Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫
National news

দিল্লির রাস্তায় দেড় ঘণ্টা পড়ে থেকে মৃত্যু! কেউ দেখল, কেউ পকেট মারল

রাজধানী দিল্লির এক চরম অমানবিক ছবি ধরে দিল রাস্তায় লাগানো ছোট্ট ক্যামেরা। গাড়ির ধাক্কায় জখম, মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা একটা মানুষ পড়ে রইলেন রাস্তায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে। তার পর কত জন এলেন গেলেন, কিন্তু দেখেও দেখলেন না।

দুর্ঘটনার পরে পড়ে রয়েছেন মতিবুল। ছবি: টুইটার।

দুর্ঘটনার পরে পড়ে রয়েছেন মতিবুল। ছবি: টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ১৬:৪৮
Share: Save:

রাজধানী দিল্লির এক চরম অমানবিক ছবি ধরে দিল রাস্তায় লাগানো ছোট্ট ক্যামেরা। গাড়ির ধাক্কায় জখম, মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা একটা মানুষ পড়ে রইলেন রাস্তায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে। তার পর কত জন এলেন গেলেন, কিন্তু দেখেও দেখলেন না। যিনি কাছে গিয়ে দেখলেন তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মরতে বসা মানুষটার পকেট সাফ করা। করলেনও। আর এই চরম অমানবিক ঔদাসীন্যের বলি হয়ে, রাস্তাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন আহত মানুষটা।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ। নয়াদিল্লির সুভাষ নগর এলাকায়। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে লাগানো একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় দুর্ঘটনা এবং তার পরের যে ছবি ধরা পড়েছে, তা দেখলে চমকে উঠবেন আপনিও। নাইট ডিউটি সেরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন বছর চল্লিশের মতিবুল। সুভাষ নগরের কাছে পিছন থেকে আসা একটি টেম্পো আচমকা সজোরে তাঁকে ধাক্কা মারে। রাস্তার পাশেই ছিটকে পড়েন মতিবুল। রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে থাকেন। সিসিটিভিতে দেখা যায়, ঘাতক গাড়িটিও কিছুটা দূর গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। গাড়ি থেকে চালক নীচে নামেন। হেঁটে মতিবুলের কাছে আসেন। তারপর নিজের গাড়ির কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না দেখে নিয়ে দিব্যি গাড়ি চালিয়ে চলে যান।

আরও পড়ুন: ছ’মিনিট বন্ধ হৃদস্পন্দন, মৃত্যুমুখ থেকে ফিরলেন হানিফ মহম্মদ

তারপরও অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৪০টি গাড়ি, ৮২টি তিনচাকা গাড়ি এবং ৪৫ জন পথচারী তাঁর পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে ওই এলাকায় কর্তব্যরত একটি আপৎকালীন সেবার জন্য পুলিশের গাড়িও ছিল। তখনও বেঁচে ছিলেন মতিবুল। কিন্তু পথচলতি কোনও মানুষই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। দেখেছেন, দেখে পাশ কাটিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে বা হয়ত দেখতে দেখতেই চলে গেছেন যে যাঁর কাজে। এর মধ্যেই রাস্তা ফাঁকা থাকার সুযোগ পেয়ে এক যুবক মতিবুলের মোবাইলটা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ছবিও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।

পরে খবর পেয়ে সকাল ৭টা নাগাদ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে জীবিত নয়, উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, অত্যধিক রক্তক্ষরণেই তিনি মারা যান। অর্থাত্ সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে হয়ত বেঁচে যেতেন তিনি।

দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরায় এই ছবি দেখে হতভম্ব হয়ে যান পুলিশ কর্মীরা। ঘাতক গাড়ির চালক এবং ওই মোবাইল চোরের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। কিন্তু এতটা অমানবিক কী করে হতে পারে মানুষ? যে ক্যামেরার চোখ দেড় ঘণ্টা ধরে দেখে গেছে এই ধারাবাহিক দৃশ্য, সেই যন্ত্রের ভাষা থাকলে এই প্রশ্নটা করতই করত!

দেখুন ভিডিও:

অন্য বিষয়গুলি:

accident delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy