Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Manipur Violence

মণিপুরে আবার সংঘর্ষ, নিহত মহিলা কনস্টেবল

মায়ানমারে সেনা ও জনতার সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় পালিয়ে সীমান্ত পার করে চান্ডেল জেলায় ঢুকে পড়েছেন সে দেশের ৩০১ জন শিশু-সহ ৭১৮ জন শরণার্থী।

Manipur Violence

নতুন করে অশান্তি ছড়াল মায়ানমার সীমান্তের মোরে শহরে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ০৭:২১
Share: Save:

ফের অশান্ত মণিপুর। বুধবার সকালে নতুন করে অশান্তি ছড়াল মায়ানমার সীমান্তের মোরে শহরে। কুকিরা প্রথমে হামলা চালায় মেইতেই গ্রামে। পরে পুলিশ ও হামলাকারীদের সংঘর্ষে এক মহিলাকনস্টেবলের মৃত্যু হয়।

মায়ানমারে সেনা ও জনতার সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় পালিয়ে সীমান্ত পার করে চান্ডেল জেলায় ঢুকে পড়েছেন সে দেশের ৩০১ জন শিশু-সহ ৭১৮ জন শরণার্থী। সীমান্ত প্রহরার দায়িত্বে থাকা আসাম রাইফেলসের কাছে বর্তমান পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের ঢুকতে দেওয়ায় জবাবদিহি চেয়েছেন মুখ্যসচিব। নির্দেশ দেওয়াহয়েছে, অবিলম্বে ৭১৮ জনকেই ফেরাতে হবে মায়ানমারে। জেলার এসপি-কে বলা হয়েছেসবার ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হোক। অতীতেও মেইতেইরা বহিরাগত ও কুকিদের সাহায্য করার বারবার কাঠগড়ায় তুলেছে আসাম রাইফেলসকে।

এরই মধ্যে বুধবার সকালে সীমান্তের কাছেই কুকি সংগঠনের ৫টি দল স্থানীয় গ্রামগুলিতে হানা দিয়ে আগুন লাগায়। অন্তত ৩০টি বাড়ি পোড়ে। অবশ্য আগুনে হতাহতের খবর নেই। এর পরেই কুকিদের সঙ্গে প্রথমে মেইতেইগ্রামরক্ষীদের লড়াই শুরু হয়। যোগ দেয় রাজ্য পুলিশও। পুলিশের দাবি, হামলাকারীদের সঙ্গে মিশে ছিল কুকি জঙ্গিরাও। সংঘর্ষে এক মহিলা কনস্টেবল নিহত হন। পরে আসাম রাইফেলস, বিএসএফও সংঘর্ষে যোগ দেয়। একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় চলা গুলির লড়াইয়ে কুকি জঙ্গিদের পাশাপাশি মায়ানমারের দিকথেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিডিএফও যোগ দেয় বলে দাবি করা হচ্ছে। কাংপোকপিতেও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষহয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও বিষ্ণুপুর-চূড়াচাঁদপুর সীমানা এলাকায় গুলিতে আহত হন দুই কৃষক। গত কাল মণিপুরের কুকিদের জন্য পৃথক প্রশাসনের দাবিতে মিছিল হয় মিজ়োরামে। তাতে হাজির ছিলেন মিজ়ো মুখ্যমন্ত্রী জ়োরামথাঙ্গাও। আজ ইম্ফলে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বলেন, ‘‘জ়োরামথাঙ্গার অন্য রাজ্যের বিষয়ে মাথা ঘামানো উচিত নয়।’’ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে মণিপুরের সংঘর্ষ সম্পর্কে গৃহীত প্রস্তাবেরও কড়া সমালোচনা করেন বীরেন।

এ দিকে মণিপুরে কুকি বনাম মেইতেইদের সংঘর্ষের পিছনে সরকারের পপি খেত ধ্বংস ও পাহাড়-জঙ্গলের জমি পুনরুদ্ধারের যে কারণ দেখানো হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে নতুন তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যে। কুকিদের একাংশের দাবি, লড়াইয়ের গোপন কারণ হল পপি বনাম পাম চাষের যুদ্ধ। কেন্দ্র মণিপুরে ৬টি জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমি পাম তেল উৎপাদনের জন্য চিহ্নিত করেছে। অভিযোগ, ওই জমি রাজ্য সরকার বিজেপি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছে। তাই জোর করে জনজাতি এলাকায় থাকা জমি খালি করতে চাইছে। বিষয়টি নিয়ে জটিলতা বাড়িয়েছে রাজ্য সরকারের দু’রকম বয়ান। রাজ্যের তথ্য কমিশনার ওইনাম সুনীল দাবি সরাসরি উড়িয়ে বলেন, ‘‘সব ভিত্তিহীন। কোনও গোষ্ঠীই চুক্তি করতে আসেনি।’’ কিন্তু ঘটনাক্রমে এ দিনই গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্বের পাম চাষ সংক্রান্ত আলোচনা সভায় হাজির হন রাজ্যের কৃষি বিভাগের অধিকর্তা এন গজেন্দ্র ও রাজ্য অয়েল পাম মিশনের উপদেষ্টা এম এস খাইদেম। তাঁদের সামনে রেখেই গোদরেজ সংস্থার কর্তারা জানান, গত বছরেই রাজ্যের ৭টি জেলায় পাম বীজ চাষের জন্য সরকারের সঙ্গে তাঁদের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, কুকি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর পাম চাষের আওতায় পড়ছে। কিন্তু উখরুল নাগা এলাকা ও বাকিগুলি মেইতেই অধ্যুষিত।

অন্য বিষয়গুলি:

Manipur Violence Death Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy