প্রতীকী ছবি।
লোকায়ুক্ত আইন সংশোধন ঘিরে সিপিএম ও সিপিআইয়ের মতান্তরের বল এ বার গড়াতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোর্টে। অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) এনে রাজ্যে লোকায়ুক্তের এক্তিয়ার সংক্কান্ত বিধি সংশোধন করছে কেরলের বাম সরকার। শাসক ফ্রন্ট এলডিএফ এবং সরকারের শরিক সিপিআই ওই পদক্ষেপের ঘোরতর বিরোধিতা করছে। রাজ্য স্তরে দু’দলের নেতৃত্বের আলোচনায় সমাধান সূত্র এখনও অধরা। পিনারাই বিজয়নেরা পিছু হঠতে চাইছেন না দেখে কেরলের সিপিআই নেতৃত্ব বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। তাঁরা চাইছেন, সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করে দেশের একমাত্র বাম সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখুন।
দুর্নীতি বা বেনিয়ম সংক্রান্ত মামলায় লোকায়ুক্তের রায় বিরুদ্ধে যাওয়ায় মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, এমন নজির আছে কেরলে। কিন্তু নতুন অধ্যাদেশ এনে বিজয়নের সরকার চালু আইনের একটি ধারা বাদ দিয়েছে। যার ফলে লোকায়ুক্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে এর পর থেকে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা যাবে। ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ’ অর্থাৎ সরকার তিন মাসের মধ্যে সেই আবেদনের শুনানি না করলে লোকায়ুক্তের রায় মেনে নেওয়া হয়েছে বলে ধরতে হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, এমন সংশোধনী এনে লোকায়ুক্তের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের মতে, লোকায়ুক্তের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার সংস্থান রাখলে অন্য কথা ছিল। কিন্তু লোকায়ুক্তের রায় আবার সরকার কেন বিবেচনার ক্ষমতা পাবে? এমন সংশোধনী এনে দক্ষিণী এই রাজ্যের সরকার বামেদের দুর্নীতি-বিরোধী ভাবমূর্তির সঙ্গে আপস করছে, এই অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন শরিক সিপিআইয়ের নেতারা।
শোরগোল শুরু হওয়ার পরে সিপিএম এবং সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব অধ্যাদেশ-প্রশ্নে আলোচনায় বসেছিলেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন সেখানে যুক্তি দিয়েছেন, সংবিধান অনুসারে রাজ্যপাল নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদেরও মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশে রাজ্যপালই নিয়োগ করেন। লোকায়ুক্তের নির্দেশে সরাসরি যদি মন্ত্রী বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কারও পদ চলে যায়, তা হলে সংবিধান স্বীকৃত কাঠামোর সঙ্গে সমান্তরাল একটা ব্যবস্থাকে মেনে নেওয়া হয়। কেরল হাই কোর্টের সাম্প্রতিক একটি রায়ে এই বিষয়টি নজরে আসে এবং তার পরেই লোকায়ুক্ত আইন সংশোধনে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। অন্য দিকে, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক কানম রাজেন্দ্রনের পাল্টা বক্তব্য, নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে ই কে নায়নার মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে এই সব বিষয়ে আলোচনা করেই লোকায়ুক্তকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই এক্তিয়ার খর্ব করলে ভুল বার্তা যাবে।
প্রথমে কিছু দিন আটকে রাখলেও রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান শেষ পর্যন্ত অধ্যাদেশে সই করে দিয়েছেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ সিপিআই। কেরল সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রকাশ বাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘রাজ্যপালের অবস্থানের কোনও ঠিক নেই! অধ্যাদেশ জারি হলেও বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে ওই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত না করার সুযোগ আছে। আমরা চাই, দুই বামপন্থী দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আলোচনা করে কেরল সরকারের ভুল পদক্ষেপ সংশোধন করে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’
সিপিএমের এক পলিটবুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘অধ্যাদেশ নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের কাছে গোটা বিষয়টা আগে আমাদের বুঝতে হবে। তার পরে সিপিআই চাইলে কথা বলা যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy