কাচে চিড় নয়। যন্ত্র-বিভ্রাট নয়। নয় পাখির হামলাও। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন দু’জন বিমানসেবিকা। আর তারই জেরে দিল্লি থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ল কলকাতার বিমান। যে-সে বিমান নয়, স্বপ্নের উড়ান ড্রিমলাইনার!
২০৮ জন যাত্রীর মধ্যে বেশির ভাগই এসেছেন লন্ডন থেকে। তাঁরা শুক্রবার সকালেই পৌঁছে যান দিল্লি বিমানবন্দরে। ওই বিমানে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল তাঁদের। দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় সন্ধ্যা পর্যন্ত। অসুস্থ হয়ে পড়ে একটি শিশুও। এক বার বিমানবন্দর-চত্বরে এবং এক বার বিমানের ভিতরে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। পাইলট ঘোষণা করেন, তিনি অসহায়। অন্য দুই বিমানসেবিকার আসার কথা ছিল। তাঁরাও সময়মতো আসতে পারেননি।
ওই বিমানেই কলকাতায় আসেন তৃণমূলের বেশ কয়েক জন সাংসদ। এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনারের এই অবস্থা দেখে বিমানে বসেই বিমান পরিবহণের শীর্ষ কর্তাদের ফোন করেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজেও বিমান পরিবহণের সংসদীয় কমিটির সদস্য। বেলা সওয়া ২টোর উড়ান ছাড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পরে। সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বিমানমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানোর কথাও বলেছেন। তাঁর কথায়, “আগে দলের সঙ্গে কথা বলে নিই। অনেক যাত্রীর ফোন নম্বর নিয়েছি। সকলে মিলেই অভিযোগ জানাব।”
সাংসদ মুনমুন সেনও ওই বিমানে ছিলেন। তিনি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে অভিযোগ করবেন বলে জানান। ক্ষুব্ধ মুনমুন দিল্লি বিমানবন্দরে বলেন, “কেন দেরি, আমাদের তা জানানো হচ্ছে না। সিকিওরিটি চেক করে বসিয়ে রেখেছে। লন্ডন থেকে আসা অনেকে দীর্ঘ বিমানযাত্রার ধকলের পরে বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।”
লন্ডন থেকে পরিবার নিয়ে দেশে ফিরছিলেন চিকিৎসক শান্তনু কর। তিনি বলেন, “অত্যন্ত অপেশাদার মনোভাব। আমরা সকালে দিল্লিতে পৌঁছে যাই। কিন্তু তার পর থেকে কোনও ঘোষণাই নেই। কেন দেরি, জানানো হয়নি। কলকাতা পৌঁছনোর কথা ছিল সাড়ে ৪টেয়। ফিরলাম রাত ৯টার পরে।”
এমনটা হল কেন?
বিমান সংস্থা জানিয়েছে, আট জন বিমানসেবিকা লাগে ড্রিমলাইনারে। এ দিন শেষ মূহূর্তে দু’জন বিমানসেবিকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক জন সেবিকা প্রশিক্ষণের জন্য বাইরে আছেন। তা ছাড়া সব সেবিকা ড্রিমলাইনারের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। বিমান সংস্থার কর্তারা দুই বিকল্প সেবিকার খোঁজ শুরু করেন। সাংসদদের অবশ্য দেরির খবর আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল মোবাইলে। তাঁরা বিকেল ৪টে নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছে দেখেন, সকাল থেকে বসে আছেন অনেক যাত্রী।
সুখেন্দুবাবু জানান, এর পরেই দুই বিমানসেবিকার অনুপস্থিতির কথা ঘোষণা করা হয়। সাড়ে ৪টে নাগাদ বলা হয়, বিকল্প দুই সেবিকা পাওয়া গিয়েছে। যাত্রীদের তুলে দেওয়া হয় বিমানে। অভিযোগ, সেখানেও প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তখনই ককপিটের সামনে গিয়ে আবার শুরু হয় বিক্ষোভ। পাইলট অসহায়তার কথা ঘোষণা করেন। সুখেন্দুবাবু বলেন, “অভিযোগ জানাতে চাইলেও বিমানে সে-রকম কোনও ব্যবস্থা ছিল না। পরামর্শ দেওয়ার জন্য ‘সাজেশন ফর্ম’-ও ছিল মাত্র ১৪টি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy