Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
National News

বিহারে এনসেফেলাইটিসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩, নীতীশ সরকার বলছে, ‘ব্রেন ফিভার’

মুজফ্‌ফরপুর জেলা প্রশাসনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অবশ্য অন্য কথা বলছে। জানাচ্ছে, গত ১ জুন থেকে মুজফ্‌ফরপুরের শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম (এইএস) সন্দেহে মোট ১১৭ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে।

মুজফ্‌ফরপুরের হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। বৃহস্পতিবার। ছবি- এএফপি।

মুজফ্‌ফরপুরের হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। বৃহস্পতিবার। ছবি- এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
মুজফ্ফরপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ১৭:০০
Share: Save:

বিহারে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে এনসেফেলাইটিস। বুধবার মৃত্যু হয়েছে আরও দু’টি শিশুর। তাদের নিয়ে বিহারে এখনও পর্যন্ত এনসেফেলাইটিসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৪৩। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতদের ৭০ শতাংশই কিশোরী। তবে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রশাসন এখনও ওই রোগকে এনসেফেলাইটিস বলে মেনে নিতে রাজি হয়নি। বিহারের স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়ে‌ছেন, এনসেলেফেলাইটিস নয়। রক্তে শর্করার মাত্রা খুব কমে (লো-ব্লাড সুগার) যাওয়ার ফলেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আবার বিহারের ডিরেক্টর-ইন-চিফ (ডিজিজ কন্ট্রোল) আর ডি রঞ্জন বলেছেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ ব্রেন ফিভার।’’

মুজফ্‌ফরপুর জেলা প্রশাসনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অবশ্য অন্য কথা বলছে। জানাচ্ছে, গত ১ জুন থেকে মুজফ্‌ফরপুরের শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম (এইএস) সন্দেহে মোট ১১৭ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার ঘটনাকে চিকিৎসাশাস্ত্রে বলা হয়, ‘হাইপোগ্লাইসেমিয়া’। রক্তে সোডিয়াম বা পটাসিয়ামের মতো ধাতব মৌলের পরিমাণ কমে গেলেও হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হন রোগী।

আরও পড়ুন- ৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কঠোর ব্যবস্থা, এসএসকেএম-এ গিয়ে ডাক্তারদের হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর​

আরও পড়ুন- স্বস্তি দিয়ে বদলে গেল অভিমুখ, গুজরাত উপকূল থেকে ফের সমুদ্রে ‘বায়ু’​

মুজফ্‌ফরপুরের শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট সুনীল কুমার শাহি বলেছেন, ‘‘এনসেফেলাইটিসে মৃত্যুর কোনও খবর পাইনি। বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত কমে যাওয়ায়। তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে প্রবল জ্বরের লক্ষণ।’’

ঘটনার তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল টিমের সদস্যরাও খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন মুজফ্‌ফরপুরের ওই হাসপাতালে গিয়ে। ওই চিকিৎসক দলের নেতৃত্বে রয়েছেন যিনি, সেই চিকিৎসক অরুণ বলেছেন, ‘‘আমরা সব কিছু খতিয়ে দেখছি। আমাদের রিপোর্ট আমরা বিহার সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে জমা দেব।’’

তিনি অবশ্য এই কথাও বলেছেন, ‘‘খুব জটিল ধরনের এনসেফেলাইটিসের আগে অনেক উপসর্গ দেখা যায় রোগীদের মধ্যে। তাদের মধ্যে একটি- হাইপোগ্লাইসেমিয়া। তবে আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি।’’

কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল টিম সূত্রের খবর, ওই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় যত জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ২৪ জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। এখনও যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এইএস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, এই সন্দেহে মুজফ্‌ফরপুরের বেসরকারি কেজরীবাল হাসপাতালে গত ১ জুন থেকে ভর্তি করানো হয়েছে ৫৫ জনকে। তাদের মধ্যে ৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যাঁরা এখনও সেখানে ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।

পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তা বুঝতে মুজফ্‌ফরপুর শহরে পৌঁছেছেন বিহারের ডিরেক্টর-ইন-চিফ (ডিজিজ কন্ট্রোল) আর ডি রঞ্জন। পটনা থেকে তাঁর সঙ্গে গিয়েছে বিহারের স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধিদল। রঞ্জন বলেছেন, ‘‘গত ১০ জুন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রেন ফিভারে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি করানো হয়েছে ১০৯ জনকে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর ঘটনাই ঘটেনি অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে।’’

বিহারের স্বাস্থ্য দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সঞ্জয় কুমার বলেছেন, ‘‘যে ১২টি জেলা থেকে আমরা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছি, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ইতিমধ্যেই সেই সব জায়গায় আপৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy