প্রতি দিনই লাখে লাখে মানুষ অযোধ্য়া পৌঁছচ্ছেন। ছবি: পিটাআই।
অযোধ্যায় নতুন মন্দির উদ্বোধনের পরের দিনই ভিড়ের চাপে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর পরে রামলালা দর্শনের নিয়মে নানা বদল আনতে হয় জেলা প্রশাসনকে। সেই নিয়ম মানতে গিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষ শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টও পুণ্যার্থীদের জন্য কড়াকড়ি অনেকটা শিথিল করেছে। এ বার চালু হল ‘ফাস্ট লেন’। ওই লাইনে দাঁড়ানো পুণ্যার্থীদের তিনটি নিয়ম মানতে হবে। তার ফলে সেই লাইনে দাঁড়িয়ে খুব তাড়াতাড়ি মন্দিরে প্রবেশ ও দর্শনের সুবিধা মিলবে। মন্দির থেকে বার হতেও সময় কম লাগবে।
প্রথম থেকে যে ব্যবস্থা চালু হয়েছিল, তাতে পুণ্যার্থীদের লাইনে দাঁড়িয়ে তিন বার নিরাপত্তা কর্মীদের তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছিল। কারণ, মন্দিরের ভিতরে কোনও রকম নেশাদ্রব্য, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, হেড ফোন বা ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। যাঁদের কাছে এই সব থাকছে তাঁদের নিজেদের জিনিসপত্র লকারে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পরে জুতো পরেও মন্দিরে ঢোকার সুযোগ নেই। জুতো রাখারও বিশেষ জায়গা রয়েছে। সে সব করে মন্দিরে প্রবেশ এবং দর্শন শেষে ফেরার পথে প্রথমে জুতো এবং পরে লকারে রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিতে অনেকটা সময় লাগছে। এর ফলে মন্দির চত্বরে এক সঙ্গে অনেক পুণ্যার্থী অনেকটা সময় থেকে যাচ্ছেন। সেটা বন্ধ করতেই অযোধ্যা জেলা প্রশাসন ‘ফাস্ট লাইন’ চালু করছে।
এই লাইনে যাঁরা দাঁড়াবেন, তাঁদের জন্য প্রশাসন তিনটি নিয়ম ঠিক করেছে। এক, ব্যাগ রেখে আসতে হবে হোটেল বা যেখানে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। দুই, মনে করে মোবাইল ফোন এবং ঘড়ি খুলে আসতে হবে। তিন, মোজা পরা যেতেই পারে তবে জুতো আগে থেকে খুলে এসে লাইনে দাঁড়াতে হবে। এই লাইনে যাঁরা দাঁড়াবেন তাঁদের এমনিতেই সময় কম লাগবে, এর উপরে জুতো হারিয়ে যাওয়ার ভয়ও থাকছে না। তা ছাড়া ‘ফাস্ট লাইন’ ব্যবহার করা পুণ্যার্থীদের জন্য দ্রুত দর্শনের ব্যবস্থাও করবে প্রশাসন। কারা ওই লাইনে দাঁড়াবেন, সেটা ঠিক করে দেবেন মন্দিরে ঢোকার মূল রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা।
অযোধ্যার জেলাশাসক নীতীশ কুমার ‘ফাস্ট লাইন’ চালু করার কথা জানানোর পাশাপাশি উদ্বোধনের পরে কোন দিন কত ভিড় হয়েছে তার পরিসংখ্যান দিয়েছেন। তাতে তিনি জানিয়েছেন, ২৩ জানুয়ারি সবচেয়ে বেশি (পাঁচ লাখ) দর্শনার্থী রামলালা দর্শন করেন। এর পরে রোজই কমবেশি দু’লাখ করে মানুষ এসেছেন মন্দিরে। মাঝে ২৬ জানুয়ারি ছুটির দিনে ভিড় হয় আড়াই লাখ মানুষের। প্রশাসনের ধারণা, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে ভিড় আরও বেশি হবে। প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারিতে দেশের সব রাজ্য থেকে বিজেপি-সহ বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন কর্মীদের নিয়ে যাবে অযোধ্যায়। এক মাসে এক কোটির মতো পুণ্যার্থী আসতে পারেন বলে প্রশাসনের ধারণা। সব রাজ্য থেকেই আসবে বিশেষ ট্রেন। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার থেকে দেশের আরও আট শহর থেকে সরাসরি অযোধ্যায় যাওয়ার বিমান চালু হচ্ছে বলে বুধবারই ঘোষণা করেছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। দিল্লি, চেন্নাই, আমদাবাদ, জয়পুর, পটনা, দ্বারভাঙা, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি বিমান যাবে অযোধ্যায়।
প্রথম ঠিক ছিল পুণ্যার্থীরা মন্দিরে ঢুকতে পারবেন সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা এবং পরে আবার দুপুর ২টো থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। তবে প্রথম দিনের গোলমালের পরেই নিয়ম বদলে যায়। এখন সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনের সুযোগ রয়েছে। তাতেও ভিড় সামাল দেওয়া যাচ্ছে না বলে ‘ফাস্ট লাইন’ চালুর ভাবনা। এখন অনেক খ্যাতনামীও সাধারণ লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। কারণ, ২৪ জানুয়ারি থেকে ‘ভিআইপি লাইন’ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। খ্যাতনামীদের কাছে পেয়ে সাধারণ পুণ্যার্থীরা ঘিরে ধরাতেও অনেক সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সেই কারণে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই নতুন করে ‘ভিআইপি লাইন’ চালুর কথাও ভাবছে অযোধ্যা প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy