ছবি রয়টার্স।
কে আগে তাদের সেনা পেছোবে? সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের ফাঁদে এখনও আটকে ভারত এবং চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বিষ-গিঁট।সেনা ফেরানো নিয়ে ভারত এবং চিনের বিদেশমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হওয়ার পাঁচ সপ্তাহ অতিক্রান্ত। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি সেই তিমিরেই। লাগাতার সাত রাউন্ডের পর বসতে চলেছে দু’দেশের সামরিক কমান্ডার স্তরের অষ্টম বৈঠক।
যেখানে থাকবেন বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিও। মন্ত্রক সূত্রের খবর, কোন পক্ষ আগে তাদের সেনা পিছিয়ে নেবে তা নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তম রাউন্ডে বিস্তর বাদানুবাদের পরেও মীমাংসায় পৌঁছনো যায়নি। অষ্টম রাউন্ডে ফের চেষ্টা হবে। কিন্তু সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তাই আসন্ন কঠিন আবহাওয়ায় যাতে সেনারা জমে না যান, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা শুরু করে দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সূত্রের খবর, জরুরি ভিত্তিতে অধিক উচ্চতায় কার্যকরী সামরিক সাজপোশাক আমেরিকার কাছ থেকে আনিয়েছে ভারত।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তম রাউন্ডের বৈঠকে চিন ভারতের উপর চাপ দিয়েছে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তের গিরিশৃঙ্গগুলি থেকে আগে ভারতীয় সেনাকে পিছু হঠতে হবে। এপ্রিল মাসের আগের স্থিতাবস্থায় পৌঁছনোর জন্য এই বিষয়টিকে পূর্বশর্ত হিসাবে সামনে রাখছে বেজিং। সূত্রের মতে, অন্য দিকে নয়াদিল্লি পিএলএ-র উপর চাপ দিচ্ছে প্যাংগং লেকের উত্তরপ্রান্ত থেকে দু’তরফের সেনা একই সঙ্গে পিছু হটানোর।
আরও পড়ুন: কোভিড-পর্বের পর পুরনো ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ
ভারতের অভিযোগ, সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পরবর্তী ‘বাফার জোন’ অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে থানা গেড়ে বসেছে চিনা সেনা। ঘরোয়া ভাবে এটাও বলা হচ্ছে, চিনের এই আগ্রাসী পদক্ষেপের পাল্টা হিসাবে ভারতও প্যাংগং-এর দক্ষিণে সাতটি গিরিশৃঙ্গের দখল নিয়েছে, যেখানে আগে ভারত বা চিন কারও দখলদারি ছিল না।
আরও পড়ুন: মোদীর ‘সাহসী’ দাবি, বাস্তব দেখালেন কৌশিক
চিনের কাছে বিষয়টি ত্রাসের, কারণ এই এলাকা থেকে চিনা ভূখণ্ডের সেনাদের গতিবিধির উপর নজর রাখা যায়। এক কর্তার কথায়, ভারত-চিন আলোচনায় বেজিং-এর পক্ষ থেকে চাপ আসছে, এই গিরিশৃঙ্গগুলি থেকে ভারতকে আগে সেনা সরাতে। স্বাভাবিক ভাবেই নয়াদিল্লি রাজি নয়। ভারতের বক্তব্য, প্যাংগং লেকের দু’পার থেকেই একই সঙ্গে সেনার পশ্চাদপসরণ ঘটানো হোক।
আসন্ন ভারত চিন আলোচনায় আরও একটি বিষয় নিয়ে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা হবে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, পিএলএ-র প্রস্তাব, সেনা সরানোর অঙ্গ হিসাবে দু দেশই প্রথমে কামান এবং ট্যাঙ্ক সরিয়ে নিক। সবার শেষে পদাতিক বাহিনীকে পিছোনো হবে। এই প্রস্তাবে ভারতের অসম্মতি রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। চিনকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারা যায় না বলে ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে নয়াদিল্লির সরকারি সূত্র। এই এলাকায় প্রথমেই যদি ভারত সমস্ত কামান এবং ট্যাঙ্ক সরিয়ে নেয়, তা হলে প্রতিপক্ষ (অর্থাৎ চিন) রণকৌশলগত ভাবে সুবিধা পাবে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে সমান্তরাল জটিলতা তৈরি হয়েছে আজ। লে শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে কার্গিল যাওয়ার পথে রয়েছে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে নিহত সেনাদের স্মৃতি সৌধ। সেই সৌধে গিয়েছিলেন এক সাংবাদিক। সেখান থেকে টুইটারে একটি লাইভ করেন তিনি। এই লাইভেই টুইটার জিও লোকেশন সার্ভিস-এ লেকে চিনের অংশ বলে দেখা যায়। ওই সাংবাদিকের পোস্ট করা স্ক্রিনশটে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ‘জম্মু কাশ্মীর—পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না’! স্ক্রিনশটটি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট হতেই হইচই শুরু হয়। নেটিজেনদের ক্ষোভ উপচে পড়ে। পরে ওই সংস্থার পক্ষ থেকে একে যান্ত্রিক ত্রুটি হিসাবে সাফাই দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy