রাহুল এবং অপ্সরা রেড্ডি। ফাইল চিত্র
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর মন্তব্যে নারীবিদ্বেষের সুর শোনা গিয়েছে কি না, তা নিয়ে অভিযোগ-বিতর্ক আছে বিস্তর। তবে রাহুলের আন্তরিকতা বা লিঙ্গসাম্যের লড়াইয়ের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই অপ্সরা রেড্ডির।
ট্রান্সউওম্যান তথা রূপান্তরিত নারী অপ্সরাকে মহিলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদিকা করা হয়েছে। চেন্নাইয়ের মেয়ে অপ্সরা বৃহস্পতিবার ফোনে বললেন, ‘‘দেশের সব থেকে পুরনো ও বড় রাজনৈতিক দলের এমন সিদ্ধান্ত এ দেশে লিঙ্গসাম্যের লড়াইকে একশো কদম এগিয়ে দিল।’’ রাহুলের সঙ্গে কী কথা হল? ‘‘উনি (রাহুল) অনেক ক্ষণ ধরে আমার সঙ্গে কথা বলেন। নানা কথা খুঁটিয়ে জানতে চান। রাহুলজির মতো কেউ দেশের নেতৃত্বে এলে সংস্কারের পুরু দেওয়াল ভাঙবে বলে মনে করি,’’ বললেন অপ্সরা।
এ দেশের রাজনীতিতে রূপান্তরিত বা রূপান্তরকামী তথা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। সেখানে মূল স্রোতের একটি রাজনৈতিক দলের জাতীয় স্তরের নেতৃত্বে এমন উঠে আসা দুর্লভ। এ বার কি ভোট-যুদ্ধে নামছেন? অপ্সরা হেসে বললেন, ‘‘আমি ভোটে ল়ড়ব কি না, সেটা তো ঠিক করবে দল। তবে জনমোহিনী রাজনীতির দেশে তৃতীয় লিঙ্গভুক্ত মানুষের মর্যাদার লড়াইটা জেতা জরুরি।’’
চেন্নাইয়ে জন্মালেও অপ্সরার পরিবার আদতে অন্ধ্রের নেল্লোরের। সাংবাদিকতা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় স্নাতক হন তিনি। ছোটবেলায় ‘অজয়’ ছিলেন অপ্সরা। জানালেন, বাবা নয়, একা মায়ের সাহচর্যেই লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে ভিতরের টানাপ়ড়েন কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন তিনি। নারী হওয়ার তাগিদে বছর পাঁচেক আগে ব্যাঙ্ককে সাড়ে আট ঘণ্টার লিঙ্গান্তর অস্ত্রোপচারের কষ্ট সহ্য করেন অপ্সরা। দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন কাগজে সাংবাদিকতা-সম্পাদনায় অভিজ্ঞ অপ্সরার রাজনীতির ময়দানে নামার মূলে আছে তামিলনাডুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার প্রেরণা। জয়ললিতার মৃত্যুর পরে একদা নারী দিবসের অনুষ্ঠানের সূত্রে বিজেপির কাছাকাছি গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কারা সস্তা রাজনীতির জন্য রূপান্তরকামী মুখ খুঁজছে, এটা এখন বেশ বুঝতে পারি।’’ পাঁচ মাস আগে কলকাতায় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেবের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রেই কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এই রূপান্তরিত নারী।
বহুল আলোচিত ট্রান্সজেন্ডার সুরক্ষা বিল থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে নিজের মতো ভাবেন অপ্সরা। তাঁর মতে, ‘‘প্রত্যেকেরই লড়াই আলাদা! একটি মানুষের পরিচয় শরীরে লিঙ্গান্তর-অস্ত্রোপচারের ছুরির দাগের উপরে নির্ভর করে না। গভীর ভাবে দেখতে হবে লিঙ্গ-পরিচয়কে।’’ দেশে ৩৭৭ ধারা অপরাধের তকমামুক্ত হলেও অপ্সরা মনে করেন, সরকারি অফিসে, পাসপোর্ট বা আধার কার্ড করানোর সময় তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের বিষয়টা আরও সংবেদনশীল ভাবে দেখা উচিত। ‘‘মানুষকে মানুষ ভাবাটা আগে দরকার,’’ বলছেন অপ্সরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy