প্রতীকী ছবি।
‘ভূত’ এসে নাকি কানে কানে বলে গিয়েছে। তাই বছর তিনেকের মেয়ের দু’কানই কেটে ফেলল বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব দিল্লির শাহাদরা এলাকায়। অভিযুক্ত অমৃত বাহাদুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ক্ষতবিক্ষত শিশুটির চিকিৎসা চলছে দিল্লির গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে। কেটে যাওয়া কান দুটি সংরক্ষণ করে জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, অমৃত মানসিক বিকারগ্রস্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। জেরায় সে জানিয়েছে গতকাল রাত ২টো নাগাদ ভূত এসে তাকে নির্দেশ দেয় নিজের সৎ মেয়ে বীনাকে কাঁদাতে না পারলে শয়তান এসে তাকে নরকে নিয়ে যাবে। তাই এই কাজ করেছে সে। অমৃতের স্ত্রী ও প্রতিবেশীদের কথায়, সময়মতো পুলিশ এসে তাকে ধরে না ফেললে শিশুটির গলাই কেটে ফেলত অমৃত।
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে বিবস্ত্র করে, থেঁতলে খুন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক
বছর পঁয়ত্রিশের অমৃত বাহাদুর নেপালের বাসিন্দা। ২০০০ সালে দিল্লিতে এসে ভাইয়ের সঙ্গে সাফাইকর্মীর কাজ শুরু করে। বর্তমানে দিল্লির আরবান কাবাব রেস্তোরাঁয় কাজ করে অমৃত। তার পরিবার সূত্রে খবর, দু’মাস আগে আর এক মেয়ের মৃত্যুর পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে অমৃত। প্রায়ই ঘোরের মধ্যে চলে যায়। ভূতপ্রেত, শয়তানি শক্তি নিয়ে কথা বলা শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে, অমৃতের বক্তব্য তার এক মৌলবী বন্ধুর দেখাদেখি সেও ভূতেদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে। তাদের নির্দেশ মেনেই সব কাজ করেছে সে। প্রথমে শিশুটিকে কাঁদানোর জন্য তার গায়ে জল ঢেলে দেয় অমৃত। পরে তার এক কান কেটে ফেলে। শিশুটির কান্নার শব্দে পরিবারের বাকি লোকেদের ঘুম ভেঙে যায়। ততক্ষণে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটি গোঙাতে শুরু করেছে। স্বামীকে এই ভয়ানক কাজ করতে দেখে মেয়েকে বাঁচাতে ছুটে আসেন অমৃতের স্ত্রী। কিন্তু তাকে ও বাকী ছেলেমেয়েদের মারধর করে ছাদের ঘরে বন্ধ করে দেয় অমৃত। ফের নেমে এসে শিশুটির অন্য কানটিও কেটে ফেলে। চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দে ততক্ষণে প্রতিবেশীরা ছুটে এসেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশও। ডেপুটি পুলিশ সুপার (শাহাদরা) নূপুর প্রসাদের কথায়, ‘‘খবর পেয়ে আমরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছই, লোকটি শিশুটির গলা কাটার জন্য তৈরি হচ্ছিল।’’ খুনের চেষ্টার অভিযোগে অমৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy