ব্যারিকেডের ওপারে পুলিশি আয়োজন দেখার ভিড়। বৃহস্পতিবার গাজিপুর সীমানায়। ছবি: প্রেম সিংহ
সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতায় সমঝোতার বার্তা না-পেয়ে বিক্ষোভরত কৃষকেরা বুঝছেন, আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হবে। সে জন্য নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে নতুন পরিকাঠামো গড়ে তুলছেন কৃষকেরা। আসন্ন গ্রীষ্মের মোকাবিলার কথাও ভাবা শুরু করেছেন।
একই সঙ্গে সিংঘু সীমানায় নজরদারি বাড়াচ্ছেন আন্দোলনকারী কৃষকদের সংগঠন সংযুক্ত কিসান মোর্চা। ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবীর একটি দল তৈরি করা হয়েছে। কৃষক নেতৃত্বের আশঙ্কা বিশ্রামের সময়ে দুষ্কৃতী হামলা হতে পারে। তাই ২৪ ঘণ্টা টহল দেবেন এই স্বেচ্ছাসেবীরা। সেই সঙ্গে আন্দোলনের মূল মঞ্চ এবং সেটিকে ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং শক্তিশালী ভিডিয়ো রেকর্ডার বসিয়েছেন কৃষক নেতৃত্ব। মঞ্চের পিছনে একটি মনিটরিং রুমও তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চে অনুষ্ঠানের সময়ে যাতে সবাই সেখানে জমায়েত না-হন, তাই ১০টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এলসিডি টিভি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরে দিল্লির ভয়ানক গরমের মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত পাখা ও এয়ার কুলারের খোঁজখবর করার কাজও এখন থেকেই শুরু হয়েছে।
সরকার অবশ্য কৃষক নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ জারি রেখেছে। তিনটি কৃষি আইন সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কয়েক দিন আগে আলিগড়ে যে মহাপঞ্চায়েত হয়, রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধরি সেখানে হাজির হয়ে কৃষকদের দাবিকে সমর্থন করেন। চৌধরি নিজেও কৃষক নেতা। এর পরে পুলিশ জয়ন্ত ও তাঁর ৫০০০ সঙ্গীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। ২২ জন কৃষক নেতার নাম দিয়েছে পুলিশ, বাকিদের পরিচয় অজ্ঞাত বলে দেখানো হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে অতিমারি-আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, দূরত্ব বিধি অমান্য করে এই জমায়েত করা হয়েছে।
আন্দোলন জিইয়ে রাখতে পর্যায়ক্রমে হাজিরায় জোর দিয়েছেন কৃষকেরা। অর্থাৎ এক দল কৃষক গাঁও থেকে এসে যোগ দেওয়া মাত্র একটি দল ফিরে যাচ্ছেন। দিন পনেরো পরে আবার এই কৃষকেরা সিংঘুতে ফিরে এলে আর এক দল গ্রামে ফিরবেন। আন্দোলনকারীদের যুক্তি, কৃষিকাজে ঢিলেমির অবকাশ নেই। আন্দোলনের ফলে চাষবাস মার খেলে পরিবার যেমন বিপদে পড়বে, গোটা দেশ মূল্যবৃদ্ধির কবলে পড়বে।
এ দিকে রিহানা ও গ্রেটা থুনবার্গ যে কাজ শুরু করেছিলেন, তাকে এগিয়ে দিলেন আমেরিকার জনপ্রিয় কমিক শিল্পী ট্রেভর নোয়া। রিহানা ও থুনবার্গ দিল্লি সীমানায় কৃষক আন্দোলন, তা দমনে সরকারের বলপ্রয়োগের বিষয়টি আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরেছিলেন। এর পরে আরও অনেক পশ্চিমি শিল্পীই কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। সেই তালিকায় এ বার নোয়াও। তাঁর জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে যে সব বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে, তার মধ্যে সব চেয়ে বড়টি এখন চলছে দিল্লির সীমানায়। কয়েক হাজার কৃষক সেখানে সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাস্তায় বসে থেকে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy