Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Maoist Link

সাইবাবাকে থাকতে হবে জেলেই! শিন্ডে সরকারের আর্জি মেনে মুক্তির নির্দেশে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

৮ ডিসেম্বর বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চে মামলার পরবর্তী শুনানি। তত দিন জেলবন্দি থাকতে হবে প্রতিবন্ধী সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের।

পাঁচ বছর কাটিয়েও মাওবাদী-যোগের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন না প্রাক্তন অধ্যাপক সাইবাবা।

পাঁচ বছর কাটিয়েও মাওবাদী-যোগের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন না প্রাক্তন অধ্যাপক সাইবাবা। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ১৪:০৫
Share: Save:

মহারাষ্ট্র সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে মাওবাদী সংস্রবের অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যাপক জি এন সাইবাবাকে জেলবন্দি রাখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার জরুরি ভিত্তিতে শুনানির পরে বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এ বিষয়ে বম্বে হাই কোর্টের শুক্রবারের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।

৮ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। তত দিন পর্যন্ত নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি থাকতে হবে প্রতিবন্ধী সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের। প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থ সাইবাবাকে গৃহবন্দি রাখার জন্য তাঁর আইনজীবীদের তরফে আবেদন জানানো হলেও মহারাষ্ট্র সরকারের আপত্তি মেনে নিয়ে তা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

শুক্রবার নাগপুর বেঞ্চের রায় ঘোষণার পরেই নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ সাইবাবা এবং তাঁর সহ-অভিযুক্ত চার জনের মুক্তির নির্দেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায় মহারাষ্ট্রের বিজেপি-শিন্ডেসেনা সরকার। আবেদন গ্রহণ করে শনিবার বেলা ১১টায় জরুরি ভিত্তিতে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত। তাঁকে। বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি রোহিত দেও এবং অনিত পানসরের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের সাজার নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে জানিয়েছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে মাওবাদী সংস্রবের কোনও আদালতগ্রাহ্য তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি মহারাষ্ট্র পুলিশ। পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়া চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল নাগপুর বেঞ্চ।

কিন্তু শনিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁদের মুক্তির সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইবাবা এখন শারীরিক ভাবে চলচ্ছক্তিহীন। হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে হয় তাঁকে। তাই সাইবাবাকে জেলবন্দি রাখার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের এই তৎপরতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

মাওবাদীদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রয়েছে অভিযোগে ২০১৪ সালে দিল্লির অধ্যাপক সাইবাবাকে গ্রেফতার করেছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। এর পর নিম্ন আদালত দিয়েছিল যাবজ্জীবন জেলের সাজা। শুক্রবার বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ মাওবাদী সংস্ বের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় তাঁকে। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে ২০১৭ সালে দেওয়া নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতের ওই রায়কেই ২০১৭ সালে হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন প্রতিবন্ধী সাইবাবা।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) পড়ুয়া হেম মিশ্র এবং সাংবাদিক প্রশান্ত রাহিকে ২০১৩ সালে মাওবাদী যোগের অভিযোগে মহারাষ্ট্র পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। সেই সূত্র ধরেই পরের বছর দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রামলাল আনন্দ কলেজের অধ্যাপক সাইবাবাকে।

পুলিশের অভিযোগ ছিল, দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় ভাবে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত সাইবাবা। ২০১২ সালে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশে নিষিদ্ধ একটি মাওবাদী সংগঠনের সম্মেলনেও নাকি অংশ নিয়েছিলেন তিনি! শারীরিক অক্ষমতার কারণে জামিন পেয়ে গেলেও ২০১৭-য় নিম্ন আদালত ইউএপিএ (বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন) আইনে সাজা ঘোষণার পরে জেলে যেতে হয়েছিল প্রতিবন্ধী ওই অধ্যাপককে। মহারাষ্ট্রের সরকারের তৎপরতায় দীর্ঘতর হতে চলেছে সেই বন্দিদশা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE