একটি ইংরেজি নিউজ চ্যানেলের এই ভিডিয়োটিকে কেন্দ্র করেই বিভ্রান্তির সূচনা
কী ছড়িয়েছে?
একটি টুইটপোস্ট, যেখানে বলা হচ্ছে, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন-সহ ১৮ দেশ করোনাভাইরাস অতিমারির সঙ্গে লড়তে যৌথ টাস্ক ফোর্সের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেখতে চায়।’’সেই সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ‘উইয়ন’ বলে এক ইংরেজি খবরের চ্যানেলে সম্প্রচারিত খবরের ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি এডিট করা ভিডিয়ো।
ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার হয়েছে এই পোস্ট
কোথায় ছড়িয়েছে?
এই ভিডিয়ো পোস্টটি ব্যাপক ভাবে শেয়ার হয়েছে ফেসবুক এবং টুইটারে। একাধিক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকেও ওই ভিডিয়োটি শেয়ার করা হয়েছে।
ফেসবুক এবং টুইটারে একাধিক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার হয়েছে এই পোস্টটি
এই তথ্য কি সঠিক?
না, ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টটির বক্তব্য ঠিক নয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতেও এই দাবি করা হয়নি।
টুইটার খুঁজে যা উঠে এসেছে
সত্যি কী এবং আনন্দবাজার কী ভাবে যাচাই করল?
এই গুজবের উৎস যে ভিডিয়ো, সেটি একটি ইংরেজি চ্যানেলে সম্প্রচার হওয়া প্রতিবেদন। আমরা ইউটিউবে সার্চ করে সেই সম্প্রচারটি খুঁজে পাই। বিগত ১৫ মার্চ খবরটি সম্প্রচার হয়।
ইউটিউবে গত ১৫ মার্চ ওই নিউজ চ্যানেলের অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড হয় এই ভিডিয়োটি
কী ছিল সেই ভিডিয়োতে?
ভিডিয়োটিতে কোথাও বলা নেই যে প্রধানমন্ত্রী মোদী এমন কোনও টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন। বরং বলা হয়েছে,‘একটি টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য দেশ হিসেবে উঠে এসেছে ভারত। কারণ, এই অতিমারিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি জয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির ডাক দিয়েছেন।’ এটিকে ওই চ্যানেলটির পর্যবেক্ষণও বলা চলে।
ওই প্রতিবেদনে সংবাদপাঠিকা বলেছেন, ‘‘সমস্ত সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশ নয়াদিল্লির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং তারা এই মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার কৌশল ঠিক করতে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে চায়।’’ ভারত, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভূটান, মলদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা— এই আট দেশকে নিয়ে তৈরি সার্ক। ফলে ১৮ দেশের কোনও গোষ্ঠীর বিষয় এখানে প্রযোজ্য নয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয় যে, শুধু দক্ষিণ এশিয়াই নয়, বিশ্বের অন্য রাষ্ট্রনেতারাও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এর মধ্যে প্রথম কথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।যিনি এই সংক্রমণ আটকাতে যৌথ আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা নিয়ে মোদীর সঙ্গে কথা বলেন। জি-২০ দেশগুলির মধ্যে সমন্বয় গড়তে প্রধানমন্ত্রী মোদী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনও তার প্রশংসা করেন।
করোনাভাইরাসের মতো অতিমারি ঠেকাতে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত ঠিক কী কী উদ্যোগ নিয়েছে?
১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসনের মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়। পিএমও-র প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে ভারত-ইউকে যৌথ সমন্বয় এবং কোভিড-১৯ অতিমারি নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেন।
১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী মোদী টুইট করেন, ‘‘সার্ক দেশগুলির নেতৃত্বের কাছে আমার প্রস্তাব, আসুন, করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার একটা শক্তপোক্ত কৌশল তৈরি করি।’’
I would like to propose that the leadership of SAARC nations chalk out a strong strategy to fight Coronavirus.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 13, 2020
We could discuss, via video conferencing, ways to keep our citizens healthy.
Together, we can set an example to the world, and contribute to a healthier planet.
এর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভূতপূর্ব ভাবে সার্ক দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের নিয়ে একটি ভিডিয়ো কনফারেন্স হয়। যার কথা ওই সম্প্রচারিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৫ মার্চ সার্ক দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে ওই ভিডিয়ো কনফারেন্স হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল ১ কোটি ডলার দেবে ভারত।
২৬ মার্চ জি-২০ নেতাদের একটি ভিডিয়ো কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সব গোষ্ঠীভুক্ত দেশ মিলে প্রতিশ্রুতি দেয় করোনাভাইরাস অতিমারির সামাজিক ও আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলা ৫ লক্ষ কোটি ডলারের তহবিল গড়া হবে। সৌদি আরবের রাজা সলমন বিন আব্দুল আজিজ আল সাউদ সেই বৈঠকটির পৌরহিত্য করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই বৈঠকে আলাদা করে কোনও ভূমিকা নেননি। ভারতের তরফে আলাদা করে কোনও অর্থ সাহায্যের কথা বলা হয়নি।
Joined the #G20VirtualSummit earlier today. Various world leaders discussed ways to fight COVID-19. In my remarks, I spoke about the need to place health and human welfare at the top of our global priorities. Here are the highlights. https://t.co/Tt8RaWGahN
— Narendra Modi (@narendramodi) March 26, 2020
এই অতিমারিকে বাগে আনতে আমেরিকার সঙ্গেও ভারতের কথা হচ্ছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত কোনও যৌথ বা আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স নিয়ে কোথাও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সেই টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
(হোয়াটস্অ্যাপ,ফেসবুক, টুইটারে যা-ই দেখবেন, তা-ই বিশ্বাস করবেন না। শেয়ারও করে দেবেন না। বিশেষত এই আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় তো তো নয়ই। এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়ো খবর। যাচাই করুন। কোনও খবর, তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিলে আমাদের জানান এই ঠিকানায় feedback@abpdigital.in)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy