লোকসভার কক্ষে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ, কেরলের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের রেল প্রকল্পের বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানালেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে রেল বিমাতৃসুলভ আচরণ করে বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বিরোধী শাসিত রাজ্যের শাসক দলের সাংসদদের সেই অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য আজ লোকসভাকে বেছে নেন বৈষ্ণব। তাঁর দাবি, ‘‘ভেদাভেদের কোনও প্রশ্ন নেই। আমি চাইব বিরোধী দলের সাংসদেরা তাঁদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বুঝিয়ে যেন রেলের জমি অধিগ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। তা হলেই দ্রুত রেল প্রকল্পের বাস্তবায়ন হবে।’’ অশ্বিনীর দাবি, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে রেলের সব প্রকল্প রূপায়ণে যে জমি প্রয়োজন তার মাত্র ২১ শতাংশ অধিগ্রহণ হয়েছে। ফলে কাজের গতি শ্লথ। একই ভাবে, কেরল ও তামিলনাড়ুতে যথাক্রমে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে ১৫ শতাংশ ও ২৩ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে রাজ্যের সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করেন রেলমন্ত্রী।
গত মাসেই কুম্ভ যেতে গিয়ে নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। স্বভাবতই অধিকাংশ বিরোধী সাংসদ নিজেদের বক্তব্যে রেলের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আজ পরিসংখ্যান তুলে বৈষ্ণব দাবি করেন, ২০০৫-০৬ সালে রেলের লাইনচ্যুত হওয়ার সাতশো ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছিল। তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ফি বছর গড়ে ১৬৫ রেল দুর্ঘটনা ও ২৩০টি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছিল। যার অর্থ প্রতিদিন একটি করে রেল দুর্ঘটনা হত তখন। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৩।
বিরোধী রাজ্যগুলিতে রেল মন্ত্রকের অর্থ বরাদ্দ কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধী সাংসদেরা। আজ সব রাজ্যের পরিসংখ্যান তুলে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইউপিএ আমলে পশ্চিমবঙ্গের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪,৩০০ কোটি টাকা। এখন তা প্রায় ১৪ হাজার কোটিতে দাঁড়িয়েছে।’’ রাজ্যসভায় তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের দাবি, ‘‘সে সময়ে রেলের বাজেট কত ছিল আর এখন রেলের বাজেট কত হয়েছে, সেই অনুপাত দেখলেই বোঝা যাবে আসলে রেলের বরাদ্দ কমেছে পশ্চিমবঙ্গ, কেরলের, তামিলনাড়ুর মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)