প্রয়াত হলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল ফাইল চিত্র।
পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিরোমণি অকালি দলের নেতা প্রকাশ সিংহ বাদল প্রয়াত হলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে এক সপ্তাহ আগে মোহালির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত ৮টায় সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পঞ্জাবের চার বারের মুখ্যমন্ত্রী বাদলের রাজনীতিতে বাদলের পরিচিতি ছিল, আমজনতার ক্ষোভের চরিত্র বোঝার দক্ষতার জন্য। তারই শেষ নজির দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে। যখন নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের বিরোধিতায় বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছিল অকালি দল। বাদলের পুত্রবধূ হরসিমরত কউর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সে সময় প্রকাশ্যে বাদল জানিয়েছিলেন, কৃষককুলকে চটিয়ে পঞ্জাবে রাজনীতি করা মুশকিল।
শেষ পর্যন্ত মোদী সরকার আইন প্রত্যাহার করলেও এনডিএতে ফেরেনি বাদলের দল। যদিও গত কয়েক বছর ধরে বয়সের কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে কিছুটা দূরেই ছিলেন তিনি। অকালি দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন ছেলে সুখবীরের হাতে। চার দফার মুখ্যমন্ত্রিত্বে অবশ্য বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছেন বাদল। পঞ্জাবের আইনশৃঙ্খলা এবং মাদকের চোরাকারবার নিয়ে বার বার তাঁকে দুষেছে বিরোধীরা। তাঁর জামাই তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিক্রমজিৎ সিংহ মজেথিয়ার বিরুদ্ধে মাদকের কারবারের মামলা রুজু হয়েছে। জেলেও যেতে হয়েছে।
১৯২৭ সালে পঞ্জাবের মুক্তসর জেলায় বাদলের জন্ম। পড়াশোনা ব্রিটিশ জমানার অবিভক্ত পঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে। ১৯৪৭ সালে গ্রামপ্রধান নির্বাচিত হয়ে তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৫৭ সালে শিরোমণি অকালি দলের টিকিটে প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে জয়। ১৯৬৮ সালে বাদল প্রথম মন্ত্রী হয়েছিলেন। পরের বছরেই হন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্জাবের চার বারের মুখ্যমন্ত্রী বাদল ১৯৭৭ সালে প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধানী ভারতের প্রথম অকংগ্রেস সরকারেরও মন্ত্রী ছিলেন।
একের পর এক ভাঙনে ছিন্নভিন্ন অকালি দলকে বাদলই নতুন করে সংগঠিত করেন। আশির দশকে খলিস্তানি জঙ্গিদের হামলায় অকালি নেতা হরচন্দ সিংহ লঙ্গোয়াল নিহত হওয়ার পরে পঞ্জাবের রাজনীতিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল তা পূরণ করেছিলেন তিনি। যদিও গুরচরম সিংহ তোহরা, সুরজিৎ সিংহ বার্নালার, সিমরনজিৎ সিংহ মানের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী অকালি নেতারা বারে বারেই বাদলের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র কায়েম করার অভিযোগ তুলেছেন। ভাইপো মনপ্রীত বাদলও একই অভিযোগ তুলে দল ছেড়েছেন। কিন্তু অকালি রাজনীতির মূল স্রোত হিসাবে বারে বারেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। বাদলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy