সরকারি প্রতিশ্রুতি মতো বাড়ি বানানোর জমি পাননি বলে অভিযোগ করেছেন উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলির একাংশ। গ্রাফিক—শৌভিক দেবনাথ।
দিল্লির কাছে উত্তরপ্রদেশের জেওয়ারে তৈরি হচ্ছে নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বৃহস্পতিবার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে সেখানে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ২৫ নভেম্বরের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করে এসেছেন। বৃহস্পতিবার যেখানে অনুষ্ঠান হবে, তার থেকে মেরেকেটে ৭০০ মিটার দূরেই তাঁবু খাটিয়ে বাস করছেন জমিহারা একাধিক পরিবার। বিমানবন্দর তৈরির প্রথম দফার কাজে অধিগ্রহণ করা হয়েছে এঁদের জমি। কিন্তু সরকারি প্রতিশ্রুতি মতো বাড়ি বানানোর জমি পাননি বলে অভিযোগ করেছেন উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলির একাংশ। ক্ষতিপূরণের টাকাও এখনও অনেকে পাননি বলেও অভিযোগ করেছেন। জমি অধিগ্রহণের সময় তাড়াহুড়ো করা হয়েছিল বলেও স্বীকার করেছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক।
জেওয়ারে ওই বিমানবন্দর বানানোর জন্য বেশ কয়েকটি গ্রাম অধিগৃহীত হয়েছে। বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তা বানানোর জন্য রোহি গ্রামের সব বাসিন্দাকেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রায় ১০০টি পরিবার থাকছেন সেখানে। সে রকমই এক জন হলেন ৪৫ বছরের ওম পাল। তিনি প্লাস্টিকের তাঁবুতে থাকছেন তিন বছর। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ বা বাড়ি বানানোর জমি পাননি তিনি। একই অবস্থা রাম স্বরূপের। বিমানবন্দরের জন্য পাকা বাড়ি খালি করে স্ত্রীকে নিয়ে তাঁবুতে থাকতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
পাশের নাংলাশরিফ গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশও একই সমস্যার মুখে। সেখানকার প্রায় ১৫টি পরিবারকে থাকতে হচ্ছে তাঁবুতে। কারণ বিমানবন্দরের জন্য ভাঙা পড়েছে তাঁদের বাড়ি। এলাকায় জল, বিদ্যুৎ কিছুই নেই। এ রকমই এক গ্রামবাসী হাসান মহম্মদ। গত দু’বছরের মতো এ বছরের শীতও কাটবে তাঁবুতেই। হাসানের স্ত্রী এবং তিনটি সন্তান রয়েছে। তিনি সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেও সরকারি প্রতিশ্রুতি মতো কোনও জমি বা বাড়ি বানানোর টাকা পাননি। উচ্ছেদ হওয়া কিছু পরিবার সরকারের থেকে ৫০ মিটারের জমি পেলেও গবাদি পশুদের জন্য তাঁরাও তাঁবুতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
৬২ বছরের অজয়প্রতাপ সিংহ। খেদা দয়ানতপুরের বাসিন্দা তিনি। বিমানবন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে তিনি মামলা দায়ের করেছেন এলাহাবাদ হাই কোর্টে। তিনি বলেছেন, ‘‘সরকার বাসিন্দাদের গ্রামীণ কিন্তু তাঁদের চাষের জমিকে শহুরে বলে ঘোষণা করেছে। এ ঘটনা কখনও ঘটেনি। তাই আমাদের যা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল, তার অর্ধেক দেওয়া হয়েছে।’’ জমি অধিগ্রহণে তাড়াহুড়োর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন জেওয়ারের বিজেপি বিধায়ক ধীরেন্দ্র সিংহ। সে জন্যই জমিহারাদের একাংশ ক্ষতিপূরণ বা প্রতিশ্রুতি মতো জমি পাননি। তিনি বলেছেন, ‘‘গোটা ব্যবস্থাপনার জন্য আরও সময় দরকার ছিল। কিন্তু নির্মাণকারী সংস্থার হাতে জমি তুলে দেওয়ার সময়সীমা ছিল সরকারের। সে জন্যই এ রকম কিছু ঘটনা হয়েছে। আমরা অফিসারদের সঙ্গে বসে বিষয়টি মিটিয়ে নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy