Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
cyclone

আমপানের তুলনা ৯৯-এর সুপার সাইক্লোনের সঙ্গে, বিধ্বংসী সেই ঝড়ের গতি মাপতে ব্যর্থ হয় যন্ত্রও

শক্তি সঞ্চয় করে সেই নিম্নচাপ পরিণত হয় মহা ঘূর্ণিঝড়ে। ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পারাদ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমে জগৎসিংহপুর জেলা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ১৪:০৭
Share: Save:
০১ ১৭
ঝড় আসছে, পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু সেই মহা ঘূর্ণিঝড় যে আক্ষরিক অর্থেই ছিন্নভিন্ন করে দেবে গোটা রাজ্যকে, দুঃস্বপ্নেও ভাবতেও পারেননি উৎকলবাসী। আগুয়ান আমপানের আতঙ্ক মনে করিয়ে দিল সেই দুঃসহ স্মৃতিকে।

ঝড় আসছে, পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু সেই মহা ঘূর্ণিঝড় যে আক্ষরিক অর্থেই ছিন্নভিন্ন করে দেবে গোটা রাজ্যকে, দুঃস্বপ্নেও ভাবতেও পারেননি উৎকলবাসী। আগুয়ান আমপানের আতঙ্ক মনে করিয়ে দিল সেই দুঃসহ স্মৃতিকে।

০২ ১৭
পোশাকি নাম ‘১৯৯৯ ওড়িশা সাইক্লোন’। ২১ বছর আগে ওই বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগ রাতারাতি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল গোটা রাজ্যকে।

পোশাকি নাম ‘১৯৯৯ ওড়িশা সাইক্লোন’। ২১ বছর আগে ওই বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগ রাতারাতি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল গোটা রাজ্যকে।

০৩ ১৭
১৯৯৯-এর ২৯ অক্টোবর ঘণ্টায় ৩০০ মাইল গতিবেগে এই সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়েছিল ওড়িশায়। বলা হয়, ভারতের ইতিহাসে এটাই গত শতকের বিধ্বংসীতম ঘূর্ণিঝড়।

১৯৯৯-এর ২৯ অক্টোবর ঘণ্টায় ৩০০ মাইল গতিবেগে এই সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়েছিল ওড়িশায়। বলা হয়, ভারতের ইতিহাসে এটাই গত শতকের বিধ্বংসীতম ঘূর্ণিঝড়।

০৪ ১৭
তাইল্যান্ড উপসাগরে নিছক নিম্নচাপ হিসেবেই এর জন্ম। হাওয়া অফিসের রাডারে সেই নিম্নচাপের অস্তিত্ব ধরা পড়ে ২৪ অক্টোবর সকালে।

তাইল্যান্ড উপসাগরে নিছক নিম্নচাপ হিসেবেই এর জন্ম। হাওয়া অফিসের রাডারে সেই নিম্নচাপের অস্তিত্ব ধরা পড়ে ২৪ অক্টোবর সকালে।

০৫ ১৭
তারপর পাঁচদিনের মধ্যে‌ শক্তি সঞ্চয় করে সেই নিম্নচাপ পরিণত হয় মহা ঘূর্ণিঝড়ে। ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পারাদ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমে জগৎসিংহপুর জেলা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে।

তারপর পাঁচদিনের মধ্যে‌ শক্তি সঞ্চয় করে সেই নিম্নচাপ পরিণত হয় মহা ঘূর্ণিঝড়ে। ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পারাদ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমে জগৎসিংহপুর জেলা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে।

০৬ ১৭
মহাঘূর্ণিঝড়ের জেরে ৩৬ ঘণ্টা ধরে প্রায় ২৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গিয়েছিল বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপড়া, জগৎসিংহপুর, পুরী এবং গঞ্জাম জেলার উপর দিয়ে।

মহাঘূর্ণিঝড়ের জেরে ৩৬ ঘণ্টা ধরে প্রায় ২৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গিয়েছিল বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপড়া, জগৎসিংহপুর, পুরী এবং গঞ্জাম জেলার উপর দিয়ে।

০৭ ১৭
ভূভাগে প্রবেশ করার পরে মহা ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র বা আই অব স্টর্ম ছিল পারাদ্বীপ। দুর্যোগের জেরে এতটাই ছিল বাতাসের তীব্রতা, যে হাওয়া অফিসের বাতাসের গতিবেগ মাপার যন্ত্র অ্যানিমোমিটার শেষ অবধি একটা মুহূর্তে গতিবেগ মাপতে ব্যর্থ হয়েছিল।

ভূভাগে প্রবেশ করার পরে মহা ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র বা আই অব স্টর্ম ছিল পারাদ্বীপ। দুর্যোগের জেরে এতটাই ছিল বাতাসের তীব্রতা, যে হাওয়া অফিসের বাতাসের গতিবেগ মাপার যন্ত্র অ্যানিমোমিটার শেষ অবধি একটা মুহূর্তে গতিবেগ মাপতে ব্যর্থ হয়েছিল।

০৮ ১৭
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত চলেছিল । ৭ মিটার থেকে ১০ মিটার অবধি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল ২০ কিমি অবধি এলাকা।

এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত চলেছিল । ৭ মিটার থেকে ১০ মিটার অবধি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল ২০ কিমি অবধি এলাকা।

০৯ ১৭
সুপার সাইক্লোনের জেরে ভারী বর্ষণে কটক, ভুবনেশ্বর-সহ ওড়িশার ১৪ টি উপকূলীয় জেলা, উপকূল সংলগ্ন ২৮ টি শহর চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

সুপার সাইক্লোনের জেরে ভারী বর্ষণে কটক, ভুবনেশ্বর-সহ ওড়িশার ১৪ টি উপকূলীয় জেলা, উপকূল সংলগ্ন ২৮ টি শহর চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

১০ ১৭
সরকারি তথ্য অনুসারে এই ঝড়ের তাণ্ডবলীলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৯,৮৮৫ জন। যদিও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছিল ৫০ হাজারে। শুধু জগৎসিংহপুর জেলাতেই মৃত্যু হয় ৮১১৯ জনের। গোটা ওড়িশায় অনাথ হয়েছিল ১,৫০০ জন শিশু।

সরকারি তথ্য অনুসারে এই ঝড়ের তাণ্ডবলীলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৯,৮৮৫ জন। যদিও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছিল ৫০ হাজারে। শুধু জগৎসিংহপুর জেলাতেই মৃত্যু হয় ৮১১৯ জনের। গোটা ওড়িশায় অনাথ হয়েছিল ১,৫০০ জন শিশু।

১১ ১৭
ঘূর্ণিঝড়ের প্রলয়ে আহত হন ৭,৫০৫ জন। মারা যায় বা নিখোঁজ হয়ে যায় তিন লক্ষের বেশি গবাদি পশু।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রলয়ে আহত হন ৭,৫০৫ জন। মারা যায় বা নিখোঁজ হয়ে যায় তিন লক্ষের বেশি গবাদি পশু।

১২ ১৭
ওড়িশা জুড়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ছিল আরও গভীর। সারা রাজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হন অন্তত ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ।

ওড়িশা জুড়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ছিল আরও গভীর। সারা রাজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হন অন্তত ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ।

১৩ ১৭
উপকূলীয় অংশে ৩৩ লক্ষের বেশি ঘরবাড়ি কোনও না কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার মধ্যে ২৩ হাজারের বেশি বাড়ি জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল। প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ বাড়ি ঝড়ে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সাড়ে ১৬ লক্ষের বেশি ঘরবাড়ি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ন’লক্ষ আশ্রয়।

উপকূলীয় অংশে ৩৩ লক্ষের বেশি ঘরবাড়ি কোনও না কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার মধ্যে ২৩ হাজারের বেশি বাড়ি জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল। প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ বাড়ি ঝড়ে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সাড়ে ১৬ লক্ষের বেশি ঘরবাড়ি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ন’লক্ষ আশ্রয়।

১৪ ১৭
উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব আরও বেশি প্রকট করেছিল বিপদের ভয়াবহতাকে। সে সময় ওড়িশায় মাত্র ২১টি ত্রাণশিবির ছিল, যেখানে আশ্রয় নিতে পেরেছিলেন মাত্র দু’হাজার মানুষ।

উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব আরও বেশি প্রকট করেছিল বিপদের ভয়াবহতাকে। সে সময় ওড়িশায় মাত্র ২১টি ত্রাণশিবির ছিল, যেখানে আশ্রয় নিতে পেরেছিলেন মাত্র দু’হাজার মানুষ।

১৫ ১৭
এই বিপর্যয়ের ফলে টানা দু’দিন দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল ওড়িশা। ভেঙে পড়েছিল সব যোগাযোগ ব্যবস্থা।

এই বিপর্যয়ের ফলে টানা দু’দিন দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল ওড়িশা। ভেঙে পড়েছিল সব যোগাযোগ ব্যবস্থা।

১৬ ১৭
কার্যত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় চোখে আঙুল দিয়ে শিক্ষা দিয়ে যায় উপকূলবর্তী এই রাজ্যকে। পরবর্তী কালে সাইক্লোন শেল্টার গড়ে তোলার উপরে জোর দেয় ওড়িশা। ২০১৯-এ ঘূর্ণিঝড় ফণী আসার আগে সেখানে ত্রাণ শিবিরের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০০।

কার্যত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় চোখে আঙুল দিয়ে শিক্ষা দিয়ে যায় উপকূলবর্তী এই রাজ্যকে। পরবর্তী কালে সাইক্লোন শেল্টার গড়ে তোলার উপরে জোর দেয় ওড়িশা। ২০১৯-এ ঘূর্ণিঝড় ফণী আসার আগে সেখানে ত্রাণ শিবিরের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০০।

১৭ ১৭
পাশাপাশি ওড়িশা-ই দেশের প্রথম রাজ্য যেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি করা হয়। তার পর ওড়িশার দৃষ্টান্ত সামনে রেখে এই পথে পা রেখে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও তৈরি হয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি।
(তথ্যসূত্র: ওড়িশা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি)

পাশাপাশি ওড়িশা-ই দেশের প্রথম রাজ্য যেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি করা হয়। তার পর ওড়িশার দৃষ্টান্ত সামনে রেখে এই পথে পা রেখে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও তৈরি হয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি। (তথ্যসূত্র: ওড়িশা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy