Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

ভোটযন্ত্র সারাতে কাছাড়ের প্রত্যন্ত গ্রামে হেলিকপ্টার

মণিপুর সীমায়, কাছাড়ের জিরিঘাটের টুলপাই মার নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটারদের লাইন।—নিজস্ব চিত্র

মণিপুর সীমায়, কাছাড়ের জিরিঘাটের টুলপাই মার নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটারদের লাইন।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৩
Share: Save:

ভোটযন্ত্র সারাতে হেলিকপ্টার ডাকা হল কাছাড়ে!

ঘটনা লক্ষ্মীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মণিপুর সীমানা লাগোয়া জিরিঘাটের ১৭৬ নম্বর টুলপাই মার নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আজ সকাল ৭টায় যথারীতি ভোট শুরু হয়। ৯৯টি ভোট ঠিকঠাকই গ্রহণ করা হয়। শততম ভোটের সময় বিগড়ে যায় যন্ত্র। অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসাররা। অসহায় অবস্থায় যোগাযোগ করেন সেক্টর অফিসার, জোনাল ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে। তাঁরাই বা কী করবেন! প্রত্যন্ত এলাকায় ওই ভোটকেন্দ্র। গাড়ি চড়ে পৌঁছতে অন্তত পাঁচ ঘণ্টা চাই। খবর পেয়ে জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন তড়িঘড়ি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করেন। ডেকে পাঠান এক ইঞ্জিনিয়ারকে। হেলিকপ্টারে গিয়ে ওই ইঞ্জিনিয়ার ইভিএম বদলান। ফের শুরু হয় ভোটগ্রহণ।

বিশ্বনাথন জানিয়েছেন, কাছাড়ে এমন ব্যাপার এই প্রথম ঘটল। চার-পাঁচ ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকলে সমস্যা হতো। ইভিএম খারাপ জেনেও সবাই ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হেলিকপ্টারে ইভিএম পৌঁছনোর পর নির্বিঘ্নে ভোট সম্পন্ন হয়। ওই কেন্দ্রে শেষপর্যন্ত ৮০ শতাংশ ভোট সংগ্রহ হয়।

ইভিএম বিকল হওয়ার খবর মিলেছে বরাক উপত্যকার তিন জেলার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে। সব জায়গাতেই অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যে যন্ত্র বদলে ভোট সম্পন্ন হয়। দক্ষিণ করিমগঞ্জে বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্য সিদ্দেক আহমেদের গাড়ি ভাঙচুর ছাড়া কোথাও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। দিনভর বৃষ্টির মধ্যেও ভোটের হার ৮০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। যেমন গ্রামে, তেমনি শহর এলাকায় মানুষ লাইন ধরে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, কাছাড়ে ৭৬.৭৯ শতাংশ ও হাইলাকান্দিতে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

করিমগঞ্জ জেলার ৩৬১ নম্বর ভোটকেন্দ্র গন্ধর্বখানি স্কুলে বিকেলে ইভিএম বিকল হলে অশান্তির সূত্রপাত ঘটে। প্রিসাইডিং অফিসার নেড়েচেড়ে দেখতে গিয়ে তিন বার ভোট পড়ার শব্দ হয়। এতেই রটে যায়— প্রিসাইডিং অফিসার ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। ছুটে যান মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ। তাঁর উপস্থিতি আরেক বিতর্কের জন্ম দেয়। রিগিংয়ের অভিযোগ করে এআইইউডিএফ সমর্খকরা তাঁর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চলে। চালক জখম হন।

মন্ত্রী সিদ্দেকের সঙ্গে এ দিন বিতর্ক বাঁধে ডিএসপি রণবীর শর্মারও। টুকরবাজারে ডিএসপি-র ঘনঘন সফর নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আহমেদ। শর্মা জবাব দেন, এলাকাটি অতি স্পর্শকাতর। তাই তাঁকে বার বার আসতেই হয়। টুকরবাজার স্কুল মন্ত্রী আহমেদের নিজের ভোটকেন্দ্র।

বড় অঘটন ছাড়া ভোটপর্ব শেষ হয়েছে হাইলাকান্দি জেলাতেও। তবে কাটলিছড়ার বিজেপি প্রার্থী রাজকুমার দাসের নির্বাচনী এজেন্ট রাহুল সূত্রধর অভিয়োগ করেছেন, কংগ্রেস সমর্থকরা তাঁকে মারধর করেছে। আহত সূত্রধরকে প্রথমে হাইলাকান্দির এস কে রায় হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় । পরে পাঠানো শিলচর মেডিক্যাল কলেজে।

হাইলাকান্দি জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি গোবিন্দলাল চট্টোপাধ্যায়কেও কংগ্রেসিরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছে, লালার আপগ্রেটেড বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে বিবাদে গোবিন্দবাবুর চশমা ভেঙ্গে গেছে। অন্য দিকে লালার লক্ষ্মীনগরে বিজেপি সমর্থকদের হামলায় ইন্নুছ আলি নামের এক এআইইউডিএফ সমর্থক আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ইন্নুছ আলি এ ব্যাপারে তিন জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন।

হাইলাকান্দির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটকর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কমরুল ইসলাম-সহ চার জনকে পুলিশ আটক করেছে।

এ দিকে কাছাড় জেলার লক্ষ্মীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিন্নাকান্দিতে কংগ্রেস ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। বিজেপি নেতা বিনয় নন্দী এজাহার দিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ রাজু গোয়ালা, নির্মল গোয়ালা, রাধেশ্যাম গোয়ালা, গোবিন্দলাল গোয়ালারা তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করে। রাজু গোয়ালা পুলিশ কনস্টেবল। সেখানে তাঁর ডিউটি নয়। কিন্তু খাকি পোশাক পরে কংগ্রেসিদের সঙ্গে যোগ হয়ে তাঁকে পিটিয়েছে। পুলিশ পরে রাজু গোয়ালাকে থানায় তুলে আনে। তিনি অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। বিজেপি প্রার্থী থৈবা সিংহ থানায় অভিযুক্ত সবাইকে গ্রেফতারের দাবি জানান।

জেলাশাসক বিশ্বনাথন জানান, সব মিলিয়ে শান্তিতে ভোটপর্ব সম্পন্ন হয়। মহিলা পরিচালিত বুথগুলি ভাল ভাবে তাঁদের কর্তব্য সম্পাদন করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

state election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy