত মানুষের ভিড়ের জন্য আজকাল অনেক পরিচালকই মুম্বইয়ের কাছাকাছি অন্য বিচগুলোর দিকে মুখ ঘুরিয়েছেন। জুহু বিচে বোধ হয় শেষ বারের মত শুটিং হয়েছিল নানা পাটেকরের ‘যশোবন্ত’ ছবির জন্য। তাও প্রায় আঠারো বছর হয়ে গেল। এখন অনেক পরিচালকই বেছে নেন মাড আইল্যান্ড। মনে পড়ে ‘গড তুসি গ্রেট হো’ ছবির গানটা, তুঝে আকসা বিচ ঘুমা দু। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া আর সোহেল খানের গানের তালে নেচে বেড়ানোর দৃশ্য এই আকসা বিচে। মারওয়েতে এই আকসা বিচ। এখানে সাগর সিনেমার কিছু শুটিং হয়। মানুষের ভিড়ের জন্য জুহু বিচ পরিচালকরা পরিহার করলেও জুহু বিচের ধারে কতকগুলি বাংলো এখনও পরিচালকদের প্রিয় জায়গা। সমুদ্রের ধারে ভারসোভার দারিয়া মহল আর খাস জুহু বিচের উপরে ময়ূর মহলে প্রায়ই শুটিং হয়।
‘লাগে রহো মুন্নাভাই’-এর প্রথম দৃশ্য যখন রেডিওর এফএম চ্যানেলে মুন্নাভাই একমনে শোনেন ‘গুড মর্নিং মুম্বই’, তখন বান্দ্রার সমুদ্রের এলাকা ব্যবহার করা হয়। বান্দ্রার কার্টার রোড, পালি হিল বহু সিনেমায় ব্যবহার হয়েছে। আর বান্দ্রার জগার্স পার্ক সুভাষ ঘাইয়ের সিনেমা ‘জগার্স পার্ক’-এর জন্য বিখ্যাত হয়ে গেছে। সিনেমাটা মুক্তি পাওয়ার পর থেকে মুম্বইয়ের বাইরে থেকে আসা মুম্বই ভ্রমণকারীদের কাছে অন্যতম প্রিয় দর্শনীয় স্থান হয়ে গেছে এই জগার্স পার্ক।ভূতনাথ ছবির শুটিং হয়েছিল বান্দ্রার সেন্ট স্ট্যানিসল স্কুলে।
আগে হিন্দি সিনেমায় নায়ক এক অন্য শহর থেকে মায়ানগরীতে পদার্পণ করছে অথবা অনেক দিনের হারিয়ে যাওয়া দুই বন্ধুর মিলন দেখাতে হলে ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসের সামনে শুটিং বাঁধা ছিল। তাই ‘স্লামডগ মিলিওনেয়র’ ছবিতে ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসের বহার দেখা যায়। ছোটবেলায় বিচ্ছেদ হওয়া বান্ধবীর সাথে জামাল মিলিত হয় এই ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসের কোনও এক প্ল্যাটফর্মে। পটভূমিতে ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসকে রেখে ‘এক দিওয়ানা থা’ ছবিতে প্রতীক বব্বর ও এমি জ্যাকসনকে হাঁটতে দেখা যায়।
গেট ওয়ে অফ ইন্ডিয়া এবং তার আশপাশের এলাকা দেখা গিয়েছিল হলিউডের ছবি ‘মাইটি হার্ট’-এ। যেখানে দেখানো হয় ড্যানিয়েল পার্ল এবং ম্যারিয়েন পার্ল মুম্বই বেড়াতে এসেছিলেন। সাম্প্রতিক কালের বেশ কিছু হিন্দি ছবিতে গেটওয়ে দেখা গিয়েছে। ‘বম্বে’, ‘মন’, ‘গজনি’, ‘কলিযুগ’, ‘হিরো নং ওয়ান’ ছবির গানের শুটিং হয়েছিল এখানে। দাঙ্গার সময়কার ছবি বম্বে। তার ছবির বেশির ভাগ দৃশ্যই মুম্বইয়ের বাইরে তোলা। যে জায়গাটি একেবারে না তুললেই নয় সে সব জায়গার স্থির চিত্র তুলে জুড়ে দেওয়া হয়। ইনডোর শুটিং তামিলনাড়ুতে হয়। আর আউটডোর শুটিং হয় কেরলের কাসারগোড়ে। ২৬ নভেম্বর ২০০৮, মুম্বই আতঙ্কবাদী হামলার পর গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ায় শুটিং নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। ‘এক দিওয়ানা থা’ ছবির শুটিংএ গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ‘সিংঘম রিটার্ন’-এর বেশ কিছু অংশের শুটিং হয়েছে গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ায়। ছবিতে মুম্বইয়ের এমন অনেক জায়গায় শুটিং করা হয়েছে যেখানে সাধারণত শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয় না।
রিমা কাগতির তালাশ ছবির শুটিংেয়র জন্য আমির খান অনেক দিন ভেন্ডি বাজারের একটা বাড়িতে ছিলেন। এই ছবিতে পুরনো মুম্বইয়ের বেশ কিছু অঞ্চলের দৃশ্য রয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে চার্নি রোড, লোয়ার প্যারেল, কোলাবা, গ্রান্ট রোড, মুম্বই সেন্ট্রাল এলাকা। কাগতি মূলত মুম্বইয়ের প্রাচীন বাড়ি, চল, কটন মিলের এলাকাগুলি ক্যামেরায় বন্দি করতে চেয়েছেন। যদিও পুরনো মুম্বইয়ের সেই প্রাচীন বাড়ি এবং চল দ্রুত কমছে। লোয়ার প্যারেলের কাছে চল এবং মিল এলাকার অবশিষ্ট অংশ ক্যামেরায় তুলে রাখা হয়েছে। তালাশ ছবিতে যদি দক্ষিণ মুম্বইকে ধরে রাখা হয় তবে ব্লাফ মাস্টার ছবিতে মুম্বইয়ের প্রায় পুরোটাই ধরে রাখা হয়েছে। এখানে দেখা গেছে দক্ষিণ মুম্বইএর ওয়ালকেশ্বরের বাড়িগুলো, মহালক্ষী, কোলাবার রাস্তা, মেরিন ড্রাইভ, দূর থেকে তোলা নরিম্যান পয়েন্ট, বান্দ্রা ফ্লাই ওভার, কার্টার রোড, ক্যাফে কফি ডে।
শুটিং স্পটের তালিকা থেকে বাদ পড়িনি ধারাবি এলাকাও। দিওয়ার, সালাম বম্বে, সরকার ছবির কিছু অংশের শুটিং হয় ধারাবিতে। স্লাম ডগ মিলিওনেয়রে কিছু অংশে ধারাবি এলাকা দেখা গিয়েছে। তবে যে ভাবে ধারাবিকে স্লাম ডগ মিলিওনেয়রে তুলে ধরা হয়েছে তা ভারতীয় বা মুম্বইবাসীর চোখে ভাল লাগেনি।
শুটিং স্পট যে শুধু মুম্বইয়েই সীমাবদ্ধ তা নয়। ইদানীং কালে নভি মুম্বইয়ের বেশ কিছু এলাকা সিনেমার দৃশ্যে দেখা গেছে। সাম্প্রতিক ছবি ‘আশিকি ২’- এর শুটিং হয় পুরনো ভাসি ব্রিজে। আদিত্য রয় কপূরের আত্মহত্যার দৃশ্য এই পুরনো ভাসি ব্রিজে তোলা হয়। আদিত্য রয় কপূর জলে ঝাঁপ দিচ্ছিলেন এবং শ্রদ্ধা কপূর তার বাবা মাকে নিয়ে আসছিলেন ও তার পর পুলিশের অনুসন্ধােন আসা— পুরোটাই তোলা হয় এই ভাসি ব্রিজে। এখানে শুটিংয়ের অন্যতম কারণ হল এই ব্রিজ স্থানীয় লোকেরা ব্যবহার করেন না। এখানে শুটিং হয় ‘পার্টনার’ ছবির এক দৃশ্য। যেখানে সলমন খান ছোটা ডন রাজপাল যাদবের কাছ থেকে লারা দত্তকে উদ্ধার করার জন্য মোটর বাইক চালিয়ে আসেন। ‘গোরি তেরে প্যার মে’ ছবির জন্য দিল্লির একটা ট্রাফিক আউট পোস্ট তৈরি করা হয় খারগড়ের সেন্ট্রাল পার্ক এলাকায়। যেখানে করিনা কপূর ও ইমরান খানের কিছু দৃশ্যের শুটিং করা হয়। ‘থ্রি ইডিয়টস্’-এর রাজু অর্থাৎ শরমন জোশীর আত্মহত্যার চেষ্টার পর যে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় সেই হাসপাতালটা হল ভাসির মিনি সি শোর রোডের হিরানন্দানি হাসপাতাল। এই হাসপাতালের করিডোরেই সিনেমার দৃশ্যে করিনা ও আমির খান স্কুটি আর মায়ের বিষয়ে কথা বলছিল। যতক্ষণ শুটিং চলত মানুষ ভিড় করে আসত তাদের প্রিয় নায়ক নায়িকাকে দেখবার জন্য। কমেডি ছবি ‘ওয়েলকাম’-এর একটি দৃশ্য যেখানে জোরে গাড়ি ছোটানো হচ্ছে শুটিং করা হয় নভি মুম্বইয়ের পাম বিচ রোডে। অক্ষয় কুমার, পরেশ রাওয়াল, সুপ্রিয়া কারনিক, সঞ্জয় মিশ্র গািড়র গতিতে প্রায় উড়ে চলেন নভি মুম্বইয়ের পাম বিচ রোড ধরে।
মুম্বইয়ের আউটডোর শুটিংয়ের জন্য কিছু এলাকার যেমন নস্টালজিক আবেদন রয়েছে সে রকম বেশ কিছু স্টুডিও আবার একই ভাবে ক্যামেরার পিছনে যারা কাজ করেন তাদের স্মৃতিতে একটা অন্য আবেদন নিয়ে আসে। স্টুডিওগুলো আভিজাত্যেও একটি আর একটিকে টেক্কা দেয়। আওয়ারা’ ছবির শুটিংয়ের তেরো দিনের মাথায় খবর আসে সেট ভেঙে ফেলতে হবে কারণ অন্য ছবির শুটিং শুরু হবে। সে সময়ই রাজ কপূর স্থির করেন নিজের ছবির জন্য স্টুডিও তৈরি করবেন। এর পর চেম্বুরের আর কে স্টুডিও প্রস্তুত হয়। এখানেই শ্যুটিং হয় ‘আওয়ারা’, ‘শ্রী ৪২০’, ‘জিস দেশ মে গঙ্গা বহেতি হ্যায়’, ‘মেরা নাম জোকার’ ইত্যাদির মত ছবি। তবে আর কে স্টুডিওয় কাজ বন্ধ রয়েছে অনেক দিন। কিন্তু দোল উৎসব পালন, গণেশ চতুর্থীর পুজো আজও চলে আসছে এই স্টুডিওতে।
আর কিছু দিনের মধ্যে ‘বম্বে ভেলভেট’ মুক্তি পেতে চলেছে। দশ দিনের শ্যুটিং হয় মুম্বইয়ে। দক্ষিণ মুম্বইয়ের ফোর্ট এলাকাকে নতুন করে আবার দেখা যাবে এই ছবিতে। অপেক্ষা আর কিছু দিন। পুরনো বম্বের কিছু দৃশ্য আবার এক মুম্বইকরকে নস্টালজিক করে তুলবে।
মুম্বইয়ের পুরনো স্টুডিওগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ফিল্মিস্তান স্টুডিও। অশোক কুমার, শশধর মুখার্জিদের মত সিনেমা জগতের ব্যক্তিত্বরা এই স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন গোরেগাঁওতে। স্টুডিওটায় একটি জেল, একটি হাসপাতাল, একটি থানা আছে। এই স্টুডিওতেই অমিতাভ বচ্চনের অভিনয় জীবন শুরু। পরবর্তী কালে অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বর্য রাই বচ্চনও এই স্টুডিওতেই তাদের অভিনয় জীবন শুরু করেন। ‘শহিদ’, ‘জঞ্জির’, ‘কালিয়া’, ‘ব্ল্যাক’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘রা ওয়ান’- এর শুটিং এখানে হয়।
বান্দ্রায় মেহবুব খান মেহবুব স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন। ‘মাদার ইন্ডিয়া’, ‘কাগজ কে ফুল’, ‘গাইড’ ছবি তৈরি হয় এই স্টুডিওতে। দেব আনন্দ, গুরু দত্তর এই মেহবুব স্টুডিও খুব প্রিয় ছিল। দেব আনন্দের নিজস্ব মেক-আপ রুম ছিল এই স্টুডিওয়। সেটি রয়ে গেছে তাঁর স্মৃতি হিসাবে।
পরিচালক কামাল আমরোহির স্টুডিও কামলিস্তান আন্ধেরিতে। অবশ্যই কামাল আমরোহির ছবি ‘মুঘল-এ-আজম’, ‘পাকিজা’-র শুটিং হয় এখানেই। এছাড়া এখানেই ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’-র শুটিং হয়। মনমোহন দেশাই, সুভাষ ঘাইয়ের পয়মন্ত এ স্টুডিও। সম্প্রতি ‘দবং ২’-এর জন্য সলমান খান পুরো স্টুডিওটাই বুক করেন। সিনেমা জগতে এ এক অভিনব প্রথম নজির। যে স্টুডিওর উল্লেখ না করলে এ প্রসঙ্গ অসম্পূর্ণ থেকে যায়, সেটি হল গোরেগাঁও ফিল্মসিটি। ভি শান্তারাম, বি আর চোপড়া, দিলীপকুমারের বিশেষ উদ্যোগের ফল এই স্টুডিও। কয়েক বছর আগে এর নাম হয় দাদাসাহেব ফালকে চিত্রনগরী। হ্রদ, পাহাড়, বাগান, হেলিপ্যাড, শহর, গ্রাম— কী নেই! ‘লাওয়ারিশ’, ‘কর্জ’, ‘চাঁদনি’, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’,‘ থ্রি ইডিয়েটস্’,‘ক্রিশ’ ছবির শ্যুটিং হয়েছিল এইখানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy