—প্রতীকী ছবি।
গ্রাহকের অজান্তে তাঁর আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য (এ ক্ষেত্রে মূলত আঙুলের ছাপ) দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ বাড়ছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, মোবাইলে এসএমএস পেয়ে চুরির কথা জানতে পারছেন। ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করলে বলা হচ্ছে, তাঁর বায়োমেট্রিক তথ্যের ভিত্তিতেই সেই লেনদেন হয়েছে। যেটা তাঁরা আদৌ করেনইনি। কোথায় কী ভাবে সাধারণ মানুষের আঙুলের ছাপের মতো অতি ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে প্রতারণার জাল ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা বিস্তর। যা নতুন করে মোদী সরকারের ডিজিটাল এবং নগদহীন আর্থিক পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এই ব্যবস্থার মূল দুই কান্ডারি —আধার কর্তৃপক্ষ (ইউআইডিএআই) এবং ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশনের (এনপিসিআই) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের পরামর্শ, আধার গ্রাহকেরা তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য আপাতত ‘লক’ বা বন্ধ করে রাখুন।
স্টেট ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, তাঁদের গ্রাহকের এই অভিযোগ থাকলে দ্রুত পুলিশে এফআইআর করতে হবে। তার পরে আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট শাখায়। এমন সব অভিযোগ যাবে এসবিআইয়ের এই সংক্রান্ত প্রতারণা মোকাবিলার বিশেষ বিভাগে। তারা সেগুলি তা জানাবে এনপিসিআইকে। যে ব্যাঙ্কে প্রতারিত গ্রাহকের টাকা জমা পড়বে, তাদের কাছে সেই অভিযোগ পাঠাবে এনপিসিআই। তদন্তের পরে সেই ব্যাঙ্কটি ওই গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত দেবে।
লক কী ভাবে
• আধারের ওয়েবসাইট বা এমআধার মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে।
• ওটিপি-র মাধ্যমে পরিষেবা মিলবে। তাই দু’ক্ষেত্রেই আধারের সঙ্গে ফোন নম্বর যুক্ত থাকতে হবে।
• www.uidai.gov.in সাইটে গিয়ে ‘মাই আধার’ বিভাগে ‘আধার সার্ভিস’-এ ক্লিক করতে হবে।
• সেখানে লক/আনলক বায়োমেট্রিক্স-এ ক্লিক করলে লগ-ইন করার জন্য একটি নতুন পাতা খুলবে।
• সেখানে আধার নম্বর এবং আধারের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল ফোনে আসা ওটিপি দিয়ে পর পর নির্দেশ মতো এগোলে বায়োমেট্রিক তথ্য লক হয়ে যাবে।
• এমআধার থেকে লক করতে চাইলে, অ্যাপ খোলার পরে পর্দার উপরের মেনু থেকে বায়োমেট্রিক সেটিং-এ গিয়ে ‘এনেব্ল বায়োমেট্রিক লক’-এ টিক মারলে ফোনে ওটিপি আসবে।
• তা দিলে তথ্য লক করার জন্য সম্মতি চাওয়া হবে।
• সম্মতি দিলে তথ্য বন্ধ থাকবে যতক্ষণ না ফের তা খোলা (আনলক) হয়।
• দু’ক্ষেত্রেই প্রয়োজন মতো বায়োমেট্রিক তথ্য খুলতে বা আনলক করা যাবে।
সকলের কাছে সহজে আর্থিক পরিষেবা পৌঁছতেই আধার ভিত্তিক টাকা মেটানোর পরিষেবা (আধার এনেবলড পেমেন্ট সার্ভিস বা এইপিএস) চালু করে কেন্দ্র। এতে টাকা জমা-তোলা, এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যটিতে পাঠানো বা অ্যাকাউন্টে জমা টাকার খোঁজও করা যায়। মূল কাঠামো চালু করে এনপিসিআই। তার ভিত্তিতে পরিষেবা দেয় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, পেমেন্টস ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বহু গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রেও এটিও মেলে। এই ব্যবস্থা অনেকটাই কার্যকরী হয়েছিল কোভিডকালে।
অভিযোগ উঠেছে এমন পরিষেবা কোনও দিন নেননি এমন গ্রাহকদের টাকাও আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে তোলা হয়েছে। তা হলে কী ভাবে এই জাল ছড়াচ্ছে? এ নিয়ে সরাসরি কেউ মুখ খুলতে নারাজ। তবে ব্যাঙ্কিং-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, কোনও ভাবে সেই গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য, মূলত আঙুলের ছাপ নকল করে রাখছে প্রতারকেরা। বেশ কিছু অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই ভুয়ো লেনদেনের আগে প্রতারিত গ্রাহকদের কোথাও না কোথাও (সম্পত্তি নথিভুক্তিকরণের জন্য সরকারি দফতর বা মোবাইলের সিম নেওয়া) আধার তথ্য যাচাইয়ের জন্য বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হয়েছিল। ঠিক কোথায় সেই তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তাই সন্দেহ, যে যন্ত্র বা ব্যবস্থার মাধ্যমে এইপিএস চলে সেখানেই কি তা হলে ফাঁক থাকছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy