Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মিছিলে কেন, জার্মানিতেই ফিরে যাও

পদার্থবিদ্যা বিভাগের ওই স্নাতকোত্তর ছাত্র ‘স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’-এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে এ দেশে এসেছিলেন।

প্রতিবাদ মিছিলে জেকব লিন্ডেনথাল। ছবি: রয়টার্স।

প্রতিবাদ মিছিলে জেকব লিন্ডেনথাল। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৪
Share: Save:

তাঁর ‘অপরাধ’, তিনি সহপাঠীদের সঙ্গে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন। আইআইটি মাদ্রাজে পড়তে আসা জার্মান ছাত্র জেকব লিন্ডেনথালকে তাই দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে বলে অভিযোগ।

পদার্থবিদ্যা বিভাগের ওই স্নাতকোত্তর ছাত্র ‘স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’-এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে এ দেশে এসেছিলেন। সম্প্রতি নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং দিল্লির ছাত্রদের উপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে আইআইটিগুলিতেও। জবাবে পাল্টা কড়াকড়ির পথে হাঁটছেন কর্তৃপক্ষ। কানপুর আইআইটি যেমন পড়ুয়াদের জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে বলে খবর। অভিযোগ, ফেরত পাঠানো হচ্ছে, মাদ্রাজ আইআইটি-র ছাত্র জেকবকেও।

গত সপ্তাহে জেকব একটি প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর হাতে ধরা একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘উর্দিধারী অপরাধীরা অন্য অপরাধীদেরই সমান’ (ইউনিফর্মড ক্রিমিনালস = ক্রিমিনালস)। আর একটি প্ল্যাকার্ড নাম না-করে হিটলারি আমলের জার্মানির কথা বুঝিয়ে বলেছিল, ‘‘১৯৩৩-১৯৪৫ আমরা এই অবস্থার মধ্যে ছিলাম।’’ সংবাদমাধ্যমের কাছে জেকব দাবি করেছেন, আইআইটি-কর্তৃপক্ষ এবং অভিবাসন দফতরের আধিকারিকরা সোমবার তাঁকে দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, তিনি তাঁর ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। জেকবের দাবি, প্রথমে তাঁর ভিসা নিয়ে কিছু প্রশাসনিক প্রশ্ন তোলা হয়। সেগুলোর সদুত্তর দেওয়ার পরে অভিবাসন দফতরের তরফে তাঁকে তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাস বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এবং শেষ পর্যন্ত জানানো হয়, তাঁকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমনিতে জেকবের আরও একটি সিমেস্টার বাকি রয়েছে। সেটা শেষ করে আগামী মে মাসে তাঁর দেশে ফেরার কথা ছিল।

মাদ্রাজ আইআইটি কর্তৃপক্ষ এখনও প্রকাশ্যে তাঁদের বক্তব্য জানাননি। জার্মান দূতাবাসও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে ভারতে জার্মান রাষ্ট্রদূত ওয়াল্টার জে লিন্ডনার আগের দিনই টুইটে ভারতের ধর্মীয় বৈচিত্রের কথা লিখেছিলেন।

জেকবকে নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবির এবং নাগরিক সমাজে। এক দল বলছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িয়ে পড়ার কথা নয় কোনও ভিন্‌দেশি পড়ুয়ার। অন্য একটি দল তুলছেন, বাক্‌স্বাধীনতার প্রশ্ন। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর যেমন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী আর পি নিঃশঙ্ককে ট্যাগ করে টুইটে বলেছেন, ‘‘কোনও গণতন্ত্রই মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে শাস্তি দিতে পারে না। অবিলম্বে এই বহিষ্কার তুলে নিন এবং শিক্ষার জগতে যাতে ভারত মাথা উঁচু করে থাকতে পারে, তার ব্যবস্থা করুন।’’ তথ্যচিত্র নির্মাতা আনন্দ পটবর্ধন মনে করাচ্ছেন, ১৯৭১ সালে তিনি ছাত্র হিসেবে আমেরিকায় ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছিলেন। কিন্তু বহিষ্কৃত হননি! অনেকে এও বলছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যদি আমেরিকায় গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়ে ভোট চাইতে পারেন, তা হলে ভিন্‌দেশি ছাত্র ভারতে এসে প্রতিবাদে শামিল হতে পারবেন না কেন?

অন্য বিষয়গুলি:

Citizenship Amendment Act CAA NRC Jakob Lindenthal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy