দীনেশ বজাজ। ছবি: পিটিআই।
একেবারে শেষ মুহূর্তে দৌড়তে দৌড়তে গিয়ে ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ বজাজ। সেই সঙ্গেই নাটকীয় হয়ে উঠল এ বারের রাজ্যসভা নির্বাচন।
রাজ্যসভায় বাংলা থেকে শূন্য হওয়া পাঁচ আসনের জন্য দীনেশকে ধরে মোট প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬। স্ক্রুটিনি-পর্বে কোনও সমস্যা না হলে এবং কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে রাজ্যসভার জন্য ভোট হবে। কী ভাবে তখন দীনেশ জিততে পারেন, তার নানা অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে সব শিবিরে। ‘নির্দল’ প্রার্থী হলেও দীনেশের মনোনয়নপত্রে ১০ জন প্রস্তাবকই তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়ক। যা দেখিয়ে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস বলছে, সরাসরি জয়ের অঙ্ক হাতে নেই বুঝে শাসক দল ‘নির্দল’ মুখ সামনে রেখে বিজেপির সমর্থন নিতে চাইছে। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, দীনেশ বজাজ তাঁদের দলীয় প্রার্থী নন। তৃণমূলের অন্য দুই প্রার্থী মৌসম বেনজির নূর ও অর্পিতা ঘোষও শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বিজেপির ভূমিকাও। আগের দিন মনোনয়নপত্র তুলে রাখলেও বিজেপি শেষ পর্যন্ত কোনও প্রার্থী দেয়নি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘যে দিন আমাদের শক্তি হবে, সে দিন প্রার্থী দেব।’’ কোনও দলকেই তাঁরা সমর্থন করছেন না বলে জানিয়েছেন দিলীপবাবু। তবে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর মন্তব্য, ‘‘আমরা তৃণমূল, বাম বা কংগ্রেসকে সমর্থন করব না। কিন্তু নির্দলকে সমর্থন করতে তো বাধা নেই! সংসদীয় বোর্ডের মত জেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত বিধায়ক এখন ৬ জন। এ ছাড়াও ১০ জন আছেন, যাঁরা অন্য দল থেকে বিজেপিতে গিয়েছেন। দীনেশের হার-জিতের অঙ্ক অনেকটাই নির্ভর করবে বিজেপির বিধায়কদের ভূমিকার উপরে।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে শুক্রবার দীনেশ বলেছেন, ‘‘আমি মমতাদি’কে বলেছিলাম, দাঁড়াতে চাই। তিনি বলেছেন, দাঁড়াও। আমার অতিরিক্ত ভোট তোমাকে দেব।’’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য সরাসরি দীনেশের ভোটের দায়িত্ব নিতে চাননি। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধে দীনেশ আমাদের সমর্থন চেয়েছিলেন। তাই আমাদের অতিরিক্ত ভোট তাঁকে দেব। বাকি কার সমর্থন কোথায় পাবেন, তা তিনি জানেন।’’
বিধানসভায় দলীয় শক্তির বিচারে চার প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে পারবে তৃণমূল। তার পরে তাদের হাতে থাকবে অতিরিক্ত ১১ বিধায়কের ভোট। রাজ্যসভায় জয়ের জন্য প্রার্থী পিছু প্রয়োজন ৪৯টি ভোট। তৃণমূলের অতিরিক্ত ১১, জোটসঙ্গী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুই, বাম ও কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যাওয়া ১৭ জনকে ধরলে দীনেশের ভোট দাঁড়াবে ৩০। বিজেপিতে চলে যাওয়া তৃণমূলের ৭ জনের ভোট হিসেবে আনলেও দীনেশের হচ্ছে ৩৭ ভোট। তর্কের খাতিরে, বাম ও কংগ্রেসের ৫১ থেকে যদি গোটাসাতেক ভোট দীনেশের পক্ষে ভাঙানো হয়, তখন জোটের প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য ও নির্দল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট সমান হতে পারে। এবং তখন দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের জেরে দীনেশ বেরিয়ে যেতে পারেন।
অঙ্কের প্রসঙ্গ তুলেই বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘বিজেপির সমর্থন যাতে নেওয়া যায়, তার জন্যই নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল।’’ বিরোধী দল কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর মতে, ‘‘জেতা নিশ্চিত হলে তৃণমূল তো নিজের নামেই পঞ্চম প্রার্থী দিত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy