সংসদে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ছবি: পিটিআই।
আবার সংসদের অন্দরে জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার পরে এ বার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর গলায়। বৃহস্পতিবার সংসদের যৌথ অধিবেশনের ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘১৯৭৫ সালে জারি হওয়া জরুরি অবস্থা ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম অধ্যায়।’’
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের সুপারিশে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের জারি করা জরুরি অবস্থা দেশে বিশৃঙ্খলার সূচনা করেছিল বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিনের ঘটনা ছিল সংবিধানের উপর সরাসরি, সবচেয়ে বড় আক্রমণ। গণতন্ত্রকে কলঙ্কিত করার এমন প্রচেষ্টা নিন্দনীয়।’’ এর পরেই তাঁর ‘তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য’, ‘‘সে দিন জাতি ওই অসাংবিধানিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছিল।’’
রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় বিজেপি-সহ সরকার পক্ষের সাংসদদের উল্লাস করতে দেখা যায়। অন্য দিকে, বিরোধী বেঞ্চ থেকে ধেয়ে আসে প্রতিবাদ। প্রায় ৫০ বছর আগেকার জরুরি অবস্থা নিয়ে গত তিন দিন ধরে কখনও সংসদের বাইরে, কখনও টুইট করে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বুধবার লোকসভায় দ্বিতীয় বার স্পিকারের দায়িত্ব পেয়েই ওম সরাসরি জরুরি অবস্থার সমালোচনা করে সংসদের কার্যবিবরণীতে বিষয়টি নথিবদ্ধ করে রাখেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, লোকসভায় শপথগ্রহণের সময় মোদীকে সংবিধান দেখিয়ে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী, অখিলেশ যাদবেরা। এ বার রাষ্ট্রপতি মুর্মু সংবিধানের প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসের নাম না করে মনে করিয়ে দিলেন, রাহুলের ঠাকুরমাই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে অতীতে দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে, সাংবিধানিক বিধি মেনে সংসদে রাষ্ট্রপতির লিখিত ভাষণের ‘বিষয়’ স্থির করে সরকার পক্ষই।
বস্তুত, গত দশ বছরে মোদীর বিরুদ্ধে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারির অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিতে প্রভাব খাটিয়ে বিরোধীদের কোণঠাসা করা, সংবাদমাধ্যমে ছড়ি ঘোরানো, সংসদে বিরোধী স্বর চেপে দেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণে চলতি নির্বাচনে সংবিধান রক্ষার ডাক দিয়ে প্রচারে নামেন বিরোধীরা। অভিযোগ তোলেন, বিজেপি ‘৪০০ পার’ করলে বদলে দেবে সংবিধান। ভোটের ফল বলছে, বিরোধীদের সেই প্রচার আংশিক ছাপ ফেলেছে ভোটদাতাদের মনে। এই পরিস্থিতিতে সরকার পক্ষ অর্ধ শতক আগেকার প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে বিরোধী জোটের অন্দরে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy