জি-২০ সম্মেলন। —ফাইল চিত্র।
চিনের প্রভাব বৃদ্ধির হুঁশিয়ারি, উন্নয়নশীল দেশগুলির বাজারকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করা, জি২০-র আগেই প্রাক্তন (ইন্দোনেশিয়া) এবং ভবিষ্যতের সভাপতি (ব্রাজিল)-সহ তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে আগে থেকেই কৌশল রচনা— এই বিষয়গুলিকেই সাফল্যের তিন অস্ত্র হিসাবে ঘরোয়া ভাবে আজ তুলে ধরল বিদেশ মন্ত্রক। শুধু সাউথ ব্লকই নয়, আন্তর্জাতিক মিডিয়া সেন্টারে আনাগোনা করা বিভিন্ন রাষ্ট্রের আধিকারিকদের বক্তব্যের থেকেও এই সূত্রই স্পষ্ট।
সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছিল গত বছর ইন্দোনেশিয়ায় নেওয়া বালি ঘোষণাপত্রেরই হুবহু প্রতিলিপি রাখা হবে দিল্লি ঘোষণাপত্রে। যেখানে রাশিয়ার নামে ইউক্রেন আক্রমণের দায় চাপানো এবং নিন্দাও করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতের তরফে মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, বেঁকে বসে রাশিয়া। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এর মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একবার ফোনালাপও হয়েছিল। মস্কো আপত্তি জানানোয় প্রমাদ গোনেন সাউথ ব্লকের আধিকারিকেরা এবং শেরপা অমিতাভ কান্থ। তাঁরা জানান, যদি ঘোষণাপত্রে রাশিয়ার নাম করে নিন্দা করা হয়, তা হলে শুধু মস্কোই নয়, বেজিংও তা আটকে দেবে।
সমাধানের পথ খুঁজতে তৎপর হয় নয়াদিল্লি। ভারতের তরফে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলিকে বোঝানো হয়, তারা যদি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাক্য ব্যবহারে কিছুটা স্থিতিস্থাপকতা দেখায়, তা হলে যৌথ ঘোষণাপত্রে পৌঁছনো সম্ভব। তা না হলে শুধু ভারতের সভাপতিত্বই ব্যর্থ হবে না, গোটা জি২০ মুখ থুবড়ে পড়বে। তাতে লাভ চিনের। এমনিতেই, তারা ব্রিকস-এর সম্প্রসারণ ঘটিয়ে চিন-কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছে। এ বারে পরিবর্ত আন্তর্জাতিক শক্তি কাঠামো গড়তে তৎপর হবে চিন ও রাশিয়া।
কিন্তু বাক্য ব্যবহারের প্রশ্নে কিছুটা নরম মনোভাব যদি পশ্চিম নেয়, তা হলে শুধু চিনের বিপদই এড়ানো যাবে না, কোনও বিশেষ শব্দের মোহে (যেমন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসন’) আটকে না থেকে ইউক্রেন বিষয়ে অনেক বাড়তি কথাও বলা যাবে। আমেরিকা এই যুক্তিকে সঙ্গত মনে করে এবং সিলমোহর দেয়, যা আপাত ভাবে অসম্ভব বলে মনে হচ্ছিল। এর ফলে মস্কোর সঙ্গে দর কষাকষি করতে সুবিধা হয় নয়াদিল্লির। ভারত বলে, রাশিয়ার কথা রাখা হচ্ছে। তাদের নাম কোনও জায়গায় থাকছে না। সাধারণ ভাবে ‘সমস্ত রাষ্ট্র’কে একতরফা বলপ্রয়োগে বিরত থাকার ডাক দেওয়া হচ্ছে। ‘সব রাষ্ট্রের’ সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার কথা বলা হচ্ছে।
এর ফলে মস্কোকে রাজি তো হতে হয়ই, এমনকি, তার মিত্র রাষ্ট্র চিনকেও রাজি করাতে হয় এই ঘোষণাপত্রে সই করতে। এটাও মস্কোকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যদি তারা রাজি না হয় তা হলে ভারত এবং ক্রমবর্ধনশীল বাজারগুলিতে (দক্ষিণ বিন্দুর) তাদের প্রভাব কমবে। পুরনো বন্ধু পুতিন বিষয়টি বোঝেন এবং সম্মতি দেন।
পাশাপাশি, ভারতীয় শীর্ষ নেতৃত্বের জোহানেসবার্গে ব্রিকস এবং জাকার্তায় আশিয়ান সম্মেলনে যোগ দেওয়াটাও জি২০-র ঘোষণাপত্রের ভিত গড়েছিল বলে আজ দাবি করছে সাউথ ব্লক। প্রথমে স্থির ছিল জোহানেসবার্গ যাবেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী। কিন্তু পরে সিদ্ধান্তের বদল হয় এই কারণেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy