(বাঁ দিকে) পূজা খেড়কর। স্মিতা সবরওয়াল (ডান দিকে)। ছবি: এক্স (পূর্বতন টুইটার)।
পূজা খেড়করের একাধিক কর্মকাণ্ডে বিতর্কের মাঝেই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন এক আইএএস অফিসার। সেই অফিসার স্মিতা সবরওয়াল গত ২১ জুলাই তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘পাইলটের চাকরির ক্ষেত্রে কি প্রতিবন্ধী কোটা গ্রাহ্য হয়? তা হলে আমলাদের ক্ষেত্রে এই সংরক্ষণ কেন থাকবে? প্রশাসনিক কাজেও শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়, নিজে উপস্থিত থেকে মানুষের দাবিদাওয়া শুনতে হয়। সে সবের জন্য যথেষ্ট শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন।’’ এই মন্তব্যের পরেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
স্মিতা তেলঙ্গানা ফিন্যান্স কমিশনের সদস্য-সচিব। তেলঙ্গানা ক্যাডারের ২০০১ ব্যাচের আইএএস তিনি। রবিবার স্মিতা নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান বজায় রেখেই বলছি, কোনও বিমান পরিবহণ সংস্থা কি কখনও পাইলট হিসাবে কোনও প্রতিবন্ধীকে নিয়োগ করে? কিংবা অস্ত্রোপচারের সময় কি আপনারা কোনও প্রতিবন্ধী সার্জনকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারবেন? তা হলে প্রশাসনিক ক্ষেত্রেই বা এই সংরক্ষণ থাকবে কেন?’’ স্মিতার এই পোস্টের পরেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক।
স্মিতার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরব হয়েছেন শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। তাঁর মতে, এ হেন ভাবনা শুধু একপেশে এবং অসম্মানজনকই নয়, বরং হতাশারও। প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাও যে এমন ধারণা করতে পারেন, তা দেখে অবাক হয়েছেন তিনি। একই সুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী করুণা নন্দী নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘এক জন আমলা যে প্রতিবন্ধীদের সম্পর্কে এমন সঙ্কীর্ণ মনোভাব পোষণ করতে পারেন, তা ভেবেই অবাক লাগছে! বেশির ভাগ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গেই পরিশ্রম করার ক্ষমতা কিংবা বুদ্ধিমত্তার কোনও সম্পর্ক নেই। ওঁর মন্তব্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে এখনও শিক্ষার কতটা প্রয়োজন।’’
দিন কয়েক আগে মহারাষ্ট্র ক্যাডারের প্রশিক্ষণরত আইএএস পূজা খেড়করের বিরুদ্ধে ভুয়ো শংসাপত্র দাখিলের অভিযোগ ওঠে। সংরক্ষণের সুবিধা নিয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই নাকি একাধিক ভুয়ো শংসাপত্র বানিয়েছিলেন পূজা। নিজেকে ‘অনগ্রসর’ (ওবিসি) শ্রেণিভুক্ত বলে দেখানোর পাশাপাশি ভুয়ো প্রতিবন্ধী শংসাপত্রও বানান তিনি! দু’বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় সেই ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমাও দেন। তবে নিয়োগের আগে ২০২২ সালে এমস-এ প্রতিবন্ধকতার পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হলে ছ’বার নানা অজুহাতে পূজা তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এত গলদ সত্ত্বেও তিনি কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রসঙ্গত, পূজাকে নিয়ে এত বিতর্কের মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে আর এক আইএএস অফিসার অভিষেক সিংহের নাম। ২০১১ ব্যাচের এই অফিসার ২০২৩-এ চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। অভিযোগ, তিনিও ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে সংরক্ষণের সুযোগ নিয়েছিলেন। আর এতেই দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, ইউপিএসসি-র মতো গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগে কী ভাবে ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করা সম্ভব! কাদের গাফিলতির জন্য পূজা-অভিষেকরা নিয়োগ পেলেন? সম্প্রতি নিট-সহ একাধিক পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে এমনিতেই কেন্দ্র অস্বস্তিতে, এ বার ইউপিএসসি নিয়োগ ঘিরেও প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যে আমলা হওয়ার পরীক্ষার বোর্ড ইউপিএসসির চেয়ারপার্সন মনোজ সোনি তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তার মাঝে প্রতিবন্ধী সংরক্ষণের মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আর এক আমলার এ হেন মন্তব্য উস্কে দিয়েছে বিতর্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy