গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
চিনকে ‘পাশে নিয়ে’ কাবুলের মাটিকে সন্ত্রাসমুক্ত করার বার্তা দিল ভারত। আজ ‘ব্রিকস’ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বৈঠকের পর ‘দিল্লি ঘোষণাপত্র’কে কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দেখাতে চাইছে সাউথ ব্লক।
তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পরই স্বীকৃতি দিয়েছিল বেজিং। মস্কোও তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তান সংক্রান্ত প্রস্তাবে ভোটাভুটি বয়কট করে চিন এবং রাশিয়া। তবে ‘ব্রিকস’ গোষ্ঠীর (ভারত, রাশিয়া, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল) পঞ্চদশ শীর্ষ বৈঠকের পর প্রকাশিত ঘোষণাপত্রে আফগানিস্তানের মাটিকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার হতে না দেওয়ার আহ্বান দেওয়া রয়েছে। সাউথ ব্লক ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, গত এক মাসে পশ্চিম এশিয়ার পট পরিবর্তনে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল ভারতের। আজ চিন এবং রাশিয়াকে সঙ্গে নিয়ে আফগানিস্তান সংক্রান্ত নির্দিষ্ট সন্ত্রাস-বিরোধী নথি তৈরি করতে পারায়, কিছুটা কূটনৈতিক স্বস্তি মিলল বলেই দাবি বিদেশ মন্ত্রকের।
যৌথ ঘোষণাপত্রে যা বলা হয়েছে, তা মূলত ভারতেরই উদ্বেগ— এমনই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক। আফগানিস্তান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘আমরা চাই হিংসা বন্ধ হোক, পরিস্থিতি সামলানো হোক শান্তিপূর্ণ উপায়ে। দেশে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা স্থাপনের জন্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা শুরু করায় জোর দিতে চাইছি আমরা। পাশাপাশি হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছি।’ এ-ও বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তানের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির অন্য দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো এবং সেই ভূখণ্ডকে জঙ্গিদের স্বর্গোদ্যান করে তোলার বিরোধী আমরা। সেখানে নারী, শিশু, সংখ্যালঘুদের মানবাধিকারকে গুরুত্ব দিতে চাইছি আমরা।’ ঘোষণাপত্রে সই করেছে চিন এবং রাশিয়াও।
কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানকেও জোরালো বার্তা দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল নয়াদিল্লির। এ দিনের ঘোষণাপত্রে পাকিস্তানের নাম না করে বলা হয়েছে, ‘যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদের ঘোর নিন্দা করছি আমরা। তা সে যে কারণই দেখানো হোক বা যে-ই করুক না কেন। আমরা যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। তার মধ্যে রয়েছে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস, জঙ্গিদের অর্থ জোগানো এবং তাদের জন্য স্বর্গোদ্যান তৈরি করে দেওয়া।’
আর এক সপ্তাহ পরেই এসসিও শীর্ষ সম্মেলন, যেখানে চিন এবং ভারত ছাড়াও থাকবে পাকিস্তান। তার ১০ দিন পরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তালিবান সরকার গঠনের পিছনে হক্কানি গোষ্ঠী এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর ছাপ যে ভাবে প্রকট হয়ে উঠছে, তাতে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য তৈরি করা ছাড়া উপায় নেই নয়াদিল্লির। আর সেই জোটে রাশিয়া এবং চিন ভারতের কাছে ভূকৌশলগত কারণেই আমেরিকার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বৈঠকে জানিয়েছেন, হক্কানি নেটওয়ার্ককে ব্যবহার করে আইএসআই কী ভাবে অতীতে ভারতীয় দূতাবাস এবং ভারতীয় কর্মীদের নিশানা করেছে। এ দিন আফগানিস্তানে সন্ত্রাসের বিরোধিতার সুরটি বেঁধে দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, “আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের ফলে আফগানিস্তানে নতুন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে কী ভাবে প্রভাবিত করবে, তা স্পষ্ট নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy