এডস আক্রান্ত বলে প্রসূতিকে ছুঁলেন না চিকিৎসকরাও, মৃত্যু সন্তানের। — প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালে পড়ে থেকে এক এইচআইভি পজিটিভ প্রসূতি সন্তান হারালেন। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকেরা তাঁকে ছুঁয়েও দেখেননি। কারণ তিনি এডস আক্রান্ত। শেষে হাসপাতালের প্রধানের হস্তক্ষেপে প্রসূতির অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় সদ্যোজাতের। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের একটি সরকারি হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে এক সন্তানসম্ভবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। ঘটনার পরে ওই মহিলার বাবা বলেন, ‘‘আমরা ওকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই নার্সিংহোম বলে বিষয়টি জটিল হয়ে গিয়েছে। ২০ হাজার টাকা চাই। আমাদের কাছে অত টাকা ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েকে নিয়ে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসি। ছ’ঘণ্টা ধরে আমার মেয়ে বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাল, কিন্তু কোনও ডাক্তার এলেন না। মেয়েকে কেউ ছুঁয়েও দেখেননি। বাধ্য হয়ে আমি হাসপাতালের সুপার ম্যাডামকে ডাকি। তাঁর হস্তক্ষেপের পর মেয়ের অস্ত্রোপচার হয় রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।’’
ওই সময় মহিলার পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি এডস আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করে। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওঁকে হাসপাতালে ভর্তি করি দুপুর তিনটে নাগাদ। কিন্তু প্রসূতি এডস আক্রান্ত শোনার পর কেউ তাঁকে ছুঁয়ে দেখেনি। মেয়েটি রাত ন’টা পর্যন্ত অসহ্য যন্ত্রণায় কষ্ট পায়। কিন্তু কারও দেখা মেলেনি।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাদের তরফে গাফিলতি মানতে চাননি। হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত সুপার সঙ্গীতা আনেজা দাবি করেছেন, ওই মহিলা যে এডস আক্রান্ত, তা তাঁরা জানতেন না। একজন সাধারণ রোগীর মতোই সব করা হয়েছিল। গাফিলতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ‘‘রোগী এসেছিলেন তিনটে নাগাদ। রোগীর সঙ্গে যাঁরা এসেছিলেন, কেউ আমাদের জানাননি যে মহিলা এডস আক্রান্ত। তাঁর এডসের বিষয়টি না জানার ফলে আর পাঁচ জন সাধারণ প্রসূতির মতো পরিষেবা তাঁকেও দেওয়া হয়েছিল। ঘণ্টাখানেক পর আমরা জানতে পারি তিনি এডস আক্রান্ত। সেই সময়ও সমস্ত চিকিৎসক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। রাত ন’টা নাগাদ অস্ত্রোপচার হয়। কোথাও কোনও ভুল হয়নি। যদিও রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। সেই রিপোর্ট হাতে পেলেই দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, রোগের কথা না ভেবে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া যাঁদের দায়িত্ব, সেই চিকিৎসকরাই যদি রোগকে ভয় পেয়ে পালিয়ে যান, তা হলে রোগীর চিকিৎসা করবে কে? কুসংস্কারের অন্ধকার কাটবে কবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy