অনেক বিদ্যালয়ে যেমন এদিন টেস্ট পরীক্ষা হয়েছে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ, ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে, লাগাতার পুলিশি টহল ও নজরদারি চলছে, থানায় শান্তি বৈঠক করা হচ্ছে, আর এ ভাবেই বেলডাঙায় শান্তি ফেরাতে তৎপর পুলিশ প্রশাসন। এরই মাঝে বৃহস্পতিবার বেলডাঙা শহর লাগোয়া কাহারপাড়ায় তথ্য সংগ্রহে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশের লোকজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলডাঙা শহরের একাংশের দোকান বন্ধ হয়ে যায়, মাঝপথে কয়েকটি বিদ্যালয়ে ছুটিও দেয়। তবে অনেক বিদ্যালয়ে যেমন এদিন টেস্ট পরীক্ষা হয়েছে।
এ দিন দুপুরে বেলডাঙা থানায় শান্তি বৈঠক হয়েছে। সেখানে পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে দুই বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী এবং হাসানুজ্জামান উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে এদিন সন্ধ্যায় বেলডাঙার একটি জায়দায় একদল মহিলা ঘটনার প্রতিবাদে অবরোধ করেন। সেই অবরোধ তুলতে সেখানে পুলিশের আধিকারিকেরা যান। তবে বেলডাঙার ঘটনার জেরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সমালোচনা করেছেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী। বেলডাঙা ইস্যুতে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন।
বেলডাঙার ঘটনার জেরে গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা টানা বন্ধ করে রাখা নিয়ে প্রশ্ন ও বিরোধিতা বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ষড়যন্ত্র করে একটা ঘটনা ঘটানো হল। তার পরে গোটা জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। মণিপুরের ৭টি জেলায় জাতি-গোষ্ঠীগত সংঘর্ষের জেরে সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ। এখানে একটা থানা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে, তার জন্য একই পদক্ষেপ? এই সরকারের কাছে মণিপুর আর বহরমপুর এক হয়ে গিয়েছে!’’ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ আর্জি জানিয়েছেন, মানুষের আশঙ্কা কাটিয়ে আস্থা ফেরাতে তিনি বিবৃতি দিন। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করুন। নেট বন্ধ থাকার সময়ে কিছু সুযোগসন্ধানী শক্তি আরও গুজব ও উস্কানি ছড়াচ্ছে। এলাকায় তাঁদের যেতে দেওয়ার জন্যও আবেদন জানিয়েছেন অধীর।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, নিচু তলার পুলিশ অন্যায় করছে। বেলডাঙায় যা হয়েছে এবং তার পরে বিস্তীর্ণ এলাকায় নেট বন্ধ রাখা হয়েছে, তার দায় কি শুধু নিচু তলার পুলিশের? উপর তলার কোনও দায়, ভূমিকা নেই? এখনকার সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ রেখে সাধারণ মানুষের হয়রানি করা হচ্ছে।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে শান্তি ফেরানোর জন্য পুলিশ-প্রশাসন যা ভাল মনে হয়, তা-ই করেছে।
বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘ঘটনার পর পরই প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কর্মীরা ছুটে যান। আমি নিজেও সেখানে ছুটি গিয়েছি। রাতভর জেগে থেকে বেলডাঙার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কার্তিক লড়াই সেখানেই শান্তিতে হয়েছে। কই তখন তো সেখানে অধীরবাবুকে দেখা যায়নি। যখন পুলিশ প্রশাসন, সাধারণ মানুষ, আমাদের প্রচেষ্টায় শান্তি ফিরেছে তখন ঘোলা জলে মাছ ধরতে, সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টায় অধীরবাবু সেখানে যাওয়ার কথা বলছেন।’’
অপূর্ব বলেন, ‘‘বেলডাঙায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থায় প্রশাসনের পাশে আমাদের দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ছিলেন। এক জনকে আমি নিজে কলকাতায় এনে চিকিৎসা করাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন। আর অধীরবাবুকে ছবি তোলার জন্য হাসপাতালে দেখা যায়। আপনি ছবি তোলার অভ্যাস ত্যাগ করুন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দেওয়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ত্যাগ করে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান।’’
এর মধ্যেই সারা জেলা অপেক্ষা করছে, কখন ইন্টারনেট আবার চালু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy