উত্তর -পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি পিআইবির সৌজন্যে।
সকালে নীতি আয়োগের বৈঠকের মতোই, আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকা উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকও বয়কট করলেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
রাষ্ট্রপতির দেওয়া ইফতার পার্টিকে এড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন সন্ধ্যায় উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে উন্নয়ন পরিকাঠামো আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু জমি বিল নিয়ে বিরোধের জেরে, সকালে নীতি আয়োগের বৈঠকে যেমন যাননি অসম, মিজোরাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা, তেমনই সন্ধ্যার বৈঠকেও হাজির ছিলেন না তাঁরা। তবে মিজোরামের অর্থমন্ত্রী বৈঠকে ছিলেন। ছিলেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগড়িয়া।
কার্যত উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধেই এই বৈঠকের আয়োজন। গত মাসে উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের তরফে দূত হিসেবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন। সেখানেই তিনি অনুযোগ করেন: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি সব কিছুই করছেন। অথচ সিকিম-সহ উত্তর-পূর্বের আট মুখ্যমন্ত্রী আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইছেন, আপনি সময় দিচ্ছেন না। আমরা সবাই আপনার সঙ্গে এক সঙ্গে বৈঠক করতে চাই। তখনই মোদী মানিকবাবুকে জানান, খুব শীঘ্রই তিনি এই বৈঠক ডাকবেন। আজ নীতি আয়োগের বৈঠকের প্রেক্ষিতে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা দিল্লিতে থাকবেন ধরে নিয়েই সন্ধ্যায় মোদী উত্তর-পূর্বের আট মুখ্যমন্ত্রীকে বৈঠকে ডাকেন। কিন্তু সনিয়া গাঁধীর ডাকে দিল্লিতে হাজির হলেও কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীরা নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করেন। বয়কট করেন সন্ধ্যার বৈঠকটিও।
তবে আজকের বৈঠকে মোদী জানিয়ে দেন, উত্তর-পূর্বে দ্রুততার সঙ্গে উন্নয়নের কাজ করতে কেন্দ্র বদ্ধপরিকর। নীতি আয়োগের তরফে উত্তর-পূর্বে উন্নয়ন পরিকাঠামো রূপায়ণ নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশনও এই বৈঠকে দেখানো হয়। কেন্দ্র জানায়, উত্তর-পূর্বে স্পেশ্যাল অ্যাকসেলারেটেড সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে ট্রান্স-অরুণাচল হাইওয়ে গড়া ও সব জেলা সদরকে দুই লেনের সড়কে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে কেন্দ্রের। জেলা সদরগুলিকে জুড়তে প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার সড়ক তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া, নতুন রেলপথের জন্য কেন্দ্র ৫৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পাশাপাশি, অ্যাক্ট ইস্ট নীতির সফল রূপায়ণের জন্য উত্তর-পূর্বে বিমান যোগাযোগ, জলপথ যোগাযোগ, ইন্টারনেট যোগাযোগ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক, জাহাজ মন্ত্রক, বিদ্যুৎ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রককেও উত্তর-পূর্বে বিনিয়োগ বাড়াতে বলা হবে।
মোদী জানান, নীতি আয়োগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন প্রকল্প ও পরিকাঠামো বিকাশের যে কাজগুলি চলছে তার রূপায়ণ ও মূল্যায়নের ভার থাকবে রাজ্যের মুখ্যসচিবদের নিয়ে গড়া ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’র উপরে। এই কমিটি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের গতি-প্রকৃতি তদারক করে উদ্ভুত বাধা ও সমস্যাগুলি দূর করার ব্যবস্থা নেবে। লক্ষ্য রাখবে, যাতে প্রকল্পের
কাজ সময় মতো শেষ হয় ও খরচ বেড়ে না যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy