Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Farm Bill 2020

কৃষকদের বন্‌ধ আজ, মোদী আছেন বক্তৃতায়

বিজেপি সূত্রের মতে, কৃষকদের অসন্তোষ দূর করতে আগামিকাল ফের মুখ খুলতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

অমৃতসরে কৃষককদের রেল অবরোধ। ছবি: পিটিআই

অমৃতসরে কৃষককদের রেল অবরোধ। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৩৮
Share: Save:

সংসদের বিক্ষোভ নেমে এসেছে সড়কে। পঞ্জাব ও হরিয়ানায় একাধিক স্থানে কৃষকেরা আজ দিনভর রেল ও সড়ক অবরোধ করেন। আগামিকাল মিলিত ভাবে ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছে দেশের কৃষক সংগঠনগুলি। তাতে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে অধিকাংশ বিরোধী দল। এই পরিস্থিতিতে আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে কৃষকদের বার্তা দিতে মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। তিনি বলেন, ‘‘এই বিলে কৃষকদের ক্ষতি হবে, এমন কোনও বিষয় নেই। ছোট কৃষকদের লাভের কথা ভেবেই বিল আনা হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, মূলত কংগ্রেসের উস্কানির ফলে কৃষকেরা ভুল বুঝে সড়কে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

বিজেপি সূত্রের মতে, কৃষকদের অসন্তোষ দূর করতে আগামিকাল ফের মুখ খুলতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে দিন থেকে সংস্কারমুখী ওই বিলগুলি নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়েছে, তখন থেকেই প্রতিটি অনুষ্ঠানে কৃষি বিলের গুণগান করেছেন মোদী। আগামিকাল ভারতীয় জনসঙ্ঘের তাত্ত্বিক নেতা দীনদয়াল উপাধ্যায়ের ১০৪ বছরের জন্মদিন। আজ সেই প্রসঙ্গে মোদী টুইটারে লেখেন, ‘‘দীনদয়াল উপাধ্যায়ের দর্শন আমাদের গরিবদের জন্য কাজ করতে ও তাঁদের জীবনে পরিবর্তন আনতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর জন্মজয়ন্তীতে আমি সকাল ১১টায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখব।’’ বিজেপি সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রীর টুইট থেকেই স্পষ্ট, কাল ভারত বন্‌ধের দিনে আসলে কৃষক-মজদুরদের উদ্দেশেই বার্তা দেবেন তিনি। ওই বিল পাশ হওয়ায় দেশের কৃষক শ্রেণির আয় কী ভাবে বাড়তে চলেছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ফের আশ্বাস দিতে পারেন।

মোদী মুখ খোলার আগে আজ মাঠে নামানো হয় কৃষিমন্ত্রী তোমরকে। তিনি বলেন, ‘‘ওই আইনের ফলে ছোট কৃষকেরা সরাসরি তাঁদের ফসল নিজেদের মর্জিমাফিক দামে বিক্রি করতে পারবেন। যে ব্যবসায়ী বেশি দাম দেবেন, তাঁকেই বিক্রি করা যাবে। প্রয়োজনে নিজের বাড়িতে বসেও দেশের অন্যত্র ফসল বিক্রি করা যাবে। মান্ডির আওতার বাইরে কেনাকাটা হলে করও দিতে হবে না। উপরন্তু মান্ডি পর্যন্ত ফসল নিয়ে আসার খরচ বেঁচে যাবে কৃষকদের। একই সঙ্গে কৃষিপণ্যে সহায়ক মূল্য যেমন ছিল, তা বজায় থাকবে।’’ এই বিল পাশের ফলে দেশে খাদ্যসঙ্কট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে বিরোধীরা যে আশঙ্কা করছেন, তা মানতে চাননি তোমর। তিনি বলেন, ‘‘দেশ খাদ্য উৎপাদনে আত্মনির্ভর। তাই খাদ্যসঙ্কট হবে না। উপরন্তু সরকারি গুদামে অনেক সময়ে খাদ্যশস্য পচে যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বেশি মাত্রায় কৃষকদের কাছ থেকে খাদ্যশস্য কিনলে তা যাতে খারাপ না হয়, তার জন্য কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করবেন। পরিকাঠামোর উন্নতি হবে।’’

আরও পড়ুন: কৃষি-বিক্ষোভে নিজের নিয়ন্ত্রণ চাইছে তৃণমূল

তোমর ওই দাবি করলেও গোড়া থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইনের ফলে কৃষকদের চেয়ে বেশি লাভ হবে বড় ব্যবসায়ী সংস্থাগুলির। পথে বসবেন ছোট কৃষকেরা। উঠে যাবে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও। তাই মোদী সরকারের আনা ওই আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে আগামিকাল গোটা দেশে বন্‌ধ ডেকেছে কৃষক সংগঠনগুলি, যাকে বাম-কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলি সমর্থন করেছে। আজ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘কৃষক-মজদুর দেশবাসীর পেট ভরান, আর মোদী সরকার তাঁদের খেতে-জমিতে হামলা করেছে। কংগ্রেসের সমর্থকেরা রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কৃষকদের পাশে রয়েছেন।’’

আরও পড়ুন: কৃষিপণ্যের এমএসপি নিয়ে দাবি তুলেছিলেন মোদীই

বন্‌ধের সমর্থনে কাল যন্তরমন্তরে সকাল ১১টায় বিক্ষোভ দেখাবে অল ইন্ডিয়া কিষান সংঘর্ষ কোঅর্ডিনেশন কমিটি। তোমরের পাল্টা দাবি, নতুন আইনে কৃষক ও কোনও ব্যবসায়িক সংস্থার মধ্যে চুক্তিভঙ্গ হলেও কৃষকদের যাতে ক্ষতি না-হয়, সে দিকটি মাথায় রাখা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘আসলে রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতেই এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে কংগ্রেস। অথচ রাহুল গাঁধীর দল গত লোকসভা ভোটে কিংবা পঞ্জাব বিধানসভার নির্বাচনী ইস্তাহারে এই আইন আনা হবে বলে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। জোর দিয়েছিল আন্তঃরাজ্য বাণিজ্যে। কিন্তু এখন নিজেদের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে কৃষকদের কংগ্রেস ভুল বোঝাচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Farm Bill 2020 BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy