Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

চিঠি-পাল্টা চিঠিতে আরও চড়া কেজরী-জঙ্গ দ্বৈরথ

স্নায়ুযুদ্ধের শেষ নেই রাজধানীতে। শুরু হয়েছিল সেই শুক্রবারে। এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, অন্য দিকে উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ। দু’তরফের চাপানউতোর আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে গত চার দিনের যাবতীয় সরকারি নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিলেন উপ-রাজ্যপাল। অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুললেন উপ-রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৫ ০৩:৪৭
Share: Save:

স্নায়ুযুদ্ধের শেষ নেই রাজধানীতে।

শুরু হয়েছিল সেই শুক্রবারে। এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, অন্য দিকে উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ। দু’তরফের চাপানউতোর আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে গত চার দিনের যাবতীয় সরকারি নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিলেন উপ-রাজ্যপাল। অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুললেন উপ-রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে।

গত কাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দু’পক্ষের আলাদা আলাদা বৈঠকের পর ভাবা হয়েছিল, আজ থেকে সংঘাত হয়তো কমবে। কিন্তু সকালেই কেজরীবালকে চিঠি লিখে জঙ্গ স্পষ্ট করে দেন, নিজের অবস্থান থেকে একচুলও সরছেন না তিনি। চলতি বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল আমলা নিয়োগ নিয়ে। গত চার দিনে দিল্লিতে আমলা স্তরে বেশ কিছু রদবদলও হয়েছিল। সে দিকেই ইঙ্গিত করে কেজরীবালকে লেখা চিঠিতে জঙ্গ জানিয়েছেন, গত চার দিনে পিওন থেকে আমলা— যে সরকারি পদেই নিয়োগ হয়ে থাকুক না কেন, তা অবৈধ। কারণ, এই সমস্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হয়নি।

কেজরীবাল আজ বলেছেন, ‘‘সবাই আমাদের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে। কিন্তু মানুষ যতদিন আমাদের পাশে আছে, কোনও চিন্তা নেই।’’ প্রথম থেকেই তাঁদের অভিযোগ ছিল, গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারের কাজে অহেতুক মাথা গলাচ্ছেন উপ-রাজ্যপাল। সরকারের কাজে তিনি যাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, তার জন্য উপ-রাজ্যপালের দফতরে আমলাদের ফাইল না পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কেজরীবাল। তার বিরোধিতা করে জঙ্গ জানিয়েছেন, দিল্লি সরকারের যে কোনও বড় মাপের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্নে উপ-রাজ্যপাল চাইলে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

এরই মধ্যে আজ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রকাশ্যে রাজনাথ জানিয়েছেন, দিল্লি নয়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অন্য বিষয়ে আলোচনা করতেই গিয়েছিলেন তিনি। তবে দিল্লি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আশা করব দু’পক্ষই সমাধানসূত্র খুঁজে পাবে।’’ আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করেন রাজনাথ। সূত্রের খবর, মোদী সমস্ত মন্ত্রীকে এ বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

অনেকে মনে করছেন, এক জন অস্থায়ী মুখ্যসচিবের নিয়োগ ঘিরে যে ভাবে কেজরীবাল সরাসরি ক্ষমতার লড়াইয়ে নেমেছেন, তার পিছনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের রাজধানী হওয়ায় দিল্লির সরকারের অধিকাংশ ক্ষমতাই রয়েছে কেন্দ্রের হাতে। নির্বাচনী প্রচারে দিল্লিকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন কেজরীবাল। সূত্রের খবর, অদূর ভবিষ্যতে এ নিয়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে আম আদমি পার্টি। তাই কেন্দ্রের নির্দেশে উপ-রাজ্যপাল কী ভাবে নির্বাচিত সরকারের কাজে নাক গলাচ্ছেন, তা দিল্লিবাসীর সামনে আপ নেতৃত্ব তুলে ধরতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে এই স্নায়ুযুদ্ধেরই একটি পর্ব নিয়ে আজ দিল্লি হাইকোর্টে সমালোচিত হয়েছে কেজরীবাল সরকার। উপ-রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে অস্থায়ী মুখ্যসচিব পদে শকুন্তলা গামলিনের (যাঁকে নিয়ে আপত্তি কেজরীবালের) নিয়োগপত্র জারি করে দিল্লি সরকারের কোপের মুখে পড়েছিলেন কর্মিবর্গ দফতরের সচিব অনিন্দ্য মজুমদার। তাঁর দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজ একটি মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করে জানায়, কোনও মামলার শুনানিতেই দিল্লি সরকারের তরফে কেউ হাজির থাকেন না। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আমরা একটা ভাল সরকার চেয়েছিলাম। দেখুন কী হয়েছে। কাজ করা আর দরকারি উত্তরগুলো দেওয়ার বদলে আপনারা অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy