বাস কন্ডাক্টরের কাছে মরাঠি ভাষায় টিকিট চেয়েছিলেন যাত্রী। কিন্তু কন্ডাক্টরের সেই ভাষা বোধগম্য হয়নি। তিনি ওই যাত্রীকে কন্নড় ভাষায় বলতে বলেন! উত্তেজনার সূত্রপাত সেই থেকে। অভিযোগ, তার পরই এক দল লোক ওই কন্ডাক্টরের উপর চড়াও হন এবং মারধর করেন। ঘটনা এখানেই থেমে যায়নি। পরের দিন প্রতিশোধ নিতে ওই রুটেরই একটি বাসের চালকের উপর হামলা চালান কয়েক জন। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা ওই চালকের মুখে কালো রঙ লাগিয়ে দেন! পর পর দু’দিনের ঘটনার জেরে মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রবিন্দু দুই রাজ্যের সীমানা লাগোয়া বেলগাভি।
ভাষা বিতর্কের জেরে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের পরিবহণ দফতর কর্নাটকের সঙ্গে বাস পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘মহারাষ্ট্র স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন’ (এমএসআরটিসি) জানিয়েছে, কোলাপুর থেকে কর্নাটকের কোথাও আপাতত কোনও বাস চলবে না।
কর্নাটক রাজ্য সড়ক পরিবহণ দফতরের (কেএসআরটিসি) একটি বাসে কন্ডাক্টরের সঙ্গে বচসা বাধে এক যাত্রীর। অভিযোগ, যাত্রীর মরাঠি ভাষা বুঝতে পারেননি কন্ডাক্টর। তিনি কন্নড় ভাষায় বলতে বলায় তাঁর উপর চড়াও হন কয়েক জন। মারধর করা হয়। কন্ডাক্টরের মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। তবে ওই কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে পকসো আইনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি ১৪ বছর বয়সি এক নাবালিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।
আরও পড়ুন:
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কর্নাটকের চিত্রদূর্গে এমএসআরটিসি-র একটি বাসে হামলা চালায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। অভিযোগ, মাঝ রাস্তায় বাসটিকে থামায় তারা। তার পর বাসে উঠে চালককে ধরে মারধর করে। আহত বাসচালকের নাম ভাস্কর যাদব। তাঁর মুখে কালি লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। তার পরই মহারাষ্ট্রের পরিবহণমন্ত্রী প্রতাপ সারনায়েক দুই রাজ্যের মধ্যে বাস পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বেলগাভি জেলা নিয়ে কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের মধ্যে বিবাদ বহু দিনের। বেলগাভি কর্নাটকে হলেও সেখানে মারাঠি ভাষাভাষি লোকের সংখ্যা বেশি। সীমানাবর্তী এই জেলাকে মহারাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য লড়াই চলছে অনেক দিনের। যদিও কর্নাটক সেই দাবি নস্যাৎ করে। ১৯৬৬ সালে মহাজন কমিশনও কর্নাটকের পক্ষেই রায় দেয়। ২০০৪ সালে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। এখনও তা বিচারাধীন।