ফাইল চিত্র।
চন্দ্রবাবু নায়ডু ফোন করেছিলেন গত রাতে। প্রধানমন্ত্রী ফোনে আসেননি। পাল্টা ফোন যখন গেল চন্দ্রবাবুর কাছে, তার মাঝে ১৭ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে।
আজ রাজস্থান থেকে ফেরার পথে কুড়ি মিনিট চন্দ্রবাবুর সঙ্গে কথা বললেন নরেন্দ্র মোদী। তবু প্রধানমন্ত্রীর আর্জি সত্ত্বেও কেন্দ্রে চন্দ্রবাবুর দুই মন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু এবং ওয়াই এস চৌধুরি ইস্তফা দিয়ে দিলেন। বেরিয়ে বললেন, এনডিএ-তে থাকছেন আপাতত। জোটে থেকেই অন্ধ্রের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে চাপ বাড়াবেন। তাঁদের আগেই অমিত শাহের নির্দেশে আজ সকালে অন্ধ্র সরকারে বিজেপির দুই মন্ত্রী ইস্তফা দেন।
সামনের বছর লোকসভা ও অন্ধ্র বিধানসভার ভোট। অনেকেই মনে করছেন, চতুর রাজনৈতিক চালে ভোটের আগে মোদীকেই খলনায়ক বানালেন চন্দ্রবাবু। নিজেকে শহিদ হিসেবে তুলে ধরে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া পুরোপুরি বিজেপির ঘাড়ে ঠেলে দিলেন। দেখাতে চাইলেন, তাঁর চেষ্টা সত্ত্বেও অন্ধ্রকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া নিয়ে অনীহা রয়েছে মোদীর।
বস্তুত, গোটা পর্বে সব দিক থেকে লাভবান হলেন চন্দ্রবাবুই। আর মোদীর কার্যত পুরোটাই লোকসান। ইস্তফা দিতে যাওয়া চন্দ্রবাবুর মন্ত্রীদের সামনে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হয়েছে যে, অন্ধ্রের প্রতি সুবিচার করবেন। জগন্মোহন রেড্ডির সঙ্গে তলায় তলায় রফার চেষ্টা চালাচ্ছিল বিজেপি। কিন্তু জগন শিবির বলছে, সে সম্ভাবনা দূর অস্ত্। এত দিন চন্দ্রবাবুর প্রতি তাঁদের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুই ছিল, রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা আদায় করতে না-পারা। এখন জগন যদি মোদীর সঙ্গে সমঝোতা করেন, তা হলে উল্টে জগনেরই ক্ষতি। শুধু অন্ধ্রের বিজেপি নেতৃত্ব চাইছিলেন, তেলুগু দেশমের সঙ্গে জোট ভেঙে রাজ্যে শক্তি বাড়াতে। গেরুয়া শিবিরের সামান্য প্রাপ্তি বলতে ওইটুকুই। আজ রাতে বিজেপির মন্ত্রীদের ইস্তফা গ্রহণ করেছেন চন্দ্রবাবু। দলীয় সূত্র বলছে, মুখে যা-ই বলুন, চন্দ্রবাবুর এনডিএ ছাড়াটাও সময়ের অপেক্ষা।
বিরোধীদের অনেকে অবশ্য বলছেন, লোক-দেখানো যুদ্ধ করছেন মোদী-চন্দ্রবাবু। দুই মন্ত্রীর ইস্তফাপত্রের সুর যথেষ্টই নরম। যদিও সেই ইস্তফা গ্রহণ করতে হলে ভোটের আগে ফের মন্ত্রিসভার রদবদল করতে হবে মোদীকে। তা ছাড়া, চিন্তা রয়েছে অন্য রাজ্যেও। নীতীশ কুমারের দলও এখন বিহারের বিশেষ মর্যাদার দাবি তুলছে। শিবসেনা তো উঠতে-বসতে হুমকিই দিচ্ছে বিজেপিকে। ফলে বহুমুখী অস্বস্তির মুখে মোদী।
কাল থেকে নাগপুরে শুরু হচ্ছে আরএসএসের বৈঠক। শোনা যাচ্ছে, মন্ত্রিসভার রদবদলের কথা মাথায় রেখে আরএসএস থেকে কিছু নেতাকে বিজেপিতেও পাঠানো হতে পারে। এখন সেই সব কিছু নিয়েও নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে মোদী-শাহকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy