—ফাইল চিত্র।
গণতন্ত্রের মহোৎসব আসন্ন। তবে সেই লোকসভা ভোটে এখানে এত, ওখানে অত আধাসেনা চাই বলে বিভিন্ন দলের দাবি ঘোষণার পালা এখনও শুরু হয়নি। কোথায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। সেই বিষয়ে সিদ্ধান্তের পরে ভোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
ভোটে বাহিনী ব্যবহার নিয়ে কিছু দিন আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে কমিশন। তার আনুষ্ঠানিক উত্তর এখনও আসেনি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে ঐকমত্যেও পৌঁছতে পারেনি কমিশন এবং মন্ত্রক।
লোকসভা নির্বাচনে উত্তেজনার পারদ অনেক উঁচু তারে বাঁধা থাকবে বলে মনে করছেন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। তাই ভোট পর্বে আরও কঠোর নিরাপত্তা চায় কমিশন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৮১.৪ কোটি ভোটার যোগ দিয়েছিলেন। আসন্ন নির্বাচনে যোগ দিতে চলেছেন প্রায় ৯০ কোটি ভোটার। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রায় তিন লক্ষ জওয়ান এবং পদস্থ আধিকারিক ব্যবহার করতে চাইছে কমিশন।
তবে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় বহু জওয়ানের প্রাণহানির পরে ওই সংখ্যক বাহিনী পাওয়া যাবে কি না, সেই বিষয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রায় দু’লক্ষ জওয়ান ও আধিকারিক ব্যবহারের ছাড়পত্র দিতে পারে বলে ইঙ্গিত পেয়েছে কমিশন। কারণ, পুলওয়ামার ঘটনার পরে কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। ১০০ কোম্পানি অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে সেখানে। পুলওয়ামা-কাণ্ডের পরে পাকিস্তানি সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তাঁরা এই দু’টি ক্ষেত্রে বাহিনীর স্থান পরিবর্তন করতে চাইছেন না বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা প্রাথমিক ভাবে কমিশনকে জানিয়েছেন। তার উপরে নাগরিকত্ব বিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উত্তাপ রয়েছে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে। সেখানে চিনের মতিগতিও সুবিধের নয়। ফলে ওই সব অঞ্চলেও বাহিনীর সংখ্যায় হেরফের করা যথেষ্ট সমস্যার বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অভিমত। সমস্যা আছে কিছু আন্তঃরাজ্য সীমানাতেও। ছত্তীসগঢ়, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু অংশে এখনও মাওবাদী সমস্যা রয়েছে। সেখান থেকে বাহিনী সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। মূলত এই সব কারণে লোকসভা ভোটে কমিশনের ‘চাহিদা’ মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সংশয়ে রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, সেই জন্যই তিন লক্ষের পরিবর্তে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা হতে পারে দু’লক্ষের কমবেশি। তবে এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক চিঠি কমিশনে আসেনি। বৈঠকও শুরু হয়নি মন্ত্রক এবং কমিশনের। তবে কমিশনের আশ্বাস, নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত অবশ্যই হবে।
আরও পড়ুন: সামনে ভোট, নজরে মধ্যবিত্ত, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের জিএসটি এক ধাক্কায় ৮ থেকে ১ শতাংশ
কাশ্মীর, উত্তর-পূর্ব-সহ একাধিক রাজ্য এবং মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার নির্বাচনে হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি চালানো হয়। এ বারের ভোটে নজরদার হেলিকপ্টারের সংখ্যা আরও বাড়াতে চাইছে কমিশন।
২০১৪ সালে ৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত ন’দফায় লোকসভা ভোট হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে ছ’দফা, পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ এবং কাশ্মীরে চার দফায় নির্বাচন হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত, কমিশন নির্বাচনের কাজে লাগানোর জন্য কত বাহিনী পাবে, তার উপরে নির্ভর করছে, এ বার ভোট হবে ক’দফায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy