Feni: This family in Goa keeping a 500 year old tradition alive dgtl
Goa
Feni: ৫০০ বছর ধরে কাজুর মদ বানিয়ে বংশের পরম্পরা রক্ষা করে চলেছে গোয়ার এই পরিবার
৫০০ বছর ধরে কাজু ফেনি বানানোর পরম্পরা বয়ে চলেছে গোয়ার ওই পরিবারটি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২১ ১৪:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
গোয়া মানে নীল সমু্দ্র, দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্রসৈকত। গোয়া মানে সমুদ্রের মাঝে ক্রুজ-এ ভেসে যাওয়া, রাতপার্টি, নানা ধরনের সি-ফুড আরও কত কী!
০২১৬
কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই তালিকায় আরও একটি নাম জুড়ে রয়েছে। ফেনি। এক ধরনের অ্যালকোহল মিশ্রিত পানীয়। যা গোয়ার বাসিন্দাদের রোজকার জীবনের সঙ্গেও ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। পর্যটকদের কাছেও অন্যতম আকর্ষণ এটি।
০৩১৬
দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকেরা এই পানীয়ের সন্ধানে ছুটে আসেন গোয়ায়। ভারতের গোয়াই হল একমাত্র জায়গা যেখানে ফেনি পাওয়া যায়।
০৪১৬
৫০০ বছর ধরে গোয়ার এক পরিবার এই পানীয় বানিয়ে চলেছে।
০৫১৬
সংস্কৃত শব্দ ‘ফেনা’ থেকে ‘ফেনি’ শব্দটি এসেছে। ফেনার অনুসঙ্গ এসেছে, কারণ পানীয় গ্লাসে ঢালার সময়, বা পানীয় ভরা বোতলের মুখ খোলার সময় ঝাঁকুনিতে ফেনা হয়।
০৬১৬
মূলত ২ ধরনের ফেনি রয়েছে। কাজু ফেনি এবং তাল ফেনি। কাজু ফেনি সবচেয়ে জনপ্রিয়।
০৭১৬
৫০০ বছর ধরে কাজু ফেনি বানানোর পরম্পরা বয়ে চলেছে গোয়ার ওই পরিবারটি। প্রতিদিন সকালে গাছ থেকে ঝরে পড়া পাকা কাজু ফল সংগ্রহ থেকে তা ফেনিতে রূপান্তর—এখনও সেই পুরনো পদ্ধতিতেই করে পরিবারের লোকজন।
০৮১৬
৭২ বছরের ইনাসিয়া ফার্নান্ডেজ এবং ৭৪ বছরের লুইস ফার্নান্ডেজ উত্তর গোয়ার পারনেম তালুকার হারমোলে থাকেন। গত তিন পুরুষ ধরে এই ব্যবসা সামলাচ্ছেন তাঁরা।
০৯১৬
রোজ সকাল হলেই একটি ঝোড়া নিয়ে কাজু বাগানে চলে যান তাঁরা। মাটিতে পড়ে থাকা পাকা কাজু ফল সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন। তারপর ফলের মুখে লেগে থাকা বীজ (বাদাম) ছাড়িয়ে অন্য পাত্রে সংগ্রহ করে নেন। পরে সেই বাদামগুলিকে বিক্রি করে দেন। এবার ফলগুলিকে পিষে তার রস বার করে এক পাত্রে জমা করেন।
১০১৬
ফলের এই পেষণ প্রক্রিয়ার জন্য কোনও আধুনিক যন্ত্র নেই তাঁদের কাছে। নামমাত্র উপার্জনে আধুনিক যন্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। তা সত্ত্বেও বংশের পরম্পরা বজায় রেখে চলেছেন তাঁরা।
১১১৬
মূলত পুরনো পদ্ধতি অনুসরণ করে পা দিয়েই কাজুর রস বার করেন তাঁরা। প্রথমে একটি বড় পাত্রে কাজুগুলিকে রাখেন। তারপর পা দিয়ে পিষে সেগুলি থেকে রস বার করেন।
১২১৬
তারপর সেই রস ফারমেন্টেশনের জন্য কিছু সময় ঢাকা দিয়ে রেখে দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় পরে রসের পাত্রটি ফোটানো হয়। জলীয় অংশ বাষ্পীভূত হতে শুরু করে। এই বাষ্পটিকেই অন্য আর এক পাত্রে সংগ্রহ করে তৈরি হয় ফেনি।
১৩১৬
ওই পরিবার মূলত স্থানীয়দের মধ্যেই এই পানীয় বিক্রি করে থাকেন। প্রতিদিন ফেনি বিক্রি করে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন করেন ইনাসিয়া এবং লুইস।
১৪১৬
২০১৬ সালে ফেনিকে গোয়ার ঐতিহ্যবাহী পানীয়ের তকমা দেওয়ার কথা ভেবেছিল গোয়া প্রশাসন। ফেনিকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ণের প্রস্তাবও ছিল তাঁদের কাছে। কাজু ফল সংগ্রহ থেকে ফেনি তৈরি— পুরোটা পর্যটকদের ঘুরে দেখানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শেষমেশ তা হয়ে ওঠেনি।
১৫১৬
কাজু বাদামের গাছ ব্রাজিল থেকে ভারতে এনেছিল পর্তুগিজরা। সেই ফল থেকে প্রথম কবে ফেনি তৈরি শুরু হয়েছিল, সে তথ্য অজানা।
১৬১৬
উপার্জন কম, গোয়ার বাইরে এর চাহিদা এখনও তেমন নেই। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বংশের পরম্পরা রক্ষার তাগিদেই ৫০০ বছর ধরে ফেনি বানিয়েই সংসার চলছে এই পরিবারের।