Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্দোলন ঠেকাতে জেএনইউয়ের নামে ভুয়ো প্রচার

কয়েক মাস আগেই লোকসভা ভোটের সময় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারের মতো নানা সংস্থা দাবি করেছিল তারা ভুয়ো খবর ঠেকাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কাজ যে বিশেষ হয়নি জেএনইউ পর্বে তা ফের স্পষ্ট।

ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবিভিপির বিক্ষোভ।—ছবি পিটিআই।

ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবিভিপির বিক্ষোভ।—ছবি পিটিআই।

সুজিষ্ণু মাহাতো
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১২
Share: Save:

ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন অনেকে। সমাজমাধ্যমে তাঁরা বলেছেন, তাঁদের করের টাকা মূর্তি তৈরিতে নয়, খরচ করা হোক শিক্ষাক্ষেত্রে। আন্দোলনকে আক্রমণ করার চেষ্টাও থেমে থাকেনি। নেট-দুনিয়ায় এ ক্ষেত্রেও হাতিয়ার সেই পুরনো— ভুয়ো ছবি, ভুয়ো বয়ান।

কয়েক মাস আগেই লোকসভা ভোটের সময় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারের মতো নানা সংস্থা দাবি করেছিল তারা ভুয়ো খবর ঠেকাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কাজ যে বিশেষ হয়নি জেএনইউ পর্বে তা ফের স্পষ্ট। দিল্লির রাস্তায় জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রীদের মিছিল ও তাতে পুলিশি লাঠিচার্জের অভিযোগের সময় নানা প্রান্তের পড়ুয়া, সাধারণ নাগরিকও আন্দোলনের পাশে দাঁড়ান। তখনই টুইটারে এক তরুণীর ছবি ছড়ানো হয়, যাতে দেখা যায় তাঁর এক হাতে বোতল ও আর এক হাতে সিগারেট। ওই তরুণী জেএনইউ-এর ছাত্রী বলে প্রচার হয়। লেখা হয়, ‘‘যারা নেশার জন্য টাকা খরচ করতে পারে তারা ফি কমানোর আন্দোলন করে কোন যুক্তিতে?’’ যাচাই করতেই অবশ্য বোঝা যায়, ছবিটি ভুয়ো। পড়ুয়ারা অভিযোগ তোলেন, বিজেপি সমর্থকদের আইটি সেল থেকেই এ সব করা হয়।

২৩ বছরের এক পড়ুয়ার ছবিকেও ৪৫ বছরের কংগ্রেস নেতার ছবি বলে ছড়ানো হয়। যদিও যাচাইয়ে ধরা পড়ে, ওই ছবি বিশ্ববিদ্যালয়েরই ভাষাতত্ত্বের স্নাতকোত্তরের ছাত্র শুভম বোকাডে-র। শুভমের প্রশ্ন, ‘‘ছবিটা যদি ভুয়ো নাও হত, তা হলেও কি ৪৫ বছরের একজন মানুষ নিজের সাধ্যের মধ্যে খরচে শিক্ষা দাবি করতে পারেন না?’’

এমন প্রশ্নকে দমিয়ে দিতেই মিথ্যে, বয়ান ছড়ানো হয় বলে মত ভুয়ো খবর ধরার বিশেষজ্ঞ প্রতীক সিন্‌হার। তিনি বলছেন, ‘‘জেএনইউ আন্দোলন বৃহত্তর অর্থে সার্বিক শিক্ষার অধিকারের আন্দোলন। শিক্ষা মানুষকে কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, তা প্রশ্ন করার ক্ষমতা দেয়। সেই ক্ষমতাকে ঠেকাতেই আন্দোলনকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে এমন প্রচার চলে।’’

এর আগেও নানা আন্দোলনের বিরুদ্ধে ভুয়ো খবরকে হাতিয়ার করে প্রচার চলেছে। কিছুদিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সামনে বিক্ষোভরত অন্য ছাত্রীকে তিনি ভেবে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হয়। মহারাষ্ট্রে কৃষকদের পদযাত্রার সময়েও টুইটারে ভুয়ো ট্রেন্ড তৈরি করা হয়, ওই কৃষকেরা মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে। যা আদৌ কৃষকেরা করেননি। শবরীমালা-পর্বেও আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এমন নানা ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হয়েছিল। প্রতীকের কথায়, ‘‘যে কোনও প্রতিবাদের বিরুদ্ধেই একটা বানানো বয়ান ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। তাকে ঠেকানোই সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Social Media JNU Student Protest Fake News
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy