Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

দক্ষিণ-পূর্ব রেল সদর সরতে পারে, দাবি ঝাড়খণ্ডের

বৈঠকে উপস্থিত বাংলার একাধিক বিজেপি সাংসদ ওই দাবি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলেও এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি। তবে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমরা বিযয়টি দেখছি। কিছু সরছে না।’’ 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ফিরোজ ইসলাম ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ 
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:২৪
Share: Save:

ঝাড়খণ্ডে আসন্ন বিধানসভা ভোট বৈতরণী পার হতে ভেঙে টুকরো করা হতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে। এমনকি গার্ডেনরিচ থেকে সংস্থার সদর দফতর রাঁচীতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলেও খবর। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুই রাজ্যের সাংসদদের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকদের একটি বৈঠকে এমন দাবির কথা শুনিয়ে গিয়েছেন রাঁচীর বিজেপি সাংসদ সঞ্জয় শেঠ।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলার একাধিক বিজেপি সাংসদ ওই দাবি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলেও এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি। তবে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমরা বিযয়টি দেখছি। কিছু সরছে না।’’

প্রস্তাবের পক্ষে দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে রেল মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও ঝাড়খণ্ড সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ড সরকারের আগ্রহে প্রস্তাব কার্যকর হলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বর্তমান এলাকা থেকে বাদ পড়তে পারে রাঁচী এবং চক্রধরপুর ডিভিশন। আদ্রা ডিভিশনের একাংশ যেতে পারে প্রস্তাবিত নতুন জ়োনে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মোট ২৭১২ কিলোমিটার রেলপথের মাত্র ৬০৬ কিলোমিটার ঝাড়খণ্ডে। পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ১০৯৫ কিলোমিটার এবং ওড়িশায় রয়েছে ১০১০ কিলোমিটার। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯৫২ কোটি টাকা সেখানে যথাক্রমে ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯৮০ এবং ৫৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের বাজেটে অবশ্য এ রাজ্যের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১০৭১ কোটি টাকা এবং ঝাড়খণ্ডের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৯৪৭ কোটি টাকা। বাজেটের বরাদ্দে সে ভাবে বৈষম্য না ঘটলেও পৃথক জ়োনের দাবি কেন ?

রেল সূত্রে খবর, কয়লা এবং বিভিন্ন আকরিকের খনি ঝাড়খণ্ডে থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আয়ের বড় অংশ ওই রাজ্য থেকে আসে। ঝাড়খণ্ড এলাকার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেল ছাড়াও, পূর্ব রেল এবং উত্তর-মধ্য রেলের অংশ রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের অভিযোগ, রেল সংক্রান্ত কোনও আলোচনার প্রয়োজন হলে তাঁদের আলাদা করে তিনটি জ়োনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। ওই অসুবিধে দূর করতে নিজের রাজ্যে রেল জ়োন চান তাঁরা।

যদিও রেল সূত্রে খবর রাজ্যওয়াড়ি জ়োন তৈরির প্রস্তাবে সায় দিলে কার্যত সমস্যার ঝাঁপি খুলে যাওয়ার পরিস্থিতি হতে পারে। ওই প্রক্রিয়ায় নতুন দফতর তৈরির খরচ বাড়ার সঙ্গে রেলের প্রচুর অলাভজনক জ়োন তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল ভেঙে টুকরো করলে পড়ে থাকা অংশ বাণিজ্যিক ভাবে অলাভজনক হয়ে পড়বে। একই ভাবে উত্তর মধ্য রেল থেকে ধানবাদ বেরিয়ে গেলে তার অস্তিত্বও বিপন্ন হতে পারে।

রাজ্য থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতর সরানোর প্রস্তাব সম্পর্কে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম বলেন, ‘‘এ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই মন্তব্য করব না।’’ তবে ওই প্রস্তাব কার্যকর হলে এ রাজ্যের বিজেপি সাংসদের অস্বস্তি যে বাড়বে তা কেউই গোপন করেননি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy