বিয়ের পরই গন্ডগোল বর ও কনের। —প্রতীকী চিত্র।
সাতপাক ঘোরা হয়ে গিয়েছে। বিয়েবাড়িতে সবাই আনন্দ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু এক মুহূর্তেই বদলে গেল পরিস্থিতি। বর-কনের কথা কাটাকাটি এবং তার অব্যবহিত পরে পাত্র এবং পাত্রীপক্ষের হাতাহাতিতে বিয়েবাড়ি হয়ে উঠল ‘যুদ্ধক্ষেত্র’! গন্ডগোলে অসুস্থ হলেন পাত্রীর মামা। শেষে বিয়ে ভেস্তে দিলেন পাত্রীই। বৌ ছাড়াই ঘরে ফিরে গেলেন পাত্র। মঙ্গলবার এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে ধূপগুড়ি বারোঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মধ্য বড়াগাড়ি এলাকার যুবতীর সঙ্গে ফুলবাড়ি এলাকার এক যুবকের সম্বন্ধ করে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সাত মাস ধরে দু’পক্ষের কথাবার্তা এগোয়। সোমবার ছিল তাঁদের বিয়ে। ওই দিন রাতে তাঁদের বিয়েও অনুষ্ঠানও মেটে ভালয় ভালয়। কিন্তু বাসি বিয়ের নিয়ম নিয়ে পাত্র এবং পাত্রীপক্ষের মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা। পাত্রীপক্ষের অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় পাত্রপক্ষের লোকজন এসে তাঁদের মারধর করেন। গুরুতর জখম হন পাত্রীর মামা। এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, এর পর পাত্রীকে নাকি জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পাত্রপক্ষ। দু’পক্ষের তুমুল লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বরকেই অস্বীকার করে বসলেন নতুন কনে। শেষে একাই ঘরে ফেরেন পাত্র।
পাত্রীপক্ষ অভিযোগ করেছে, পাত্রপক্ষের লোকজন তাঁদের উপর চড়াও হন। দুই পক্ষের ঝামেলার মধ্যে পাত্র নাকি পাত্রীকে ঘাড়ে তুলে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। পাত্রী বাধা দিলে তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরিস্থিতি এমন হয় যে নিমন্ত্রিতদের বাইরেও অনেক লোকজন এসে জড়ো হয়ে যান গন্ডগোল দেখতে। এর পর বিয়েতে বেঁকে বসেন পাত্রী। সাফ জানিয়ে দেন এই পরিবারে তিনি বিয়ে করবেন না। মেয়ের কথায় সায় দেন তাঁর বাবা-মা, আত্মীয়স্বজনও।
পাত্রীর কথায়, ‘‘ওঁরা মদ খেয়ে বিয়ে করতে এসে আমার আত্মীয়দের মারধর করেছেন। বিয়ের দিনই যাঁরা এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন, তাঁরা বিয়ের পর কী করবেন!’’ মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় আফসোস নেই বাবা-মায়েরও। তাঁদের কথায়, ‘‘মেয়ে বিয়ে না করে ভালই করেছে।’’
অন্য দিকে, ওই পাত্র জানান, ‘‘কথা ছিল দুই রাতে দুই বিয়ে হবে। কিন্তু ওঁরা একই রাতে বাসি বিয়ে দিয়ে দিচ্ছিল। তখন বাধা দেওয়ায় পিছন থেকে ওঁদের কিছু লোক ঝাঁপিয়ে পড়েন।’’ তাঁর দাবি, পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে কনেকে ঘাড়ে করে তুলে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলতে চেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন এ ভাবে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু পাত্রীপক্ষ সেটা ‘অন্য ভাবে’ নিয়েছে বলে দাবি করেন। পাশাপাশি মদ খেয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার এই ঘটনার কথা জানাজানি হতে ঘটনাস্থলে যায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। স্থানীয়রা পাত্র-সহ ৪ জনকে আটকে রেখে ক্ষতিপূরণের দাবি জানায়। এর পর পঞ্চায়েত প্রধানের উপস্থিতিতি সালিশি সভা বসে। শেষে এলাকার লোকজন পাত্রকে ছেড়ে দেন।
মেয়ের বিয়েতে এমন ঘটনা ঘটায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি পাত্রীর বাবা। বলেন, ‘‘ধার করে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। সব মাটি হয়ে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy