ছবি: পিটিআই
প্রথমে রাহুল গান্ধী। তার পরে সনিয়া গান্ধী। এ বার ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ মামলায় রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গেকে আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করল ইডি।
সংসদের অধিবেশনের মধ্যেই রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতাকে ইডি সমন পাঠানোয় আজ দফায় দফায় লোকসভা, রাজ্যসভা অচল হয়েছে। ইডি, সিবিআইকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ‘নরেন্দ্র মোদীর দুই ভাই, ইডি ও সিবিআই’, ‘ইডি-মোদী মুর্দাবাদ’, ‘তানাশাহি নেহি চলেগি’ বলে স্লোগান তুলেছেন। খড়্গে নিজেও ইডি-র দফতরে রওনা হওয়ার আগে রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, “সংসদের অধিবেশন চলাকালীন এক জন সাংসদকে, বিরোধী দলনেতাকে সমন পাঠানো কি সঠিক সিদ্ধান্ত?” মোদী সরকার কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের ভয় দেখাতে চাইছে অভিযোগ তুলে খড়্গে বলেন, “আমরা ভয় পাব না। আমরা লড়াই করব।”
বুধবারই ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’-এর সদর দফতর হেরাল্ড হাউসের একটি অংশ ইডি ‘সিল’ করে দিয়েছিল। তার আগে মঙ্গলবার ইডি সেখানে তল্লাশি চালায়। আজ বেলা সাড়ে ১২টায় খড়্গেকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ইডি সূত্রের বক্তব্য, ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রকাশনা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালসের মালিক এখন ইয়ং ইন্ডিয়া। সনিয়া ও রাহুল গান্ধী এই ইয়ং ইন্ডিয়া সংস্থার কর্ণধার। অভিযোগ অনুযায়ী, সনিয়া-রাহুল ইয়ং ইন্ডিয়া সংস্থাকে সামনে রেখে অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালসের বিপুল সম্পত্তি দখল করেছেন। বুধবার ইডি-র অফিসাররা হেরাল্ড হাউসে ইয়ং ইন্ডিয়া-র দফতরে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিলেন। সেখানে কেউ না থাকায় দফতর সিল করে দেওয়া হয়। খড়্গে ইয়ং ইন্ডিয়া সংস্থার অনুমোদিত প্রতিনিধি। সেই কারণেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। খড়্গেকে প্রথমে ইডি-র দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরে ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’-এর সদর দফতরে ইয়ং ইন্ডিয়া সংস্থার অফিসে নিয়ে গিয়ে ইডি তল্লাশি চালায়। খড়্গেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
শনিবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেই উপলক্ষে খড়্গে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভার সম্মানে সংসদের লাইব্রেরি ভবনে বিরোধী দলের সাংসদদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ করেছিলেন। হেরাল্ড হাউস থেকে ছাড়া পেয়ে রাত ন’টা নাগাদ তিনি অনুষ্ঠানে আসেন। সনিয়া গান্ধী, শরদ পওয়ার, আলভারা সেখানে হাজির ছিলেন।
সিবিআই-ইডি-র রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার নিয়ে সংসদের চলতি অধিবেশনের গোড়া থেকেই বিরোধীরা সরব। এ দিন সংসদের অধিবেশন শুরু হতেই বেলা ১১টায় রাজ্যসভায় খড়্গে এ প্রসঙ্গে বলার চেষ্টা করেন। চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু তাঁকে অনুমতিও দেন। কিন্তু খড়্গে কিছু বলার আগেই সরকারি বেঞ্চ থেকে রাজ্যসভার নেতা পীযূষ গয়াল তাঁকে বাধা দেন। তা নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তোলায় অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। পি চিদম্বরমের প্রশ্ন, “এটা কোন ধরনের সংসদীয় রীতি?”
দুপুর ১২টায় খড়্গে অভিযোগ করেন, “আমি ইডি-র সমন পেয়েছি। বেলা সাড়ে ১২টায় আমাকে ডাকা হয়েছে। আমি সমন এড়াতে চাই না। কিন্তু সংসদের অধিবেশনের মধ্যে সমন পাঠানোটা কি ঠিক?” বিরোধীরা প্রতিবাদে ওয়েলে নেমে পড়েন। তোপের মুখে গয়াল বলেন, “আমরা তদন্তকারী সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করি না। কংগ্রেসের আমলে হয়তো ওঁরা করতেন। যে তদন্ত নিয়ে কথা হচ্ছে, সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছে। কেউ বেআইনি কাজ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবেই। কংগ্রেসের সভানেত্রী, দলের নেতা জামিনে রয়েছেন। তাঁদের উচিত আইন মেনে চলা।”
এর পরে ফের রাজ্যসভা মুলতুবি হয়ে যায়। লোকসভাতেও এ দিন কোনও কাজ হয়নি। রাহুল গান্ধী থেকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা এ দিন অভিযোগ তুলেছেন— মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মতো সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতেই মোদী সরকার ইডি-সিবিআইকে প্রতিদিন বিরোধীদের বিরুদ্ধে মাঠে নামাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy