Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Gauhati High Court

হাই কোর্টের তোপ ফরেনার্স ট্রাইবুনালকে

বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহ এবং বিচারপতি ননী তাগিয়া জানান, বিদেশি বলে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সময়ে অনেক বেশি নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন৷

গৌহাটি হাই কোর্ট।

গৌহাটি হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৪০
Share: Save:

ফরেনার্স ট্রাইবুনালে বারবার বিদেশি ঘোষিত অঞ্জনা বিশ্বাস (ওরফে অঞ্জনা সরকার)-কে গৌহাটি হাই কোর্ট ভারতীয় বলে রায় দিয়েছে। সেই সঙ্গে ট্রাইবুনাল-সহ নিম্ন আদালতগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, এক জনের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া সহজ ব্যাপার নয়। নাগরিকত্ব একটি মানুষের অধিকার। তা থেকে বঞ্চিত হলে তাঁর কাছে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।

প্রথমে ২০১৩ সালের ২২ অগস্ট মরিগাঁও ফরেনার্স ট্রাইবুনাল অঞ্জনাকে বিদেশি বলে রায় দেয়। তিনি তখন হাই কোর্টে রিট পিটিশন করে জানান, তাঁর বক্তব্য না শুনেই ট্রাইবুনাল এই রায় দিয়েছে। হাই কোর্ট তাঁর বক্তব্য শোনার জন্য মামলাটি ট্রাইবুনালে ফেরত পাঠায়। তাঁর বক্তব্য শুনেও ট্রাইবুনাল নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। ২০১৮ সালের সালের ২৮ নভেম্বর পুরনো রায় বহাল থাকার কথা জানিয়ে দেন ট্রাইবুনালের সদস্য। ফের অঞ্জনা হাই কোর্টে রিট পিটিশন করেন। উচ্চ আদালত তাঁর বাবার সাক্ষ্য নিতে মামলাটি দ্বিতীয় বার ট্রাইবুনালে পাঠায়। সদস্য-বিচারক সাক্ষ্য নিয়েও গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রায় জানান, অনিল বিশ্বাসের কন্যাই যে অঞ্জনা, তা প্রমাণ করতে পারেননি তাঁরা। তাই তিনি বিদেশিই। তৃতীয় বার হাই কোর্টে মামলাটি নিয়ে হাজির হন তাঁর আইনজীবী ডি ঘোষ। তিনি জানান, সদস্য বিচারক যেন তাঁর মক্কেলকে বিদেশি সাজানোর পণ করেছেন। বিভিন্ন নথি তুলে ধরে তিনি আদালতকে জানান, অঞ্জনার জন্ম ১৯৭৯ সালের ২ নভেম্বর, পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায়। পড়াশোনা সেখানকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পঞ্চম শ্রেণিতে উঠে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। সেই স্কুল সার্টিফিকেট তাঁর হাতে রয়েছে। তাঁর বাবা অনিল বিশ্বাস ১৯৬৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নদিয়া জেলার বাড়িটি কেনেন। সব নথিই ট্রাইবুনালে পেশ করা হয়েছিল। ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় অনিল বিশ্বাসের নাম ছিল। কিন্তু বন্যার দরুন নথি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসার সেই নথি দিতে পারেননি। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনিলবাবুর নামে সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র ইস্যু করেছে। দিয়েছে বিপিএল কার্ডও।

২০০১ সালে মরিগাঁও জেলার খন্ডজানের রতন সরকারের সঙ্গে অঞ্জনার বিয়ে হয়। এর দরুন তিনি বিশ্বাস পদবি বদলে সরকার লিখেন। নদিয়া জেলার ভীমপুর পঞ্চায়েতের প্রধান পিতা-কন্যার পরিচয় জ্ঞাপক সার্টিফিকেট দিয়েছেন৷ এর পরেও ট্রাইবুনালের সদস্য-বিচারকের সন্দেহ দূর হয়নি বলে আক্ষেপ করেন আইনজীবী ঘোষ৷ এত সবের পরও যদি আদালতের পিতা-পুত্রীর সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়, তাঁর মক্কেল ডিএনএ টেস্টের জন্য তৈরি রয়েছেন৷ হাই কোর্ট অবশ্য এ ধরনের বিধান নেই বলে জানিয়ে অঞ্জনাকে ভারতীয় বলেই রায় দিয়েছে৷ বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহ এবং বিচারপতি ননী তাগিয়া জানান, বিদেশি বলে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সময়ে অনেক বেশি নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন৷

অন্য বিষয়গুলি:

Gauhati High Court Foreigners Tribunal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE