Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
India Bangladesh Meeting

সংখ্যালঘু পীড়ন, মিস্রীর দৌত্যে ঢাকা ইতিবাচক

রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের ১০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সংখ্যালঘুদের এমন সাতটি উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, যাদের সঙ্গে ইসকনের কোনও যোগ নেই।

বিক্রম মিস্রী।

বিক্রম মিস্রী। —ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৫০
Share: Save:

মতৈক্য হয়নি অনেক ক্ষেত্রেই। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকের পরে মোটের উপর খুশি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে নয়াদিল্লি তার সর্বোচ্চ উদ্বেগ জানিয়েছে, তার জবাব দিয়েছে ঢাকা। সেই সঙ্গে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর সফরের পরেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলায় ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ঘোষণাও করেছে ইউনূস প্রশাসন। অন্য দিকে, ঢাকার তরফ থেকেও বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে বসবাস এবং সেখান থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আক্রমণ করে দেওয়া একের পর এক বিবৃতির নিন্দা করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তার জবাবে নয়াদিল্লির বক্তব্য, ভারত চিরকালই ‘অতিথিদেবো ভব’ নীতি মেনে চলে। কেউ চাইলে তাকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের ঐতিহ্য। তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার উদাহরণ দিয়েছেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। বলেছেন, শেখ হাসিনাও ভারতের আশ্রয় চেয়েছিলেন, তাঁকে সেটা দেওয়া হয়েছে। হাসিনা যে সব বিবৃতি দিচ্ছেন, তার সঙ্গে ভারতের কোনও সংযোগ নেই বলেবিদেশসচিব জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আলোচনায় ভারত সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সেই দেশের হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুর উপরে নেমে আসা আতঙ্কের দিকটি নিয়ে। এ ব্যাপারে ভারতের কাছে গতএক মাসে নিয়মিত রিপোর্ট এসেছে। সেই সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই নয়াদিল্লি তার উদ্বেগ অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছে বলে খবর।

রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের ১০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সংখ্যালঘুদের এমন সাতটি উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, যাদের সঙ্গে ইসকনের কোনও যোগ নেই। ১০ নভেম্বর পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় মন্দিরে ভাঙচুর হয়। ১৪ তারিখ ময়মনসিংহে মহেশপুর গ্রামে কালীমূর্তি ভাঙচুর করে এক সশস্ত্র মৌলবাদী। কিন্তু স্থানীয় হিন্দুরা তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দিতে পেরেছে। পাশাপাশি ২৪ নভেম্বর কুষ্টিয়ার উত্তর মাগুরা অঞ্চল, ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাজারি গলি, ওই একই দিনে চট্টগ্রামেরই ফিরিঙ্গি বাজার, মেথরপট্টি, ব্রিকফিল্ড রোডে দুষ্কৃতীরা ঢুকে ধর্মস্থানে ভাঙচুর করে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত দু’সপ্তাহে এই সব জায়গাতেই পুলিশি নিরাপত্তাবাড়ানো হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এই একই সময়সীমায় পাঁচ জন হিন্দু ধর্মগুরুকে (আদিনাথ প্রভু, রঙ্গনাথ দাস, মহারাজ স্বরূপ দাস, রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাস, রুদ্রপতি কেশব দাস) হয় আটক, নয়তো গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে আদিনাথ প্রভু এবং রঙ্গনাথ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছিল জেলে চিন্ময়কৃষ্ণকে প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার ‘অপরাধে’।

সাউথ ব্লকের বক্তব্য, এমন নয় যে আওয়ামী লীগের আমলে সংখ্যালঘুদের উপরে একেবারেই অত্যাচার হয়নি। নয়াদিল্লি মনে করে, বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই কট্টরপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীকে তাদের ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসাবে ব্যবহার করে এসেছে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই সংখ্যাগরিষ্ঠের দাবিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ১.৩ কোটি হিন্দুর বিরুদ্ধে হিংসার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে তাঁদের অপমান করা, আটক করে হেনস্থা করা, ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। হাসিনা সরকার পতনের প্রথম পনেরো দিনের মধ্যে ২০১০টি লুটপাট, হিংসা, অপহরণ, শারীরিক নিগ্রহ, গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে আগেই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

অন্য বিষয়গুলি:

Vikram Misri dhaka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy