Due to negligence, Chiktan Castle in Ladakh has been reduced to Rubble dgtl
ladakh
লাদাখের এই দুর্গে ছিল ঘূর্ণায়মান ঘর, অতীতের গৌরব আজ ভৌতিক ধ্বংসাবশেষ
তিনি শত্রুদের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রাণভয়ে আশ্রয় নেন এই চিকতন অঞ্চলে। চিকতনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ রাজকুমার ঠিক করেন সেখানে একটা বড় প্রাসাদ বানাবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ১৩:৪২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
শত্রুভয়ে পলাতক যুবরাজের ভাল লেগেছিল তাঁর আশ্রয়স্থল। তাঁর ইচ্ছেয় সেখানেই তৈরি হয় দুর্গ। ক্রমে সেটাই হয়ে ওঠে স্থানীয় এলাকার গর্ব। অতীতের সেই গৌরবময় স্মারক আজ নিঃসঙ্গ ধ্বংসস্তূপ।
০২১৪
চিকতন কেল্লা পরিচিত ‘চিকতন খার’ নামেও। লাদাখের কার্গিল জেলার চিকতন গ্রামে নিঃসঙ্গ পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছে অতীতের খণ্ডহর। হিমশীতল বাতাস যেখানে বয়ে যায় অতীতের সাক্ষ্য হয়ে।
০৩১৪
কার্গিল শহর থেকে ৭৫ কিমি দূরে শ্রীনগর-লেহ জাতীয় সড়ক থেকে আরও উত্তরে গেলে পাওয়া যায় এই কেল্লার ভগ্নাবশেষ।
০৪১৪
একদিকে লেহ শহরের প্রাসাদ পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। অন্যদিকে চিকতন কেল্লার চিহ্ন রয়ে যায় পর্যটকদের অগোচরেই। অথচ, বলা হয়, এই কেল্লা ছিল লেহ-র প্রাসাদের তুলনায় আয়তনে বড় এবং বয়সেও প্রাচীন।
০৫১৪
এই কেল্লা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বাল্টিস্তানের রাজকুমার তাহতাহ খান। তিনি শত্রুদের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রাণভয়ে আশ্রয় নেন এই চিকতন অঞ্চলে। চিকতনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ রাজকুমার ঠিক করেন সেখানে একটা বড় প্রাসাদ বানাবেন।
০৬১৪
কিন্তু বড় প্রাসাদের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায়। অষ্টম শতাব্দীতে নিজের রাজ্য থেকে পলাতক ওই রাজকুমার চিকতনে ছোট দুর্গ বানাতে পেরেছিলেন। পরে সেই দুর্গ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় শাসকদের বাসস্থান হয়েছে। এর বাসিন্দাদের শাসনকালে আয়তনবৃদ্ধিও হয়েছে দুর্গের।
০৭১৪
সিন্ধুনদের উপত্যকায় তিব্বতি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি এই প্রাসাদ অতীতে ছিল লাদাখের গর্ব। বাল্টিস্তানের শিল্পীরা তিল তিল করে পাথর আর কাঠ দিয়ে বানিয়েছিলেন চিকতন দুর্গ।
০৮১৪
কাঠ দিয়ে সিলিং-য়ের পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছিল দুর্গের কাঠামো। বলা হয়, নিজের স্বর্ণযুগে এই প্রাসাদে ছিল একটি ঘূর্ণায়মান কক্ষ। পাহাড়ি উপত্যকার ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগের উপর নির্ভর করে ঘরটি ধীরে ধীরে ঘুরত।
০৯১৪
জম্মুর ডোগরা রাজবংশের আধিপত্য কায়েমের আগে চিকতন দুর্গ ছিল ক্ষমতার শীর্ষে। ক্রমে চিকতন গ্রামকে ডোগরা সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে যায়। ফলে চিকতন দুর্গ ধাপে ধাপে পরিত্যক্ত হতে শুরু করে।
১০১৪
বহু বার চিকতন দুর্গ শত্রুর আক্রমণের নিশানা হয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়ে পড়েনি। উনিশ শতকের শেষে চিকতন দুর্গ পুরোটাই পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
১১১৪
এই দুর্গ থেকে পাথর এনে কাজে লাগানো হয়েছে স্থানীয় একটি হাসপাতাল তৈরিতে। ফলে সময়ের তুলনায় আরও বেশি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় অতীতের লাদাখি গৌরব।
১২১৪
চিকতন দুর্গকে বাঁচাতে শেষে স্থানীয় বাসিন্দারা ভৌতিক গল্প প্রচার করে। যাতে ভগ্নাবশেষ থেকে দূরে রাখা যায় কৌতূহলীদের।
১৩১৪
কিন্তু প্রকৃতিকে তো আর ভূতের ভয় দেখানো যায় না। তার কোপে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়ে চিকতন দুর্গ। ধ্বংসলীলা আরও দ্রুত হয় সংশ্লিষ্ট মহলের অবহেলায়। চিকতন দুর্গকে সংরক্ষণ করার জন্য কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
১৪১৪
নির্জন প্রান্তরে একাকিত্বের ঘেরাটোপে অতীতের গৌরবগাথা মনে পড়ে স্বল্পশ্রুত এই ঐতিহাসিক সৌধের।
(ছবি:ফেসবুক)