ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর জানুয়ারির ৫ তারিখে প্রায় ১০০ সশস্ত্র দুষ্কৃতী যে গুন্ডামি করে গিয়েছিল, তার কোনও কিনারা করতে পারেনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুলিশ। এফআইআর হওয়ার পরে স্থানীয় থানা থেকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার হাতে। ঘটনার সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য বাঘা বাঘা পুলিশ অফিসারদের নিয়ে একটি বিশেষ দলও গড়া হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত এক জনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
জেএনইউয়ের সাধারণ ছাত্রদের অভিযোগ, পুলিশের এই চোখ বুজে থাকার একটাই কারণ— দুষ্কৃতীরা ছিল গৈরিক বাহিনীর। ‘পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশেই’ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে লাঠি ও রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারের নাগরিকত্ব বিল এবং সঙ্ঘ-অনুগত উপাচার্যের ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের উপরে। ছাত্রদের রক্ষা করতে এসে বেধড়ক মার খেতে হয়েছে অধ্যাপক এবং শিক্ষাকর্মীদেরও। চার ঘণ্টার এই একতরফা মারে রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয় ৩৬ জনকে— যাঁদের মধ্যে পড়ুয়া, অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা ছিলেন।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঢেউ এসে পৌঁছয়নি। তবু সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের সকলের মুখ ঢাকা ছিল মুখোশে। পুলিশের যুক্তি, সেই কারণেই তারা কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি। ধরাও যায়নি কাউকে। এই ঘটনার এক সপ্তাহ আগে দিল্লিরই জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখানোয় পুলিশের বিরাট বাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকে কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছিল। নিরীহ ছাত্রদের ভয়াবহ মারধর করেছিল পুলিশ। লাইব্রেরিতে পর্যন্ত ঢুকে সেখানে পড়াশোনা করা ছাত্রদের মাথায় লাঠি মেরে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেএনইউয়ে চার ঘণ্টা ধরে গুন্ডামি চলার মধ্যে পড়ুয়ারা অজস্র বার ফোন করে তা জানানো সত্ত্বেও পুলিশ ক্যাম্পাসে না-ঢুকে গেটের বাইরে বসে থাকে।
পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগের খোঁজখবরও করছে বিশেষ তদন্তকারী দলটি। সেই সময়ে দায়িত্বে থাকা ডিসিপি, এসিপি, স্থানীয় থানার অফিসার ও কনস্টেবলেরা এক সুরে অভিযোগ খণ্ডন করেছে তদন্তকারী দলের কাছে। খবর পেয়েও কেন পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢোকেনি— এই প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেছেন, ২৭ জন সাদা পোশাকের পুলিশ সারা দিন ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছিলেন। কিন্তু তাঁদের কাজ ছিল হাইকোর্টের নির্দেশে প্রশাসনিক ভবনের ১০০ মিটারের মধ্যে কেউ যাতে বিক্ষোভ না-করতে পারে, সেই বিষয়ে নজর রাখা। তাঁদের সঙ্গে অস্ত্রশস্ত্রও ছিল না যে ঘটনাস্থলে যাবেন। আর বাকি বাহিনী গেটে মোতায়েন ছিল, কারণ উপাচার্য এম জগদেশ কুমার তাঁদের সেখানেই থাকতে বলেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy