তাঁর আমলেই ইডি সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে ইডি-র দফতরে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে ডি কে শিবকুমার, মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লা, হেমন্ত সোরেনদের বিরুদ্ধে ইডি-র পদক্ষেপও শুরু সঞ্জয় মিশ্রের আমলে। ইডি-র সেই প্রাক্তন ডিরেক্টর সঞ্জয় মিশ্রকে এ বার প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হল। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁকে পরিষদের পূর্ণ সময়ের সদস্য হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সাধারণত নামজাদা অর্থনীতিবিদ বা বিশেষজ্ঞদেরই প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়। সেখানে কেন ইডি-র প্রাক্তন ডিরেক্টর, ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসের অফিসারকে আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী জমানায় সঞ্জয় মিশ্রের নেতৃত্বে ইডিকে বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে মাঠে নামনো হয়েছিল। তার বিনিময়েই অবসরের পরে মিশ্রকে নতুন পদে বসানো হল। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কটাক্ষ, ‘‘প্রয়াত অরুণ জেটলি বলেছিলেন, বিচারপতিদের ক্ষেত্রে অবসরের পরে পদের লোভ অবসরের আগের রায়কে প্রভাবিত করে। ইডি-র প্রাক্তন ডিরেক্টরের ক্ষেত্রেও সে কথা সত্যি।’’
বিবেক দেবরায়ের প্রয়াণের পরে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন বেরি। যিনি নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ। অর্থনীতিবিদ সঞ্জীব স্যান্যাল ও শমিকা রবি বাকি দুই পূর্ণ সময়ের সদস্য। এ ছাড়া আংশিক সময়ের সদস্য হিসেবে রাকেশ মোহন, সাজ্জিদ চিনয়, নীলকণ্ঠ মিশ্র, নীলেশ শাহ, টি টি রাম মোহন ও পুনম গুপ্ত রয়েছেন। যাঁরা সকলেই অর্থনীতিবিদ বা বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ। সঞ্জয় মিশ্র তাঁদের সঙ্গেই পরিষদে যোগ দেবেন।
মোদী সরকারের আমলে ২০১৮-তে সঞ্জয় মিশ্রকে ইডি-র ডিরেক্টর পদে দু’বছরের জন্য নিয়োগ করা হয়। তার পরেও বারবার মেয়াদ বাড়িয়ে তাঁকে ২০২৪ পর্যন্ত এই পদে রেখে দেওয়া হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে মোদী সরকার আর মেয়াদ বাড়াতে পারেনি। ২০২৪-এর সেপ্টেম্বরে ইডি-র শীর্ষপদ থেকে অবসর নেন সঞ্জয় মিশ্র।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)