Daily Wage Earner Turns into a Successful Farmer dgtl
Gansu Mahato
৫০ টাকা রোজের দিনমজুর ছিলেন, এখন বার্ষিক আয় ৫০ লাখ! কী করে জানেন?
ঝাড়খণ্ডের সড়মা গ্রামের গানসুর বাবাও ছিলেন কৃষক। চাষ করতেন ৯ একর জমিতে। কিন্তু তাতেও বড় সংসারের মুখে সারা বছর খাবার জোটাতে পারতেন না। বাবার পাশে দাঁড়াতে পরিবারের বড় ছেলে গানসু দ্বাদশ শ্রেণির পরে স্কুলের পাট চুকিয়ে দিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ১১:০৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
ছিলেন দিনমজুর। দৈনিক আয় ছিল ৫০ টাকা। আর এখন বার্ষিক উপার্জন ৫০ লাখ টাকা। ঝাড়খণ্ডের গানসু মাহাতোর জীবন বদলে দিয়েছে ক্যাপসিকাম।
০২১২
ঝাড়খণ্ডের সড়মা গ্রামের গানসুর বাবাও ছিলেন কৃষক। চাষ করতেন ৯ একর জমিতে। কিন্তু বড় জমি হলে কী হবে! অনুর্বতার কারণে ফলন আশানুরূপ ছিল না। ফলে বড় সংসারের মুখে সারা বছর খাবার জোটাতে পারতেন না। বাবার পাশে দাঁড়াতে পরিবারের বড় ছেলে গানসু দ্বাদশ শ্রেণির পরে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দিলেন।
০৩১২
১৯৯১ সালে গানসু দিনমজুর হিসেবে কাজ নিলেন রাঁচীতে। মজুরি ছিল দৈনিক ৫০ টাকা। সড়মা থেকে রাঁচী অবধি রোজ ৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতেন সাইকেলে। প্রতীকী চিত্র।
০৪১২
বাড়তি দুটো পয়সা এল ঠিকই। কিন্তু গানসু বুঝলেন, দিনমজুরের জীবন কার্যত ক্রীতদাসেরই মতো। একদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরে সামান্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তার জন্য জুটেছিল অশ্রাব্য গালিগালাজ। প্রতীকী চিত্র।
০৫১২
এরপরই ঠিক করে নেন গানসু, আর এই কাজ নয়। এ বার থেকে চাষই করবেন। তিন বছর দিনমজুরির পরে ফিরে এলেন নিজেদের পতিত জমিতে। দিন রাত এক করে তাকে উর্বর করে তুললেন। শুরু করলেন ‘গোড়া ধান’ চাষ।
০৬১২
১৯৯৮ সালে গানসু ক্যাপসিকাম চাষ করলেন। মাত্র ০.১৫ একর জমিতে ক্যাপসিকামের ফলন তাঁকে সে বছর দিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। নতুন আশা দেখলেন গানসু। শুরু করলেন নানা রকমের ফসল চাষ।
০৭১২
২০১৫ সালে ছত্তীসগঢ়ে সরকারি প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ পেলেন গানসু। পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণে যোগ দিতে তাঁর খরচ হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা। তখন সেই টাকা যোগাড় করতে সমস্যা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এখন তাঁর মনে হয়, ওই টাকা দিতে পেরেছিলেন বলেই আজ বছরে ৫০ লাখ টাকা উপার্জন করতে পারেন।
০৮১২
প্রশিক্ষণে গিয়ে হাতেকলমে কাজ শিখলেন গানসু। জানলেন জৈব কৃষিকাজের-এর অ-আ-ক-খ। বুঝলেন, খুব কম বিনিয়োগেও ভারী উপার্জন হতে পারে। পতিত অনাবাদী জমি কোনও কাজের নয়, ভেঙে গেল সেই ভুল ধারণাও।
কৃষিঋণ নিয়ে আমূল বদলে ফেললেন জমির সেচ ব্যবস্থা। তৈরি করলেন গ্রিন হাউজ এবং পলি হাউজ। পলি হাউজের সাহায্যে এক সঙ্গে বহু রকমের সবজি ফলানো যায়।
১১১২
ধীরে ধীরে রকমারি ফসল চাষ শুরু করলেন তিনি। প্রথমে তরমুজ, তারপরে ক্যাপসিকাম, এরপর বেগুন, টমেটো, শশা। তারপর জারবেরা ফুল। গানসুর বার্ষিক টার্ন ওভার দাঁড়াল ৫০ লক্ষ টাকা। লভ্যাংশ ২০ লক্ষ টাকা।
১২১২
শুধু নিজেই নন। গানসু চান তাঁর মতো আরও অনেক চাষি উপকৃত হোক। তিনি ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার চাষিকে শিখিয়েছেন জৈব কৃষিকাজের খুঁটিনাটি। তাঁর বি এড উত্তীর্ণ বড় মেয়ে এবং ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ছেলেও সাহায্য করেন চাষের কাজে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া