কৃষকদের বিক্ষোভ চলবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েত। ছবি: পিটিআই।
নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে হুঙ্কার দিলেন কৃষক নেতারা। অনড় নেতাদের হুঁশিয়ারি, নরেন্দ্র মোদী সরকারের ৩ কৃষি আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতে ফিরবেন না তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, কৃষকদের আন্দোলন রুখতে গাজিপুরের প্রতিবাদস্থলে গুন্ডা পাঠিয়েছে বিজেপি সরকার। শুক্রবার রাতে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় গাজিপুরের আন্দোলনস্থল থেকে ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েতের দাবি, ‘‘আত্মহত্যা করব। কিন্তু, যতক্ষণ পর্যন্ত আইন প্রত্যাহার না হয়, ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’
বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই গাজিপুর থেকে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। তবে সেই নির্দেশ সত্ত্বেও গাজিপুর থেকে এক পা-ও সরবেন না বলে পাল্টা হুঙ্কার দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই গাজিপুর ছাড়াও দিল্লির সীমানায় সিংঘু এবং টিকরির বিক্ষোভস্থলেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার পাশাপাশি জল সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়া হয় গাজিপুরে। তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ-প্রশাসনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও গাজিপুরেই কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন বিকেইউ-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ। গাজিপুর থেকে তাঁরা এক পা-ও নড়বেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাজিপুরের আশাপাশের এলাকা থেকেও আন্দোলনকারীদের সমর্থনে জমায়েত বাড়তে থাকে। রাতে টুইটারে সংযুক্ত কিসান মোর্চার অধ্যক্ষ নরেশ টিকায়েত দাবি করেন, ‘হরিয়ানার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষক ভাইয়েরা গাজিপুর সীমানায় দিকে আসতে শুরু করেছেন। এখন ৩ কালা কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হলে তবেই তাঁরা বাড়ি ফিরবেন’।
हरियाणा के गाँव-गाँव से किसान भाई ग़ाज़ीपुर बॉर्डर की तरफ चल पड़े हैं। अब तो तीनों काले कानूनों का निपटारा करके ही घर लौटेंगे।
— Naresh Tikait (@NareshTikait_) January 28, 2021
बाबा टिकैत का एक-एक सिपाही दिल्ली कूच करे! pic.twitter.com/HLglFoTSM0
দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় গাজিপুরে গন্ডগোলের আশঙ্কায় ১ হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গাজিয়াবাদে নামানো হয়েছে ৪ কোম্পানি র্যাফ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কৃষকদের আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা মোতায়েন থাকবে।
তবে তা সত্ত্বেও ঝামেলা এড়ানো যায়নি। গাজিপুরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার রাতে এক আন্দোলনকারী দাবি করেন, ‘‘গাজিপুর থেকে আমাদের তুলে দিয়ে হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। প্রচুর পুলিশও এসেছিল। আমাদের এখান থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।’’ সে সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়। সংবাদমাধ্যমের কাছে রাকেশের দাবি, ‘‘বিজেপি-র ৩০০ লোক লাঠিসোটা নিয়ে এখানে রয়েছেন। তাদের বিধায়কেরাও রয়েছেন। কৃষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’’
উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের পাশাপাশি আর এক বিজেপিশাসিত রাজ্য হরিয়ানা থেকেও আন্দোলনকারীদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে মনোহরলাল খট্টর প্রশাশন। হরিয়ানার কার্নালে দিল্লির আন্দোলনকারীদের সমর্থনে গত দু’মাস ধরে বিক্ষোভ-জমায়েত শুরু হয়েছে। ওই আন্দোলনকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সে জায়গা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের ৩ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের মতোই অনড় মনোভাব দেখা যাচ্ছে বিরোধী নেতাদের মধ্যেও। ২৯ জানুয়ারি সংসদে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণ বয়কট করা হবে বলে জানিয়েছে এনডিএ-র এক সময়কার শরিক শিবসেনা-সহ ১৬টি রাজনৈতিক দল। সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত সে কথা জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের সমর্থনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর টুইট, ‘এক পক্ষ বেছে নেওয়ার সময় এসেছে। আমার সিদ্ধান্তও স্পষ্ট। আমি গণতন্ত্রের পক্ষে। আমি কৃষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে রয়েছি’।
एक साइड चुनने का समय है।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) January 28, 2021
मेरा फ़ैसला साफ़ है। मैं लोकतंत्र के साथ हूँ, मैं किसानों और उनके शांतिपूर्ण आंदोलन के साथ हूँ।
রাহুলের মতোই আন্দোলনকারীদের পক্ষে সরব হয়েছেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব।
বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে অখিলেশ বলেন, ‘‘এখন কৃষকদের যে ভাবে রাস্তা থেকে হঠানো হচ্ছে, ভবিষ্যতে তা বিজেপি-কেই রাস্তায় টেনে নামাবে।’’ অখিলেশ ছাড়াও কৃষকদের সমর্থন জানিয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তেজস্বীর টুইট, ‘কৃষকদের সমর্থনে তাঁদের পাশে রয়েছে আরজেডি’।
রাজনৈতিক নেতাদের মতোই সাধারণ কৃষকদেরা আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন। শুক্রবার গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের মেরঠ, বারোট, বাঘপত মুরাদনগর এলাকায় ক্রমশ ভিড় বাড়ছে তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy