প্রসঙ্গ ছিল গুজরাত হাই কোর্টে চলা আইনজীবীদের বিক্ষোভ। সেখান থেকেই অন্য প্রসঙ্গে গিয়ে কলেজিয়াম ব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়।
রবিবার দেশের বার কাউন্সিলের তরফে দেশের নতুন বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই চন্দ্রচূড় গুজরাত হাই কোর্টে আইনজীবীদের বিক্ষোভ এবং কর্মবিরতি নিয়ে বলেন, “এমন বিক্ষোভ বিচারপ্রার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে।” চন্দ্রচূড় যখন এ কথা বলছেন, তখন মঞ্চে উপস্থিত কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুও। তাঁর সামনেই চন্দ্রচূড় জানিয়ে দেন, জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেয় কলেজিয়াম।
গুজরাত হাই কোর্টের বিক্ষোভ নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন মন্ত্রীও। বলেছেন, “কলেজিয়ামের প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়েই যদি এমন বিক্ষোভ দেখানো হয়, আর সরকারের তরফে বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করা হয়, তবে বুঝতে পারছেন পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে?”
কিছু দিন ধরেই কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে সরকার এবং শীর্ষ আদালতের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। সরকারের দাবি, কলেজিয়ামের মধ্যে যে নিয়োগ হচ্ছে, তাতে সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। তা ছাড়া কেন্দ্রের পক্ষের যুক্তি, দেশের শীর্ষ আদালত এবং উচ্চ আদালতগুলিতে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারেরই প্রধান ভূমিকা নেওয়া উচিত। বিচারবিভাগকে রাজনীতির ছোঁয়াচ থেকে দূরে রাখার এই যুক্তির আগাগোড়া বিরোধিতা করেছে শীর্ষ আদালত।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম গুজরাত হাইকোর্টের এক বিচারপতিকে অন্যত্র বদলি করার নির্দেশ দেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আদালত বয়কট করার ডাক দেন আইনজীবীরা। তাঁরা এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলতে চান বলে দাবি করেন। তাঁদের দাবি মেনে নিয়ে চন্দ্রচূড় বিক্ষোভরত আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং ৪ জন প্রবীণ বিচারপতিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে কলেজিয়াম ব্যবস্থা। সুপ্রিম কোর্ট এবং বিভিন্ন হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে প্রধান ভূমিকা পালন করে এই কলেজিয়ামই। কলেজিয়ামের প্রস্তাবিত নাম সরকারপক্ষ পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারে মাত্র। কিন্তু কলেজিয়াম আবার সেই নামে সিলমোহর দিলে, তাতে সম্মতি জানাতে বাধ্য সরকার। কিন্তু বিচার বিভাগের বড় অংশের অভিযোগ, প্রস্তাব পাঠানো হলেও নানা কারণে বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে সরকার। ফলে আদালতে তৈরি হচ্ছে শূন্যপদ, দীর্ঘায়িত হচ্ছে বিচারপ্রক্রিয়া।