ফাইল চিত্র।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ‘মৌনতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন নরেন্দ্র মোদী। সেই মনমোহন আজ মোদীকে মনে করিয়ে দিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে সব সময় তাঁর কথার তাৎপর্য সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হয়।
গত সপ্তাহে লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে মোদী দাবি করেছিলেন, ‘কেউ ভারতের এলাকায় ঢোকেনি। কেউ ভারতের এলাকায় বসেও নেই।’ অথচ এর আগে সেনা সূত্রে অভিযোগ করা হচ্ছিল, চিনের সেনা প্যাংগং হ্রদ ও গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতের কিছু অংশ কব্জা করেছে। বিদেশ মন্ত্রকও বলেছিল, চিন ভারতের এলাকায় ঢুকে কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পরে অভিযোগ ওঠে, গালওয়ান উপত্যকার ওই অংশকে নিজেদের এলাকা বলে যে দাবি চিন করছিল, তাতে সিলমোহর দিল ভারত।
আজ সে দিকে ইঙ্গিত করে মনমোহন বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কথা ব্যবহার করে ওরা নিজেদের অবস্থানকে ঠিক বলে প্রমাণ করবে, এটা উনি হতে দিতে পারেন না।” রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, লাদাখে গত ৫ মে থেকে চিন ভারতের এলাকা দখল করে বসে থাকলেও কেন্দ্র তা স্বীকার করেনি। ভুল তথ্য দিয়েছে।
আরও পড়ুন: লাদাখে ক্ষেপণাস্ত্র, সেনা-মৃত্যু মানল চিন
আজ মনমোহন বলেন, “সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ভুল তথ্য ছড়ানো কোনও ভাবেই কূটনীতি বা নির্ণায়ক নেতৃত্বের বিকল্প নয়।”
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এই তিরের মুখে আজ পাল্টা আক্রমণে গিয়েছে বিজেপি। মনমোহনকে বিঁধে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় উনি ভারতের কয়েকশো বর্গকিলোমিটার জমি শোচনীয় ভাবে চিনের কাছে সমর্পণ করেছিলেন। ২০১০ থেকে ২০১৩-র মধ্যে ওঁর প্রধানমন্ত্রিত্বে চিন ৬০০ বার অনুপ্রবেশ করেছে।’’
আরও পড়ুন: চিনের সঙ্গে জোড়া বৈঠকে বসবে ভারত
কিন্তু কংগ্রেস মনে করছে, মোদীকে নিশানা করে রাহুল যে আক্রমণ শুরু করেছিলেন, সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি প্রশ্ন করে তার ধার বাড়ান সনিয়া। আজ মনমোহন মুখ খোলায় আক্রমণ আরও শক্তিশালী হল। রাহুল আজ বলেন, “ভারতের মঙ্গলের জন্যই মনমোহন সিংহের এই পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী মানবেন বলে আশা করছি।”
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সে দিনের মন্তব্য চিনা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ ফলাও করে প্রচার করেছে। মোদীর এই মন্তব্যের ফলে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমবে বলেও মন্তব্য করেছেন সে দেশের কর্তাদের অনেকে। আজ রাহুলের প্রশ্ন, “চিন আমাদের সেনাদের মেরেছে। চিন আমাদের জমি দখল করেছে। তা হলে চিন মোদীর প্রশংসা করছে কেন?”
মোদীর বিবৃতি নিয়ে অস্বস্তির মুখে প্রধানমন্ত্রীর দফতর যেমন ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তেমনই সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএসআর জগন্মোহন রেড্ডি, তেলঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও, সিকিমের প্রেম সিংহ তামাং, মেঘালয়ের কনরাড সাংমারা। তাঁদের যুক্তি ছিল, এটা রাজনীতির সময় নয়, ঐক্যবদ্ধ থাকার সময়। আজ মায়াবতীও সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যার পাল্টা মনমোহন বলেছেন, “নমনীয় শরিকদের দিয়ে সান্ত্বনাবাক্য, কিন্তু মিথ্যে বিবৃতি উচ্চারণ করিয়ে সত্যকে ধামাচাপা দেওয়া যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy