ড্রোন দিয়ে আকাশে তৈরি জাতীয় পতাকার আদল। ‘বিটিং দ্য রিট্রিট’ অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লিতে শনিবার। ছবি: রয়টার্স।
মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর প্রিয় স্তোত্র ‘অ্যাবাইড উইথ মি’ বাদ গেল। তবে ‘বিটিং দ্য রিট্রিট’ অনুষ্ঠানের ড্রোনের প্রদর্শনীতে ভারতের মূল্যবোধের প্রতীক হয়ে ফুটে উঠলেন গান্ধীই।
প্রতি বছর ২৯ জানুয়ারি হওয়া ‘বিটিং রিট্রিট’ অনুষ্ঠান থেকে গান্ধীর প্রিয় স্তোত্র বাদ যাওয়ার খবর আগেই জানাজানি হওয়ায় প্রতিবাদ হয়েছে বিস্তর। তাই অনুষ্ঠান নিয়ে আগ্রহও ছিল তুঙ্গে। আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-সহ অতিথিদের সামনে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার ব্যান্ডের সদস্য ও অন্য অংশগ্রহণকারীরা তুলে ধরলেন নয়া চেহারার সেই ‘বিটিং রিট্রিট’। যার পরতে পরতে ‘নয়া ভারত’-এর বার্তা। যে বার্তা নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রচারের মূল মন্ত্রও বটে।
পরিকল্পনা মতোই এ বার ‘বিটিং রিট্রিট’-এ ব্যান্ডের আওয়াজে শোনা গিয়েছে বেশ কিছু নতুন সুর। তার মধ্যে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের তৈরি সুর ‘কেরালা’, ‘হিন্দ কি সেনা’। আবার রয়েছে অতি পরিচিত ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগোঁ’। যে গানকে সামরিক ব্যান্ডের উপযুক্ত রূপ দিয়েছেন মেজর এস আর ভূষল। আর গান্ধীজির প্রিয় স্তোত্রের স্থানে শোনা গিয়েছে ‘সারে জঁহা সে অচ্ছা’।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ৭৫ বছরে ভারতের অগ্রগতির রূপরেখা তুলে ধরতে আয়োজিত লেজ়ার ও ড্রোন শো। যা সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অন্যতম প্রদর্শনীও বটে। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ১ হাজার ড্রোনের আলোয় দেশের যাত্রাপথের কাহিনির পিছনে রয়েছে স্টার্ট আপ সংস্থা ‘বটল্যাব ডায়নামিকস’, দিল্লি আইআইটি ও কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের যৌথ উদ্যোগ।
ড্রোন শো-র আগেই ধারাভাষ্যে শোনা গেল পিস্তল থেকে শুরু করে তেজস বিমান, মঙ্গলযান থেকে ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম ‘নয়া ভারত’-এর আত্মনির্ভরতার কথা। যে ভারত কেবল অস্ত্রশস্ত্রে আত্মনির্ভর নয়, আত্মনির্ভরতা রয়েছে যার বিশ্বাস, ধ্যান ধারণাতেও।
হাজার ড্রোনের আলোয় পৃথিবীর চেহারা আর ভারতের মানচিত্র ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই শোনা গেল কেবল ভূখণ্ড নয়, কোনও দেশের বাসিন্দাদের সভ্যতা, মূল্যবোধ নিয়েই তৈরি হয় দেশ। ভারতের মূল্যবোধ, সহিষ্ণুতা, প্রেম, সৌহার্দ্য, সাহস, সত্যাগ্রহ। আর সেই মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে ফুটে উঠল মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ছবি। ধারাভাষ্যে মনে করানো হল গান্ধীর সম্পর্কে আইনস্টাইনের উক্তি। গান্ধী ও অন্য দেশপ্রেমিকদের চেষ্টায় যে স্বাধীনতা পেয়েছে দেশ তাকে দেশের সামরিক বাহিনী সুরক্ষিত রেখেছে। তাই তাদের সম্মানে তৈরি জাতীয় সামরিক স্মৃতিসৌধের ছবি ফুটে উঠল এর পরে। যে সৌধের মধ্যে জ্বলে ‘অখণ্ড অমর জওয়ান জ্যোতি’। নিহত সেনাদের নাম বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে যে সৌধ। আর যে সৌধ আর ‘অখণ্ড জওয়ান জ্যোতি’ নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছে সরকার। ধারাভাষ্যে জানানো হল, আজ ভারত ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে যুদ্ধজাহাজ, সব কিছুতেই পারদর্শী। ‘আত্মনির্ভর’। রাজনীতিকেরা বলছেন, এই কথা বারবার এক নেতার মুখে শোনা যায়। তিনি নরেন্দ্র মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy