Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Gansu Mahato

৫০ টাকা রোজের দিনমজুর ছিলেন, এখন বার্ষিক আয় ৫০ লাখ! কী করে জানেন?

ঝাড়খণ্ডের সড়মা গ্রামের গানসুর বাবাও ছিলেন কৃষক। চাষ করতেন ৯ একর জমিতে। কিন্তু তাতেও বড় সংসারের মুখে সারা বছর খাবার জোটাতে পারতেন না। বাবার পাশে দাঁড়াতে পরিবারের বড় ছেলে গানসু দ্বাদশ শ্রেণির পরে স্কুলের পাট চুকিয়ে দিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ১১:০৮
Share: Save:
০১ ১২
ছিলেন দিনমজুর। দৈনিক আয় ছিল ৫০ টাকা। আর এখন বার্ষিক উপার্জন ৫০ লাখ টাকা। ঝাড়খণ্ডের গানসু মাহাতোর জীবন বদলে দিয়েছে ক্যাপসিকাম।

ছিলেন দিনমজুর। দৈনিক আয় ছিল ৫০ টাকা। আর এখন বার্ষিক উপার্জন ৫০ লাখ টাকা। ঝাড়খণ্ডের গানসু মাহাতোর জীবন বদলে দিয়েছে ক্যাপসিকাম।

০২ ১২
ঝাড়খণ্ডের সড়মা গ্রামের গানসুর বাবাও ছিলেন কৃষক। চাষ করতেন ৯ একর জমিতে। কিন্তু বড় জমি হলে কী হবে!  অনুর্বতার কারণে ফলন আশানুরূপ ছিল না। ফলে বড় সংসারের মুখে সারা বছর খাবার জোটাতে পারতেন না। বাবার পাশে দাঁড়াতে পরিবারের বড় ছেলে গানসু দ্বাদশ শ্রেণির পরে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দিলেন।

ঝাড়খণ্ডের সড়মা গ্রামের গানসুর বাবাও ছিলেন কৃষক। চাষ করতেন ৯ একর জমিতে। কিন্তু বড় জমি হলে কী হবে! অনুর্বতার কারণে ফলন আশানুরূপ ছিল না। ফলে বড় সংসারের মুখে সারা বছর খাবার জোটাতে পারতেন না। বাবার পাশে দাঁড়াতে পরিবারের বড় ছেলে গানসু দ্বাদশ শ্রেণির পরে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দিলেন।

০৩ ১২
১৯৯১ সালে গানসু দিনমজুর হিসেবে কাজ নিলেন রাঁচীতে। মজুরি ছিল দৈনিক ৫০ টাকা। সড়মা থেকে রাঁচী অবধি রোজ ৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতেন সাইকেলে।   প্রতীকী চিত্র।

১৯৯১ সালে গানসু দিনমজুর হিসেবে কাজ নিলেন রাঁচীতে। মজুরি ছিল দৈনিক ৫০ টাকা। সড়মা থেকে রাঁচী অবধি রোজ ৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতেন সাইকেলে। প্রতীকী চিত্র।

০৪ ১২
বাড়তি দুটো পয়সা এল ঠিকই। কিন্তু গানসু বুঝলেন, দিনমজুরের জীবন কার্যত ক্রীতদাসেরই মতো। একদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরে সামান্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তার জন্য জুটেছিল অশ্রাব্য গালিগালাজ।  প্রতীকী চিত্র।

বাড়তি দুটো পয়সা এল ঠিকই। কিন্তু গানসু বুঝলেন, দিনমজুরের জীবন কার্যত ক্রীতদাসেরই মতো। একদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরে সামান্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তার জন্য জুটেছিল অশ্রাব্য গালিগালাজ। প্রতীকী চিত্র।

০৫ ১২
এরপরই ঠিক করে নেন গানসু, আর এই কাজ নয়। এ বার থেকে চাষই করবেন। তিন বছর দিনমজুরির পরে ফিরে এলেন নিজেদের পতিত জমিতে। দিন রাত এক করে তাকে উর্বর করে তুললেন। শুরু করলেন ‘গোড়া ধান’ চাষ।

এরপরই ঠিক করে নেন গানসু, আর এই কাজ নয়। এ বার থেকে চাষই করবেন। তিন বছর দিনমজুরির পরে ফিরে এলেন নিজেদের পতিত জমিতে। দিন রাত এক করে তাকে উর্বর করে তুললেন। শুরু করলেন ‘গোড়া ধান’ চাষ।

০৬ ১২
১৯৯৮ সালে গানসু ক্যাপসিকাম চাষ করলেন। মাত্র ০.১৫ একর জমিতে ক্যাপসিকামের ফলন তাঁকে সে বছর দিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। নতুন আশা দেখলেন গানসু। শুরু করলেন নানা রকমের ফসল চাষ।

১৯৯৮ সালে গানসু ক্যাপসিকাম চাষ করলেন। মাত্র ০.১৫ একর জমিতে ক্যাপসিকামের ফলন তাঁকে সে বছর দিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। নতুন আশা দেখলেন গানসু। শুরু করলেন নানা রকমের ফসল চাষ।

০৭ ১২
২০১৫ সালে ছত্তীসগঢ়ে সরকারি প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ পেলেন গানসু। পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণে যোগ দিতে তাঁর খরচ হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা। তখন সেই টাকা যোগাড় করতে সমস্যা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এখন তাঁর মনে হয়, ওই টাকা দিতে পেরেছিলেন বলেই আজ বছরে ৫০ লাখ টাকা উপার্জন করতে পারেন।

২০১৫ সালে ছত্তীসগঢ়ে সরকারি প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ পেলেন গানসু। পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণে যোগ দিতে তাঁর খরচ হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা। তখন সেই টাকা যোগাড় করতে সমস্যা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এখন তাঁর মনে হয়, ওই টাকা দিতে পেরেছিলেন বলেই আজ বছরে ৫০ লাখ টাকা উপার্জন করতে পারেন।

০৮ ১২
প্রশিক্ষণে গিয়ে হাতেকলমে কাজ শিখলেন গানসু। জানলেন জৈব কৃষিকাজের-এর অ-আ-ক-খ। বুঝলেন, খুব কম বিনিয়োগেও ভারী উপার্জন হতে পারে। পতিত অনাবাদী জমি কোনও কাজের নয়, ভেঙে গেল সেই ভুল ধারণাও।

প্রশিক্ষণে গিয়ে হাতেকলমে কাজ শিখলেন গানসু। জানলেন জৈব কৃষিকাজের-এর অ-আ-ক-খ। বুঝলেন, খুব কম বিনিয়োগেও ভারী উপার্জন হতে পারে। পতিত অনাবাদী জমি কোনও কাজের নয়, ভেঙে গেল সেই ভুল ধারণাও।

০৯ ১২
প্রশিক্ষণফেরত গানসু পুরোপুরি জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ শুরু করে দিলেন। প্রথমেই সরিয়ে রাখলেন রাসায়নিক সার। জমিকে দিলেন গোবর-সার। উর্বর মাটিতে দ্রুতগতিতে বাড়ল ফলন।

প্রশিক্ষণফেরত গানসু পুরোপুরি জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ শুরু করে দিলেন। প্রথমেই সরিয়ে রাখলেন রাসায়নিক সার। জমিকে দিলেন গোবর-সার। উর্বর মাটিতে দ্রুতগতিতে বাড়ল ফলন।

১০ ১২
কৃষিঋণ নিয়ে আমূল বদলে ফেললেন জমির সেচ ব্যবস্থা। তৈরি করলেন গ্রিন হাউজ এবং পলি হাউজ। পলি হাউজের সাহায্যে এক সঙ্গে বহু রকমের সবজি ফলানো যায়।

কৃষিঋণ নিয়ে আমূল বদলে ফেললেন জমির সেচ ব্যবস্থা। তৈরি করলেন গ্রিন হাউজ এবং পলি হাউজ। পলি হাউজের সাহায্যে এক সঙ্গে বহু রকমের সবজি ফলানো যায়।

১১ ১২
ধীরে ধীরে রকমারি ফসল চাষ শুরু করলেন তিনি। প্রথমে তরমুজ, তারপরে ক্যাপসিকাম, এরপর বেগুন, টমেটো, শশা। তারপর জারবেরা ফুল। গানসুর বার্ষিক টার্ন ওভার দাঁড়াল ৫০ লক্ষ টাকা। লভ্যাংশ ২০ লক্ষ টাকা।

ধীরে ধীরে রকমারি ফসল চাষ শুরু করলেন তিনি। প্রথমে তরমুজ, তারপরে ক্যাপসিকাম, এরপর বেগুন, টমেটো, শশা। তারপর জারবেরা ফুল। গানসুর বার্ষিক টার্ন ওভার দাঁড়াল ৫০ লক্ষ টাকা। লভ্যাংশ ২০ লক্ষ টাকা।

১২ ১২
শুধু নিজেই নন। গানসু চান তাঁর মতো আরও অনেক চাষি উপকৃত হোক। তিনি ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার চাষিকে শিখিয়েছেন জৈব কৃষিকাজের খুঁটিনাটি। তাঁর বি এড উত্তীর্ণ বড় মেয়ে এবং ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ছেলেও সাহায্য করেন চাষের কাজে।   ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

শুধু নিজেই নন। গানসু চান তাঁর মতো আরও অনেক চাষি উপকৃত হোক। তিনি ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার চাষিকে শিখিয়েছেন জৈব কৃষিকাজের খুঁটিনাটি। তাঁর বি এড উত্তীর্ণ বড় মেয়ে এবং ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ছেলেও সাহায্য করেন চাষের কাজে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy