ভোটের দাবি, জনমোহিনী বাজেট। পিছুটান, রাজকোষের টানাটানি।
২০১৯-এর ভোটের আগে ১ ফেব্রুয়ারি শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন অরুণ জেটলি। ভোট টানতে তুরুপের তাস দেখানোর এটাই শেষ সুযোগ। স্বাভাবিক ভাবেই মধ্যবিত্তের জন্য করছাড় নিয়ে প্রত্যাশা তুঙ্গে। কিন্তু সেটা করতে গেলে রাজকোষের হাল আরও খারাপ হবে। ক্ষমতায় ফিরলে রাজকোষের দুর্দশা কী ভাবে সামলানো যাবে, সেই প্রশ্নও উঠছে বিজেপির অন্দরে।
এই অবস্থায় মধ্যবিত্তের উপর করের বোঝা কমানোর ভাবনা থাকলেও তার রূপরেখা এখনও ঠিক হয়নি। এখন আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হয় না। আড়াই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। সরকারি সূত্র বলছে, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হবে কি না, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ রাজকোষের যা অবস্থা, তাতে এটা করা মুশকিল। সে ক্ষেত্রে রাজকোষ ঘাটতি আরও বাড়বে।
নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের যুক্তি, ‘‘কেউ যদি ভাবেন, এটা সরকারের শেষ বাজেট বলে জনমোহিনী বাজেট হবে, তা হলে ভুল হবে। প্রধানমন্ত্রী কোনও দিনই ভোটের কথা ভেবে বাজেট করার পক্ষপাতী নন। সাধারণ মানুষের সুরাহা ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই বাজেট হবে।’’
তা হলে ভোটের বাজেটে থাকবে কী? অর্থ মন্ত্রক সূত্র বলছে, এ বারের বাজেটে গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষকদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। মোদী জমানায় কৃষকদের দুরবস্থা বেড়েছে বলে বারেবারেই অভিযোগ উঠেছে। গুজরাত বিধানসভা ভোটে কৃষকদের সেই ক্ষোভের আঁচ টেরও পেয়েছেন মোদী। ফলে কৃষকদের জন্য উপহার থাকার সম্ভাবনা।
সেই সঙ্গে পাখির চোখ তরুণ প্রজন্মের ভোট। মোদীর সবথেকে বড় মাথাব্যথা নতুন চাকরি। লোকসভা ভোটের প্রচারে তাঁর প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে ২ কোটি চাকরি। সেই প্রতিশ্রুতির দশ ভাগের এক ভাগও পূরণ হয়নি। উল্টে নোটবাতিল ও জিএসটি-র জেরে ব্যবসা খুইয়ে কর্মহীনের সংখ্যা বেড়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এ নিয়ে রোজই মোদীকে তুলোধনা করছেন। এই অবস্থায় বাজেটে ‘জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি’ ঘোষণার পরিকল্পনা চলছে। কোন সংস্থা কত চাকরি দিচ্ছে, তার ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎসাহ ভাতার ঘোষণাও হতে পারে।
আমজনতাকে সুরাহা দিতে আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ে যে কর ছাড় মেলে, তার বাইরে আরও কিছু করছাড়ের ব্যবস্থা হতে পারে। বিশেষত মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে লগ্নিতে বাড়তি কর ছাড় দেওয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।
সোজাসুজি কর ছাড় দিতে সমস্যা কোথায়? উত্তর হল, কোষাগারের বেহাল দশা। অর্থমন্ত্রীর লক্ষ্য ছিল, রাজকোষ ঘাটতি জিডিপি-র ৩.২ শতাংশে বেঁধে রাখা। কিন্তু সেটা অসম্ভব। অথচ ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে জিতে ফের ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী অধিকাংশ বিজেপি নেতা। ফলে কোষাগারের হাল আরও খারাপ করে ভবিষ্যতে বিপাকে পড়তে তাঁরা নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy